জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
মেয়েদের লম্বা রাখতে হবে,শরয়ী নীতিমালার বাহিরে কেটে ছোট করা যাবেনা।
মেয়েদের জন্য চুল মুণ্ডন করা বা কেটে ছেলেদের মতো করে ফেলা নিষেধ। আবার এতো বড় রাখা উচিত নয় যে, গোছলের সময় পানি পৌঁছানো কষ্টকর হয়। বরং পিঠ বা কোমর পর্যন্ত রাখা ভালো। সেমতে কোমরের নিচের অংশ কেটে ফেলা জায়েয হবে। অবশ্য না কাটলেও কোনো সমস্যা নেই।
মহিলাদের চুলের ক্ষেত্রে শরীয়তের মৌলিক নীতিমালা হল :
১. মহিলারা চুল লম্বা রাখবে। হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যে, উম্মাহাতুল মুমিনীন রাযি. চুল লম্বা রাখতেন।
২. এ পরিমাণ ছোট করবে না যে, পুরুষের চুল (সুন্নতি বাবরি) এর মতো হয়ে যায়। হাদীস শরীফে পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারিনী মহিলার প্রতি অভিসম্পাত করা হয়েছে।
ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,
أَنَّ النَّبِيَّ ﷺ لَعَنَ الْمُخَنَّثِينَ مِنْ الرِّجَالِ، وَالْمُتَرَجِّلَاتِ مِنْ النِّسَاءِ ، وَقَالَ: أَخْرِجُوهُمْ مِنْ بُيُوتِكُمْ
রাসূলুল্লাহ ﷺ ওই পুরুষদের লানত করেছেন, যারা মহিলাদের সাদৃশ্য গ্রহণ করে। এবং ওই মহিলাদের লানত করেছেন, যারা পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে৷ এবং তিনি আরও বলেন, তাদেরকে তোমাদের ঘর থেকে বের করে দাও। (বুখারী ৫৮৮৫)
৩. চুল কাটার ক্ষেত্রে বিজাতীয়দের অনুকরণ করবে না। কারণ হাদীসে বিজাতীয়দের অনুকরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। (আবু দাউদ ৪০৩১)
অপর হাদীসে এসেছে,
لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا، لَا تَشَبَّهُوا بِاليَهُودِ وَلَا بِالنَّصَارَى
যে অন্য সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য বা মিল রেখে চলে, সে আমাদের দলভুক্ত নয়, তোমরা ইয়াহূদী ও নাসারাদের সাথে সাদৃশ্য রেখো না। (তিরমিযী ২৬৯৫)
আর মাথার কিছু অংশের চুল ছোট করা, যেমন সামনের চুল ছোট করা এবং অন্যগুলো রেখে দেওয়া– এটি ‘কুযা’ এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে ইবনে উমর রাযি. থেকে সাব্যস্ত হাদীসে এসেছে যে, তিনি বলেন, نهى رسول الله ﷺ عن القزع রাসূলুল্লাহ্ ﷺ ‘কুযা’ করা থেকে তথা শিশুর মাথার একাংশের চুল কামাই করে অপর অংশের চুল রেখে দিতে নিষেধ করেছেন। (বুখারী ৫৯২১ মুসলিম ২১২০)
অতএব যে মহিলার চুল এত লম্বা যে, কিছু অংশ কাটলে পুরুষের চুলের সাথে সাদৃশ্য হবে না তার জন্য ঐ পরিমাণ কাটা জায়েয হবে। পক্ষান্তরে যার চুল তত লম্বা নয়; বরং অল্প কাটলেই কাঁধ সমান হয়ে যাবে এবং পুরুষের বাবরী চুলের মতো দেখা যাবে তার জন্য অল্প করেও কাটার অনুমতি নেই। তবে জটিল অসুস্থতার কারণে চিকিৎসার প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে চুল ছোট করা, এমনকি জরুরতবশতঃ কামানোরও অনুমতি রয়েছে। তবে সর্বাবস্থায় ফ্যাশনের অনুকরণ করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
কারন এভাবে চুল কাটা বেদ্বীন ও বিধর্মীদের বৈশিষ্ট্য; কোন রুচিশীল, সুষ্ঠ চরিত্রের মানুষের বৈশিষ্ট্য নয়। তাই কোন মুসলামানের এ শ্রেণীর লোকেদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণ করা উচিত নয়।
উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে মহিলারা তাদের চুল খাটো করতে পারবে।
আরো জানুন
,
★★সুতরাং ইসলামে মেয়েদের চুল লম্বা রাখতে বলা হয়েছে,কাটার সুযোগ নেই।
তবে উপরে উল্লেখিত শরয়ী নীতিমালার আলোকে কেটে কিছু ছোট করা যাবে।
এমন নয় যে এই পর্যন্ত রাখতেই হবে,তবে পুরুষদের বাবরির চেয়ে বেশি রাখতেই হবে,আর বিজাতীয়দের সাংস্কৃতি মেনে রাখা যাবেনা,তার চেয়েও বেশি রাখতে হবে।
পিঠ বা কোমর পর্যন্ত রাখা ভালো।
,
★★উল্লেখ্য যাদের চুল লম্বা হতেই চায়না,এমনিতেই পড়ে যায়,সেক্ষেত্রে যতটুকুই হোক কোনো সমস্যা নেই। তবে কাটা যাবেনা।