বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
□ সফর অবস্থায় সবার
জন্যই রোজা ভঙ্গ করা জায়েজ।
আল্লাহ তায়ালা
বলেন,
فَمَن كَانَ مِنكُم مَّرِيضًا أَوْ
عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ
অতঃপর তোমাদের
মধ্যে যে ব্যক্তি অসুস্থ অথবা সফরে থাকবে সে অন্য সময় পূরণ করে নিবে।” (সূরা
বাকারা: ১৮৪)
হাদীস শরীফে এসেছে-
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ أَنْ تُؤْتَى
رُخَصُهُ كَمَا يُحِبُّ أَنْ تُؤْتَى مَعْصِيَتُهُ
আল্লাহ্ তাআলা
তাঁর অবকাশ দেয়া কাজগুলো কার্যকরী হওয়া পছন্দ করেন। যেমন তিনি তাঁর অবাধ্যতাকে
অপছন্দ করেন।” [মুসনাদে আহমদ হা/৫৮৬৬]
□ সফর অবস্থায় রোজা
রাখতে কষ্ট না হলে রোজা রাখাই উত্তম।
হাদীস শরীফে
এসেছে-
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ
جَابِرٍ أَنَّ إِسْمَاعِيلَ بْنَ عُبَيْدِ اللهِ حَدَّثَهُ عَنْ أُمِّ
الدَّرْدَاءِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ فِي بَعْضِ
أَسْفَارِهِ فِي يَوْمٍ حَارٍّ حَتَّى يَضَعَ الرَّجُلُ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ
مِنْ شِدَّةِ الْحَرِّ وَمَا فِينَا صَائِمٌ إِلاَّ مَا كَانَ مِنْ النَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم وَابْنِ رَوَاحَةَ
আবুদ দারদা (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, কোন এক সফরে
প্রচণ্ড গরমের দিনে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে যাত্রা
করলাম। গরম এত প্রচণ্ড ছিল যে, প্রত্যেকেই আপন
আপন হাত মাথার উপর তুলে ধরেছিলেন। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এবং ইবনে রাওয়াহা (রাঃ) ব্যতীত আমাদের কেউই সিয়ামরত ছিলেন না। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৯৪৫) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
(উক্ত হাদীস দ্বারা বুঝে আসে যে, রাসূল সা. সফর অবস্থায়
রোজাদার ছিলেন।)
□
মুহাররম
মাসের ফযিলত সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে-
وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله
عنه، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم:
«أَفْضَلُ الصِّيَامِ بَعْدَ رَمَضَانَ: شَهْرُ اللهِ المُحَرَّمُ، وَأَفْضَلُ
الصَّلاَةِ بَعْدَ الفَرِيضَةِ: صَلاَةُ اللَّيْلِ». رواه مسلم
আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “রমযান মাসের রোযার পর সর্বোত্তম রোযা হচ্ছে
আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সর্বোত্তম নামায হচ্ছে রাতের (তাহাজ্জুদের)
নামায।”
মুসলিম ১১৬৩, তিরমিযী ৪৩৮, ৭৪০, আবূ দাউদ ২৪২৯, ইবনু মাজাহ ১৭৪২, আহমাদ ৭৯৬৬, ৮১৮৫, ৮৩০২, ৮৩২৯, ১০৫৩২, দারেমী ১৭৫৭, ১৭৫৮
হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি আশাবাদী
যে, আশুরার রোযার কারণে আল্লাহ তাআলা অতীতের এক বছরের (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে
দিবেন।’
صيام يوم
عاشوراء أحتسب على الله أن يكفر السنة التي قبله
-সহীহ মুসলিম ১/৩৬৭; জামে
তিরমিযী ১/১৫৮
আশুরার রোযা সম্পর্কে এক হাদীসে আছে যে, ‘তোমরা আশুরার রোযা রাখ এবং ইহুদীদের সাদৃশ্য
পরিত্যাগ করে; আশুরার আগে বা পরে আরো একদিন রোযা রাখ।’
صوموا عاشوراء
وخالفوا فيه اليهود، صوموا قبله يوما أو بعده يوما
-মুসনাদে আহমদ ১/২৪১
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি তাহলে ৯ তারিখেও
অবশ্যই রোযা রাখব।’-সহীহ মুসলিম ১/৩৫৯
আরো জানুন- https://ifatwa.info/25346/?show=25346#q25346
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.
হ্যাঁ, সফর অবস্থায় রোজা রাখতে কষ্ট না হলে আশুরার
রোজা রাখা যাবে, বরং উত্তম।
২. হ্যাঁ, সফর অবস্থায়ও নফল রোজা রাখলে
উক্ত নফল রোজার ফজিলত পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।
৩. না, এভাবে বলা ঠিক নয়। কারণ, কেউ যদি সফর অবস্থায়ও রোজা রাখতে সক্ষম হয় তাহলে সে রাখতে পারে।