বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
আল্লাহ তায়ালা
বলেন-
لَا یُکَلِّفُ اللّٰهُ نَفۡسًا اِلَّا
وُسۡعَهَا ؕ لَهَا مَا کَسَبَتۡ وَ عَلَیۡهَا مَا اکۡتَسَبَتۡ ؕ ﴿۲۸۶﴾
আল্লাহ কোন
ব্যক্তিকে তার সামর্থ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না। সে যা অর্জন করে তা তার জন্যই এবং
সে যা কামাই করে তা তার উপরই বর্তাবে। সূরা বাকারা, আয়াত নং-২৮৬
রোজা থাকা
অবস্থায় দুপুরে ঘুমানো নিষেধ নয়। এমনকি ঘুমের ভেতরে স্বপ্নদোষ হলে স্বপ্নদোষের
কারণেও রোজা ভাঙে না। তবে স্বপ্নদোষের কারণে গোসল ফরজ হয়।
হাদিস শরীফে
এসেছে-
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثٌ لاَ يُفْطِرْنَ الصَّائِمَ
الْحِجَامَةُ وَالْقَىْءُ وَالاِحْتِلاَمُ " .
৭১৭. মুহাম্মাদ
ইবনু উবায়দ মুহারিবী (রহঃ) .... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ করেনঃ তিনটি বিষয় সায়িমের সাওম ভঙ্গ হয় না। (১) সিঙ্গা লাগান (২) বমি এবং
(৩) স্বপ্নদোষ। তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৭১৯ [আল মাদানী প্রকাশনী]
রোজা পবিত্র রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। তাই রোজা
রাখার পর সতর্ক থাকতে হয় যেন এমন কিছু না হয়, যেটার কারণে রোজা ভেঙে যায়। প্রথমত ও সাধারণত তিনটি কারণে
রোজা ভেঙে যায়। সেগুলো হলো- খাওয়া, পান করা ও স্ত্রী-সম্পর্ক।
তবে এগুলো ছাড়াও কিছু কারণে রোজা ভেঙে যায়। যেগুলো জেনে
রাখা প্রত্যেক রোজাদারের জন্য জরুরি। সংক্ষেপে সেসব কারণ হলো—
১. ভুলে খাওয়া বা পান করার পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে আবার
ইচ্ছাকৃতভাবে খাওয়া বা পান করা। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩,
পৃষ্ঠা : ৩৭৫)
২. বিড়ি-সিগারেট বা হুঁকা সেবন করা। (জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা :
৩৭৮)
৩. কাঁচা চাল, আটার খামির বা একত্রে অনেক লবণ খাওয়া। (ফাতওয়া
আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১,
পৃষ্ঠা : ১৯৯)
৪. এমন কোনো বস্তু খাওয়া, যা সাধরণত খাওয়া হয়
না। যেমন- কাঠ, লোহা,
কাগজ,
পাথর,
মাটি,
কয়লা ইত্যাদি। (ফাতওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা :
২০২; জাওয়াহিরুল ফিকাহ, খণ্ড : ০১,
পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
৫. পাথর,
কাদামাটি,
কঙ্কর,
তুলা-সুতা,
তৃণলতা,
খড়কুটো ও কাগজ গিলে ফেলা। (ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১, পৃষ্ঠা :
২০৩)
৬. নিজের থুতু হাতে নিয়ে গিলে ফেললে। (ফাতাওয়া
আল-হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১,
পৃষ্ঠা : ২০২)
৭. ভুলে স্ত্রী সম্ভোগের পর রোজা ভেঙে গেছে মনে করে— আবার
স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস সম্পর্ক করা। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা :
৩৭৫)
৮. নাকের ছিদ্র দিয়ে তরল ওষুধ দেওয়া। (ইমদাদুল
ফাতাওয়া, খণ্ড : ০২,
পৃষ্ঠা : ১২৭)
৯. দাঁত দিয়ে রক্ত বের হলে যদি তা থুতুর চেয়ে পরিমাণে বেশি
হয় এবং কণ্ঠনালিতে চলে যায়। (ফাতাওয়া শামি, খণ্ড : ০৩,
পৃষ্ঠা : ৩৬৭)
১০. মুখে পান দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং এ অবস্থায় সুবহে সাদিক
করা। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০২,
পৃষ্ঠা : ১৭২)
১১. হস্তমৈথুন করা। (ফাতাওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ, খণ্ড : ০৬, পৃষ্ঠা :
৪১৭)
১২. রোজা স্মরণ থাকা অবস্থায় কুলি কিংবা নাকে পানি দেওয়ার
সময় কণ্ঠনালিতে পানি চলে যাওয়া। (আহসানুল ফাতাওয়া, খণ্ড : ০৪, পৃষ্ঠা :
৪২৯)
১৩. কাউকে জোর-জবদস্তি করে পানাহার করানো। (ফাতাওয়া
হিন্দিয়্যা, খণ্ড : ০১,
পৃষ্ঠা : ২০২)
১৪. রাত মনে করে সুবহে সাদিকের পর সাহরি খাওয়া। (জাওয়াহিরুল
ফিকাহ, খণ্ড : ০১,
পৃষ্ঠা : ৩৭৮)
১৫. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করা বা বমি আসার পর তা গিলে ফেলা।
(ফাতহুল কাদির, খণ্ড : ০২,
পৃষ্ঠা : ৩৩৭)
১৬. সূর্যাস্ত হয়ে গেছে মনে করে ভুলে দিনে ইফতার করা।
(বুখারি, হাদিস : ১৯৫৯)
১৭. যদি কেউ রাত ধারণা করে স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়ে যায়, অতঃপর সুবহে
সাদিকের কথা জানতে পেরে তৎক্ষণাৎ সহবাস থেকে বিরত হয়ে যায়। (ফাতওয়া শামি, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা :
৩৭৪)
১৮. বৃষ্টি বা বরফের টুকরো খাদ্যানালির ভেতরে চলে গেলে রোজা
ভেঙে যায়। (ফাতাওয়া হিন্দিয়্যা,
খণ্ড : ০১,
পৃষ্ঠা : ২০৩)
(আংশিক কপি করা হয়েছে)
গীবত করা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/1715
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.
না,
রোজা রাখা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙ্গে যায় না।
২.
না,
রোজা রাখা অবস্থায় গীবত করলে বা অনিচ্ছায় শুনলে
রোজা ভেঙ্গে যায় না। তবে গীবত
করলে রোজা রাখার যে সওয়াব তা নষ্ট করে
দেয়।