ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
জন্মদিন পালনের কোনো সুযোগ ইসলামে নাই। বরং এটা অমুসলিম তথা খৃষ্টানদের অনুসরণ বৈ কিছু নে অনেক ভাবে বিজাতীয় সংস্কৃতিকে অনুসরণ করা হয়ে থাকে। যেমন , বিশেষ ধরণের পোষাক পরিধান করে মোমবাতি প্রজ্বলন করে কেক কাটা।তাছাড়া এতে মিউজিক ও ফ্রিমিক্সিং থাকে। এবং নির্দিষ্ট কিছু শব্দ ও বাক্যকে আওড়ানো হয়ে থাকে।অতঃপর ফটো তুলা হয়ে থাকে। মোটকথা, এতে অনেক প্রকার শরীয়ত গর্হিত কাজ থাকে। এটা কখনো অনুমোদন যোগ্য হতে পারে না।
তাছাড়া কোনো প্রকার দিবস পালন শরীয়তে গ্রহণযোগ্য নয়।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/166
হ্যা, যদি উপরোক্ত শরীয়ত গর্হিত কোনো কাজ না থাকে, এবং কাফিরদের সাদৃশ্য গ্রহণ উদ্দেশ্য না হয়, বরং কেউ যদি এই দিনকে এভাবে স্বরণ রাখে যে, আল্লাহ তা'আলা অশেষ কৃতজ্ঞতা যে, তিনি ঈমান ইয়াকিন এবং সুস্থতার সাথে একটি বৎসর অতিবাহিত করেছেন। এবং রবের শুকরিয়া স্বরূপ নিজ ঘরে কোনো আয়োজন করে নেয়, অথবা বাচ্চাদেরকে খুশী করার নিমিত্তে বাহির থেকে কোনো খাবার নিয়ে আসে, তাহলে সেটা হারামের আওতাধীন হবে না। সর্বোপরি সকল প্রকার আয়োজনকে পরিহার করাই সতর্কতামূলক ও কল্যাণকর পদক্ষেপ।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ
যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত। (সূরা আলে ইমরান-৮৫)
مأخَذُ الفَتوی
وفي شرح صحيح البخارى لابن بطال :
قَالَ النَّبِىّ (صلى الله عليه وسلم) : (لا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَأْخُذَ أُمَّتِى بِأَخْذِ الْقُرُونِ قَبْلَهَا، شِبْرًا بِشِبْرٍ، وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ، فَقِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَفَارِسَ وَالرُّومِ، فَقَالَ: وَمَنِ النَّاسُ إِلا أُولَئِكَ)
وفيه: أَبُو سَعِيد، قَالَ النَّبِىّ (صلى الله عليه وسلم) : (لَتَتْبَعُنَّ سَنَنَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، شِبْرًا شِبْرًا، وَذِرَاعًا بِذِرَاعٍ، حَتَّى لَوْ دَخَلُوا جُحْرَ ضَبٍّ تَبِعْتُمُوهُمْ، قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، الْيَهُودُ وَالنَّصَارَى، قَالَ: فَمَنْ؟) .
قال المهلب: قوله: (لتتبعن سنن من كان قبلكم) . بفتح السين هو أولى من ضمها؛ لأنه لا يستعمل الشبر والذراع إلا فى السنن وهو الطريق فأخبر (صلى الله عليه وسلم) أن أمته قبل قيام الساعة يتبعون المحدثات من الأمور، والبدع والأهواء المضلة كما اتبعتها الأمم من فارس والروم حتى يتغير الدين عند كثير من الناس، وقد أنذر (صلى الله عليه وسلم) فى كثير من حديثه أن الآخر شر، وأن الساعة لا تقوم إلا على شرار الخلق، وأن الدين إنما يبقى قائمًا عند خاصة من المسلمين لا يخافون العداوات، ويحتسبون أنفسهم على الله فى القول بالحق، والقيام بالمنهج القويم فى دين الله وفى رواية الأصيلى: (بما أخذ القرون) . وللنسفى وابن السكن: (بأخذ القرون) . وقال ثعلب: أخَذَ أَخْذ الجهة: إذا قصد نحوها.
(باب قَوْلِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم لَتَتْبَعُنَّ سَنَنَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ،ج:10،ص:366،ط:مکتبة الرشید،ریاض)
وفي مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح:
قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: " «من تشبه بقوم فهو منهم» " رواه أحمد، وأبو داود.
(من تشبه بقوم) : أي من شبه نفسه بالكفار مثلا في اللباس وغيره، أو بالفساق أو الفجار أو بأهل التصوف والصلحاء الأبرار. (فهو منهم) : أي في الإثم والخير. قال الطيبي: هذا عام في الخلق والخلق والشعار، ولما كان الشعار أظهر في التشبه ذكر في هذا الباب.(کتاب اللباس،الفصل الثانی،ج:8،ص:222،ط:مکتبہ حنیفیہ)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি কারো জন্মদিন উপলক্ষ্যে কিছু করতেই হয়, তাহলে সে যেন প্রতি সাপ্তাহের ঐ দিনে রোযা রাখে। কেননা হাদীস শরীফে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাঃ সোমবারে উনার জন্ম হিসেবে এবং সর্বপ্রথম কুরআন নাযিল হয় হিসেবে এবং এ দিন আল্লাহর সামনে বান্দাদের আ'মলসমূহ পেশ হয় হিসেবে এবং এই দিনে নবুওত প্রাপ্ত হয়েছেন হিসেবে রোযা রাখতেন।শুধু এদিন নয় বরং আ'মল পেশ হয় হিসেবে বৃহস্পতিবারেও রোযা রাখতেন।
তবে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সোমবারে রোযা রাখাকে কেন্দ্র করে জন্মদিন পালনের কোনো সুযোগ নেই। কেননা শুধু জন্ম হয়েছেন হিসেবে সেদিন রাসূলুল্লাহ সাঃ রোযা রাখেননি। বরং অনেকগুলো কারণে সেদিন রোযা রেখেছিলেন।
বিজাতীয় সংস্কৃতি হিসেবে জন্মদিন পালনের কোনো সুযোগ নেই।এবং এ হিসেবে কোনো অনুষ্টান মাহফিলেরও কোনো সুযোগ নেই। এবং এরকম অনুষ্টানে শরীক হওয়াও জায়েয হবে না। তবে দিন তারিখ ঠিক না করে ঈসালে সওয়াব হিসেবে কারো জন্য কেউ কোনো দু'আর আয়োজন করলে সেটা মন্দ হবে না।এক মুসলমানের জন্য অন্য মুসলমানের অবশ্যই দু'আ করা উচিৎ এবং এটাই কাম্য।