আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
143 views
in সালাত(Prayer) by (14 points)
আসসালামু আলাইকুম আমার ফরজ নামাযের সময় খুবই বাজে কিছু চিন্তা এসে পড়ে যা যৌনতা বিষয়ক তাই আমার কি সেই ফরজ নামায কি পুনরায় আদায় করে দিতে হবে?

আন্তরের কুচিন্তা থেকে বাচার দোয়া কি?
জাযাকাল্লাহ খায়রান

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 
ওয়াসওয়াসা একটি মানষিক রোগ।যা শয়তান কর্তৃক প্রভাব বিস্তার থেকে তৈরী হয়ে থাকে।অথবা নফসের ধোকা থেকে তৈরী হয়।তার চিকিৎসা হল,ঈমানকে মজবুত করা।এবং শয়তানের প্ররোচনা থেকে সতর্ক থাকা।বেশী বেশী নেক কাজ করা।যিকির, তাসবীহ, ইস্তেগফার বেশী বেশী করে করা।আল্লাহর নিকট আহাজারি করে মুনাজাত করা,কান্নাকাটি করা।আল্লাহ তা'আলা কতইনা সুন্দর জবাবদাতা।আল্লাহ বান্দাদের প্রতি সহানুভূতিশীল।

আল্লাহ অতীতে অনেক বান্দাদের দু'আকে কবুল করেছেন।তিঁনি এ সম্পর্কে বলেন,

أَمَّن يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَاء الْأَرْضِ أَإِلَهٌ مَّعَ اللَّهِ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ
বল তো কে নিঃসহায়ের ডাকে সাড়া দেন যখন সে ডাকে এবং কষ্ট দূরীভূত করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে পুর্ববর্তীদের স্থলাভিষিক্ত করেন। সুতরাং আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? তোমরা অতি সামান্যই ধ্যান কর।(সূরা নামল-৬২)

وَأَيُّوبَ إِذْ نَادَى رَبَّهُ أَنِّي مَسَّنِيَ الضُّرُّ وَأَنْتَ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ فَاسْتَجَبْنَا لَهُ فَكَشَفْنَا مَا بِهِ مِنْ ضُرٍّ
এবং স্মরণ করুন আইয়্যুবের কথা, যখন তিনি তাঁর পালনকর্তাকে আহবান করে বলেছিলেনঃ আমি দুঃখকষ্টে পতিত হয়েছি এবং আপনি দয়াবানদের চাইতেও সর্বশ্রেষ্ট দয়াবান।
فَاسْتَجَبْنَا لَهُ فَكَشَفْنَا مَا بِهِ مِن ضُرٍّ وَآتَيْنَاهُ أَهْلَهُ وَمِثْلَهُم مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنْ عِندِنَا وَذِكْرَى لِلْعَابِدِينَ
অতঃপর আমি তাঁর আহবানে সাড়া দিলাম এবং তাঁর দুঃখকষ্ট দূর করে দিলাম এবং তাঁর পরিবরাবর্গ ফিরিয়ে দিলাম, আর তাদের সাথে তাদের সমপরিমাণ আরও দিলাম আমার পক্ষ থেকে কৃপাবশতঃ আর এটা এবাদত কারীদের জন্যে উপদেশ স্বরূপ।(সূরা আম্বিয়া-৮৩-৮৪)

ইবনে হাজার মাক্কী রাহ কে জিজ্ঞাসা করা হল,ওয়াসওয়াসার চিকিৎসা কি হতে পারে।তিনি জবাবে বললেন,
 له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية 
পুরোপুরি সেই চিন্তাকে ছেড়ে দিতে হবে।সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করতে হবে।(আল-ফাতাওয়াল ফেকহিয়্যাতুল কুবরা-১/১৪৯)

ওয়াসওয়াসাতে পতিত ব্যক্তির মাথায় যদি খারাপ চিন্তা ঘোরপ্যাঁচ খায়,চায় নামাজের ভিতরে হোক বা বাহিরে,যদি সে উক্ত ওয়াসওয়াসা বা অযাচিত খারাপ ও গোনাহের চিন্তাকে অপছন্দ করে,তাহলে তার কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।কিন্তু যদি সে 


আবূ হুরাইরাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلُوهُ إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ قَالَ وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ قَالُوا نَعَمْ قَالَ ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ
তিনি বলেন, হুরাইরাহনাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিছু সাহাবা তার সামনে এসে বললেন, আমাদের অন্তরে এমন কিছু খটকার সৃষ্টি হয় যা আমাদের কেউ মুখে উচ্চারণ করতেও মারাত্মক মনে করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সত্যই তোমাদের তা হয়? তারা জবাব দিলেন, জী, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটিই স্পষ্ট ঈমান। (কারণ ঈমান আছে বলেই সে সম্পর্কে ওয়াসওয়াসা ও সংশয়কে মারাত্মক মনে করা হয়)।
(সহীহ মুসলিম-১৩২)

ওয়াসওয়সাকে অপছন্দ করা ও তাকে নফরত করা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে,তার অন্তরে ঈমান রয়েছে।


সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
অন্তরে যাই আসুক না কেন,যতই বারই আসুক না কেন,যদি অন্তর সেই চিন্তাভাবনাকে অপছন্দ করে থাকে,তাহলে কোনা গোনাহ হবে না।এবং নামাযেও কোনো প্রকার সমস্যা হবে না।নামায চালিয়ে যেতে হবে।দোহরানো বা কাযা করার কোনো প্রয়োজন নাই।

তবে যদি কেউ উপভোগ করা শুরু করে,তাহলে তার গোনাহ হবে এবং নামাযকে আবার দোহড়াতে হবে।

কুচিন্তা থেকে বাঁচতে বেশী বেশী করে 'আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম' পড়বেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...