আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
131 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (50 points)
আসসালামু আলাইকুম

(১)১০০০ জন মানুষের মধ্যে ৯৯৯ জন মানুষ জাহান্নামী হবে এ কথা কী সঠিক? কুরআন-হাদিসে কি এ ধরনের কোনো কথার উল্লেখ আছে? যদি কুরআন হাদীসে এ ধরনের কোনো কথা না থাকে, তাহলে ইসলামের কোথাও কি এ ধরনের কোন কথার উল্লেখ আছে?

(২) আমি জানি যারা সামর্থ্যবান নয় তারা কসমের কাফফারা হিসাবে টানা তিনটি রোযা রাখবে। এখন কতটুকু সামর্থ্য থাকলে আমি বুঝবো আমি সামর্থ্যবান নয় এবং তখন আমি টানা তিনটি রোযা রাখলে আমার কসমের কাফফারা আদায় হয়ে যাবে। বিঃদ্রঃ আমার বর্তমানে কোনো আায় নেই।  শুধু কিছু জমানো টাকা আছে।

(৩) কোন ব্যক্তি যদি তার নাভির নিচের লোম গুলো ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও যদি না কাটে এবং নামাজ আদায় করতে থাকে তাহলে কি তার নামায গুলো কী কবুল হবে?

(৪) কোন ব্যক্তি যদি তার নাভির নিচের লোম গুলো ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও যদি না কাটে এবং অন্যান্য ইবাদত করতে থাকে তাহলে কি তার অন্যান্য ইবাদত গুলো কী কবুল হবে?

(৫) কোন ব্যক্তি যদি তার বগলের লোম গুলো ৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও যদি না কাটে এবং নামাজ আদায় করতে থাকে তাহলে কি তার নামায গুলো কী কবুল হবে?

জাযাকাল্লাহু খায়রান

1 Answer

+1 vote
by (589,230 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, নবী করীম(সা.) বলেছেন,
عَنْ أَبِى سَعِيدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَا آدَمُ. يَقُولُ لَبَّيْكَ رَبَّنَا وَسَعْدَيْكَ، فَيُنَادِى بِصَوْتٍ إِنَّ اللهَ يَأْمُرُكَ أَنْ تَخْرُجَ مِنْ ذُرِّيَّتِكَ بَعْثًا إِلَى النَّارِ. قَالَ يَا رَبِّ وَمَا بَعْثُ النَّارِ قَالَ مِنْ كُلِّ أَلْفٍ- أُرَاهُ قَالَ- تِسْعَمِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ فَحِينَئِذٍ تَضَعُ الْحَامِلُ حَمْلَهَا وَيَشِيبُ الْوَلِيدُ (وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُمْ بِسُكَارَى وَلَكِنَّ عَذَابَ اللهِ شَدِيدٌ). فَشَقَّ ذَلِكَ عَلَى النَّاسِ حَتَّى تَغَيَّرَتْ وُجُوهُهُمْ ، فَقَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ تِسْعَمِائَةٍ وَتِسْعَةً وَتِسْعِينَ، وَمِنْكُمْ وَاحِدٌ، ثُمَّ أَنْتُمْ فِى النَّاسِ كَالشَّعْرَةِ السَّوْدَاءِ فِى جَنْبِ الثَّوْرِ الأَبْيَضِ، أَوْ كَالشَّعْرَةِ الْبَيْضَاءِ فِى جَنْبِ الثَّوْرِ الأَسْوَدِ، وَإِنِّى لأَرْجُو أَنْ تَكُونُوا رُبُعَ أَهْلِ الْجَنَّةِ. فَكَبَّرْنَا ثُمَّ قَالَ ثُلُثَ أَهْلِ الْجَنَّةِ. فَكَبَّرْنَا ثُمَّ قَالَ : شَطْرَ أَهْلِ الْجَنَّةِ. فَكَبَّرْنَا .
আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামতের দিন ডাক দিয়ে বলবেন, হে আদম! তখন আদম (আঃ) বলবেন, হে আমার প্রতিপালক আমি আপনার দরবারে উপস্থিত হয়েছি। তখন উঁচু কণ্ঠে চিৎকার করে বলা হবে ‘নিশ্চয় আল্লাহ্ আপনাকে আদেশ করেন যে, আপনি আপনার সন্তানদের মধ্য হ’তে জাহান্নামীদের বের করে দিন। আদম (আঃ) বলবেন, হে আমার প্রতিপালক কতজন জাহান্নামী? আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, প্রতি হাজারে ৯৯৯ জন। ঐ সময় গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভ খসে পড়বে, বাচ্চারা বৃদ্ধ হয়ে যাবে এবং আপনি মানুষকে নেশাগ্রস্ত মনে করবেন অথচ তারা নেশাগ্রস্ত হবে না। কিন্তু আল্লাহর ভয়াবহ শাস্তি দেখে এরূপ অবস্থা হবে। এ বক্তব্য মানুষের নিকট খুব কঠিন ও জটিল হল, এমনকি তাদের চেহারা পরিবর্তন হয়ে গেল। তখন নবী করীম(সা.) বললেন, দেখ ইয়াজুজ মাজুজ সম্প্রদায় থেকে হবে জন। আর তোমাদের মধ্য থেকে হবে একজন। তারপর বললেন, তোমরা মানুষের মধ্যে সংখ্যায় এত কম হবে সাদা বলদের গায়ে একটি কাল লোম যেমন, অথবা বলেছেন, কাল বলদের গায়ে একটি সাদা লোম যেমন। আর অবশ্যই আমি আশা রাখি তোমরা জান্নাতীদের চার ভাগের এক ভাগ হবে। তখন আমরা আল্লাহু আকবার বললাম। তিনি আবার বললেন, জান্নাতবাসীদের তিনভাগের এক ভাগ তোমরা, আমরা বললাম, আল্লাহু আকবার। তিনি আবার বললেন, জান্নাতবাসীদের অধিক তোমরাই হবে। তখন আমরা বললাম, আল্লাহু আকবার (বুখারী হা/৪৭৪১)।

(২)
কাফফারা আদায়ের পদ্ধতি সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللّهُ بِاللَّغْوِ فِي أَيْمَانِكُمْ وَلَـكِن يُؤَاخِذُكُم بِمَا عَقَّدتُّمُ الأَيْمَانَ فَكَفَّارَتُهُ إِطْعَامُ عَشَرَةِ مَسَاكِينَ مِنْ أَوْسَطِ مَا تُطْعِمُونَ أَهْلِيكُمْ أَوْ كِسْوَتُهُمْ أَوْ تَحْرِيرُ رَقَبَةٍ فَمَن لَّمْ يَجِدْ فَصِيَامُ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ ذَلِكَ كَفَّارَةُ أَيْمَانِكُمْ إِذَا حَلَفْتُمْ وَاحْفَظُواْ أَيْمَانَكُمْ كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللّهُ لَكُمْ آيَاتِهِ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
আল্লাহ তোমাদেরকে পাকড়াও করেন না তোমাদের অনর্থক শপথের জন্যে; কিন্তু পাকড়াও করেন ঐ শপথের জন্যে যা তোমরা মজবুত করে বাধ। অতএব, এর কাফফরা এই যে,(১) দশজন দরিদ্রকে খাদ্য প্রদান করবে; মধ্যম শ্রেনীর খাদ্য যা তোমরা স্বীয় পরিবারকে দিয়ে থাক।(২)অথবা, তাদেরকে বস্তু প্রদান করবে অথবা, একজন ক্রীতদাস কিংবা দাসী মুক্ত করে দিবে।(৩) যে ব্যক্তি সামর্থ্য রাখে না, সে তিন দিন রোযা রাখবে।.....এটা কাফফরা তোমাদের শপথের, যখন শপথ করবে। তোমরা স্বীয় শপথসমূহ রক্ষা কর এমনিভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বীয় নির্দেশ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর।(সূরা মায়েদা-৮৯)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১০ জন মিসকিনকে দুই বেলা খাইয়ে নিজের সাধারণ  জীবনাতিপাতে কোনো সমস্যা না হলে আপনি সামর্থবান হিসেবে গণ্য করা হবে। আর জীবনাতিপাতে সমস্যা হলে, অথবা এ খাওয়ানোর দরুণ নিজে অভাবে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে, তখন রোযা রাখার অনুমোদন থাকবে।

(৩)
৪০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও নাভীর নীচের লোম কর্তন না করা, মাকরুহে তাহরিমী। নামায মাকরুহ হবে।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/49494

(৪)
সকল প্রকার ইবাদতই মাকরুহ হিসেবে কবুল হবে।

(৫)
বগলের লোমের ক্ষেত্রে এমন বিধান প্রচলিত নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,230 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...