بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://www.ifatwa.info/398নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছিলাম যে,
ব্যাংকের
চাকুরি হারাম হওয়ার মূল কারণ দু’টি।যথা-
১-হারাম
কাজে সহায়তা করা।
২-হারাম
মাল থেকে বেতন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকা।
হারাম কাজের
সহায়তার বিভিন্ন স্তর আছে। শরীয়তে সব প্রকার সহায়তা হারাম নয়।বরং সে সব সহায়তাই হারাম
যা সরাসরি হারাম কাজের সহিত জড়িত থাকে। যেমন, সুদী লেনদেন
করা। সুদী লেনদেন লিখে রাখা। সুদী টাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ থেকে উসুল করা,
ইত্যাদি ইত্যাদি।
হযরত আব্দুল্লাহ
বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-
“যে সুদ
খায়, যে সুদ খাওয়ায়,যে তার
সাক্ষী হয়, এবং যে দলিল লিখে রাখে, তাদের
সকলের উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন।(মুসনাদে আহমাদ, হাদিস
নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
তবে যদি
ব্যাংকের এমন কোনো সেক্টরের কাজ হয়,যাতে সুদী কাজে জড়িত হতে হয় না।যেমনঃ ড্রাইভার,
ঝাড়ুদার, দারোয়ান, জায়েজ
কারবারে বিনিয়োগ ইত্যাদি সেক্টর হয়,তাহলে যেহেতু এসবে সরাসরি
সুদের সহায়তা নেই তাই এমন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট
করুন- https://www.ifatwa.info/398
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
ছেলে-মেয়ে
যদি সৎ, দ্বীনদার হয়; তবে বিয়ে-শাদি করা যাবে। পাপাচার বা হারাম
কাজে জড়িত ব্যক্তির ছেলে কিংবা মেয়ের সঙ্গে বিয়ে-শাদির সম্পর্ক স্থাপনে কোনো বাধা নেই।
বরং তা জায়েজ এবং বৈধ। কেননা বাবা-মার অন্যায় কাজের জন্য ছেলে কিংবা মেয়ে দায়ী নয়।
বরং বিয়ের ক্ষেত্রে চারটি জিনিস লক্ষণীয় মর্মে হাদিসে প্রমাণিত। তাহলো- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নারীর চারটি
দিক দেখে বিয়ে করা হয়। তাহলো-
- বংশ মর্যাদা।
- সৌন্দর্য।
- অর্থ-সম্পদ এবং
- দ্বীনদারি।
অতএব তুমি
দ্বীনদারি নারীকে বিয়ে করে সফল হয়ে যাও।’ (বুখারি ও মুসলিম)
উল্লেখিত
হাদিসে এমন কোনো কারণ বর্ণিত হয়নি যে, বাবা-মা হারাম কাজ বা অন্যায় করলে বিয়ে
করা যাবে না। বরং হারাম বা অন্যায় করলে কে দায়ী?
এসব ক্ষেত্রে
ইসলামের নির্দেশনা হলো- অন্যায় বা হারাম কাজ করা পিতা বা ব্যক্তির পাপাচার, হারাম উপার্জন ও অন্যায় কাজের জন্য ছেলে
কিংবা মেয়ে দায়ী নয়। এ অপরাধ সম্পর্কে কোরআন সুন্নাহর সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন-
- وَلَا تَزِرُ
وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ
‘কেউ অপরের বোঝা বহন করবে
না।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ১৫)
- كُلُّ نَفْسٍ
بِمَا كَسَبَتْ رَهِينَةٌ
‘প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের
জন্য দায়ী।’ (সুরা মুদ্দাসসির : আয়াত ৩৮)
বিদায় হজের
ঐতিহাসিক ভাষণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ঘোষণা
দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জেনে রাখ! যে অপরাধ করবে, তাকে তার দায় বহন করতে হবে। পিতার অপরাধের
জন্য পুত্রকে এবং পুত্রের অপরাধের জন্য পিতাকে দায়ী করা যাবে না।’ (ইবনে মাজাহ)
সুতরাং
বিদায় হজে ঘোষিত এ হাদিসের আলোকে বিষয়টি সুস্পষ্ট যে, কোনো মা-বাবা যদি নামাজ-রোজা না করে, সুদ-ঘুষের সঙ্গে জড়িত থাকে; এ জাতীয় অন্যায়-অপরাধ তথা হারাম কাজের
সঙ্গে জড়িত থাকে; আর সন্তান
যদি সৎ ও দ্বীনদার হয়, পাপাচারে
জড়িত না থাকে, তবে এ কারণে
সন্তান ছেলে কিংবা মেয়ে হোক তাদের সঙ্গে বিয়ে-শাদির সম্পর্ক স্থাপন করা অবৈধ নয়, বরং তা জায়েজ এবং বৈধ।
উল্লেখ্য, বিয়েতে মেয়ের বাবার থেকে যৌতুক নেয়া যাবে
না। বিয়ের পর অন্যায়-অপরাধের সঙ্গে জড়িত শ্বশুর-শাশুড়ি দেয়া উপঢৌকন নেয়া থেকে যথাসাধ্য
বিরত থাকা জরুরি। বিশেষ করে বিয়ের পর শ্বশুর-শাশুড়িকে অন্যায় তথা হারাম কাজ থেকে বিরত
রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা। সৎপথে ফিরে আসার নসিহত অব্যাহত রাখা জরুরি।