বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
না জেনে এমনটি (হালালকে হারাম মনে) করে থাকলে তার গুনাহ হবে,তবে আল্লাহ তায়ালা সেটা মাফ করে দিবেন।
,
এখন অবশ্যই সেটাকে হালাল মনে করতে হবে।
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
إِنَّ اللَّهَ قَدْ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ، وَالنِّسْيَانَ، وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মতের অজ্ঞতা ও ভূলভাল কে ক্ষমা করে দিবেন।এবং অপারগতা বশত কৃত গোনাহকেও ক্ষমা করে দিবেন।(সুনানে ইবনে মা'জা,-২০৪৩)
,
বিস্তারিত জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
অজ্ঞতার কারনে হারাম জিনিসকে হারাম না ভাবলে বা হালাল না হারাম এটা নিয়েও না ভাবলে,ঈমান চলে যাবেনা।
(০২)
এমন কোনক মুসলিম নারীর সামনে মেয়েদের পর্দা করতে হবেনা।
গুনাহ হবেনা।
(০৩)
সেই মেয়ের সামনে অন্য মেয়েদেরকে পর্দা করতে হবেনা।
(০৪)
এতে ঐ মহিলার ঈমান চলে যাবেনা।
তাকে বেপর্দা মহিলাদের কাতারে ফেলা যায়।
তবে সম্পূর্ণ বেপর্দা বলা সমীচীন হবেনা।
(০৫)
নাজায়েজ হবেনা।
(তবে মহিলাদের জন্য জিন্স এর প্যান্ট পড়া ছেলেদের সাথে সাদৃশ্য হওয়ায় নাজায়েজ।)
(০৬)
উলামায়ে কেরামগন এটিকেও নাজাত বলেন।
তবে বাহিরে বের না হলে শুধু বাসাতেই মাহরামদের সামনে পড়লে ও ঢিলেঢালা হলে কিছু আলেম অনুমতি দেন।
তবে সতর্কতা হিসেবে নাজায়েজই বেশিরভাগ উলামায়ে কেরামগন বলেন।
(০৭)
তার নামাজ ইবাদত কবুল হবেনা,এমনটি বলা যাবে।
নামাজ ইবাদত কবুল হবে।
(০৮)
হ্যাঁ তার সহশিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া নাজায়েজ হবে।
(০৯)
যারা দুনিয়াতে আল্লাহর আয়াত,নিদর্শনকে দেখার পরেও ঈমান আনেনি।
(১০)
★এখানে কাফেররা উদ্দেশ্য।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
وَ لَوۡ شِئۡنَا لَرَفَعۡنٰهُ بِهَا وَ لٰکِنَّهٗۤ اَخۡلَدَ اِلَی الۡاَرۡضِ وَ اتَّبَعَ هَوٰىهُ ۚ فَمَثَلُهٗ کَمَثَلِ الۡکَلۡبِ ۚ اِنۡ تَحۡمِلۡ عَلَیۡهِ یَلۡهَثۡ اَوۡ تَتۡرُکۡهُ یَلۡهَثۡ ؕ ذٰلِکَ مَثَلُ الۡقَوۡمِ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا ۚ فَاقۡصُصِ الۡقَصَصَ لَعَلَّهُمۡ یَتَفَکَّرُوۡنَ ﴿۱۷۶﴾
আর আমি ইচ্ছা করলে উক্ত নিদর্শনাবলীর মাধ্যমে তাকে অবশ্যই উচ্চ মর্যাদা দিতাম, কিন্তু সে পৃথিবীর প্রতি ঝুঁকে পড়েছে এবং নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে। সুতরাং তার দৃষ্টান্ত হচ্ছে কুকুরের মত। যদি তার উপর বোঝা চাপিয়ে দাও তাহলে সে জিহবা বের করে হাঁপাবে অথবা যদি তাকে ছেড়ে দাও তাহলেও সে জিহবা বের করে হাঁপাবে। এটি হচ্ছে সে কওমের দৃষ্টান্ত যারা আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে। অতএব তুমি কাহিনী বর্ণনা কর, যাতে তারা চিন্তা করে।
(সুরা আ'রাফ ১৭৬)
এর ব্যাখ্যায় মুফাচ্ছিরিনে কেরামগন বলেছেনঃ-
এখানে যে ব্যক্তির উদাহরণ পেশ করা হয়েছে সে আল্লাহর কিতাবের জ্ঞানের অধিকারী ছিল। অর্থাৎ প্রকৃত সত্য সম্পর্কে অবহিত ছিল। এ ধরনের জ্ঞানের অধিকারী হবার কারণে যে কর্মনীতিকে সে ভুল বলে জানতো তা থেকে দূরে থাকা এবং যে কর্মনীতিকে সঠিক মনে করতো তাকে অবলম্বন করাই তার উচিত ছিল। এ যথার্থ জ্ঞান অনুযায়ী কাজ করলে আল্লাহ তাকে মানবতার উচ্চতর পর্যায়ে উন্নীত করতেন। কিন্তু সে দুনিয়ার স্বার্থ, স্বাদ ও আরাম আয়েশের দিকে ঝুঁকে পড়ে। প্রবৃত্তির লালসার মুকাবিলা করার পরিবর্তে সে তার সামনে নতজানু হয়। উচ্চতর বিষয়সমূহ লাভের জন্য সে পার্থিব লোভ-লালসার উর্ধে উঠার পরিবর্তে তার মধ্যে এমনভাবে ডুবে যায় যার ফলে নিজের সমস্ত উচ্চতর আশা-আকাংখা, বুদ্ধিবৃত্তিক ও নৈতিক উন্নতির সমস্ত সম্ভাবনা পরিত্যাগ করে বসে। ফলে শয়তান তার পেছনে লেগে যায় এবং অনবরত তাকে এক অধঃপতন থেকে আরেক অধঃপতনের দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। অবশেষে এ যালেম শয়তান তাকে এমন সব লোকের দলে ভিড়িয়ে দেয় যারা তার ফাঁদে পা দিয়ে বুদ্ধি বিবেক সব কিছু হারিয়ে বসেছিল।
এরপর আল্লাহ এ ব্যক্তির অবস্থাকে এমন একটি কুকুরের সাথে তুলনা করেছেন যার জিভ সবসময় ঝুলে থাকে। তার উপর বোঝা থাকলেও হাঁপাতে থাকে। আর বোঝা না থাকলেও একই অবস্থায় হাপাতে থাকে। মুজাহিদ বলেন, এ উদাহরণ দিয়েছে ঐ ব্যক্তির জন্য যে কিতাব পড়ে কিন্তু তার উপর আমল করে না। [তাবারী; আত-তাফসীরুস সহীহ]
ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, এ উদাহরণটি কুকুরের জন্য এ উদ্দেশ্যে পেশ করা হয়েছে যে, তাকে কোন জ্ঞান ও হিকমতের কথা বললে সে তা নেয়ার মত যোগ্যতা রাখে না। আর যদি তাকে কোন কিছু না দিয়ে এমনিতেই ছেড়ে দেয়া হয়, তবে কোন কল্যাণই বয়ে আনতে পারে না। যেমনিভাবে কুকুর বসে থাকলেও হাঁপাতে থাকে। আর দৌড়ালেও হাঁপায়। [তাবারী; আত-তাফসীরুস সহীহ]
কার কারও মতে আয়াতের অর্থ, সে তার পথভ্রষ্টতায় নিপতিত থাকা এবং ঈমানের দিকে আহবান জানানো হলে তা দ্বারা উপকৃত না হওয়ার দিক থেকে কুকুরের মত। তার উপর বোঝা চাপলেও সে হাঁপায়, না চাপলেও হাঁপায়। অনুরূপভাবে এ লোকটি উপদেশ ও ঈমানের প্রতি দাওয়াত দ্বারা উপকৃত হয়নি।
(১১)
আল্লাহ তায়ালার তওফিকের উপর বিষয়টি নির্ভরশীল।
আল্লাহ তায়ালা চাইলে সে পারবে,নতুবা নয়।