আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
231 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
জনাব প্রায় ৩ মাস আগে, আমি নেশায় ঘোরে ছিলাম , তখন আমার স্ত্রী আমার কাছে এসে আমাকে বলে এই সব না করলে হয় না , আমি বলেছি ঠিক আছে আর করবো না, তখন আমার স্ত্রী বলে, না তুমি করতে থাকো আমাকে তালাক দিয়ে দেও, তখন আমি বলছি , আমি তালাক দিবো না , তুমি দিয়ে দেও আমায় তখন সে বলে না তুমি দেও, তখন আমি বলছি আমি দিলে তুমি খুশি। সে বলে হে আমি খুশি যাও তালাক দিলাম , তখন আমাকে বলে এভাবে না বল এক তালাক আমি বলছি হে বললাম এক তালাক, বল দুই তালাক আমি বলছি দুই তালাক, বল তিন তালাক তখন  আমি তিন তালাক বলছি, বেস একটুই। তারপর থেকে আমরা স্বাভাবিকভাবেই সংসার চালিয়ে যাই। এখন প্রায় ৩ মাস হয়ে গিয়েছে, আমাদের তালাক  হয়েছে।  কিন্তু বাচ্চা পেটে আসার পর আমরা এই মাসয়ালা সম্পর্কে  বুঝতে পারি আমাদের তালাক হয়েছে । এখন বাচ্চা ২ মাসের গর্ভে।

১.এই অবস্থায় আমাদের করণীয় কি? আমার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীকে আমি আবার ফেরত আনতে চাচ্ছি।

২.এই বাচ্চাটা কি ইসলামিক শরিয়তে বৈধ ?

নাকি অবৈধ বাচ্চা হিসাবে  গণ্য করা হবে?

আর যদি অবৈধ হয় তখন কি করা উচিত ?

আমি এই বিষয়ে অনুতপ্ত। আল্লাহর কাছে এই মুসিবত থেকে পানাহ চাই। ইন শা আল্লাহ আমি আমার পরবর্তী জীবন ইসলাম পালন করে চলব ইন শা আল্লাহ।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তিন তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।
এখন উক্ত মহিলা আর স্ত্রী নয়।
তার সাথে ঘর সংসার যেনা হবে।
তাকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে নিতে চাইলে শরয়ী হালালাহ করে নিতে হবে।

শরয়ী হালালাহ হলো,আপনার এই স্ত্রীর ইদ্দতকাল অতিবাহিত  হওয়ার পর তাকে অন্যত্র বিবাহ হতে হবে।

তারপর সেই ২য় স্বামীর সাথে স্বাভাবিক ঘর সংসার করতে হবে। এমন কি শারিরীক সম্পর্ক হতে হবে। 
,
তারপর উক্ত স্বামী যদি আপনার সাবেক স্ত্রীকে তালাক দেয়, তারপর ইদ্দত শেষ হয়, তাহলেই কেবল আপনি আবার উক্ত মহিলাকে বিবাহ করতে পারবেন। এবং আবার ঘর সংসার করতে পারবেন।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ [٢:٢٣٠] 

তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে,তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমা;যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়। [সূরা বাকারা-২৩০]

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَجُلاً طَلَّقَ امْرَأَتَه“ ثَلاَثًا فَتَزَوَّجَتْ فَطَلَّقَ فَسُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَتَحِلُّ لِلأَوَّلِ قَالَ لاَ حَتّٰى يَذُوقَ عُسَيْلَتَهَا كَمَا ذَاقَ الأَوَّلُ.

আম্মাজান আয়েশা রা. থেকে বরণিত, রাফায়ার স্ত্রী বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার স্বামী রাফায়া আমাকে এক সাথে তিন তালাক দিয়েছে? এরপর আমি আব্দুর রাহমানের সাথে বিবাহ করেছি। এখন রাফায়ার কাছে যেতে পারবো কিনা? নবীজী বললেন, আবদুর রহমান তোমার সাথে সহবাস করলে এরপর রাফায়ার নিকট যেতে পারবে। (সহীহ বুখারী ৫২৬১)

وقال الليث عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك

হযরত নাফে রহ. বলেন,যখন হযরত ইবনে উমর রাঃ এর কাছে ‘এক সাথে তিন তালাক দিলে তিন তালাক পতিত হওয়া না হওয়া’ (রুজু‘করা যাবে কিনা) বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন তিনি বলেন-“যদি তুমি এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকো তাহলে ‘রুজু’ [তথা স্ত্রীকে বিবাহ করা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা] করতে পার। কারণ,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরকম অবস্থায় ‘রুজু’ করার আদেশ দিয়েছিলেন। যদি তিন তালাক দিয়ে দাও তাহলে স্ত্রী হারাম হয়ে যাবে, সে তোমাকে ছাড়া অন্য স্বামী গ্রহণ করা পর্যন্ত। {সহীহ বুখারী-২/৭৯২, ২/৮০৩}

আরো জানুনঃ- 

(০২)
বাচ্চাটি শরীয়াহ মোতাবেক যেনার সন্তান বলে গন্য হবে।
এটি অবৈধ সন্তান।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...