আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
138 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
reopened by
আমি একজনের সাথে হারাম সম্পর্ক ত্যাগ করে তাকে বলেছি যদি আল্লাহ চান তবে চাকরি করে, হালাল ভাবে তাকে বিবাহ করবো। এবং আর আগে আর কোনো সম্পর্ক রাখবোনা।
সে যদি আমার এ প্রতিশ্রুতি থেকে আমার অপেক্ষায় থাকে এবং আমাকে বিবাহ করার আশায় থাকে, তবে এটা কি হারাম হবে?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

কেউ সুনির্দিষ্ট বা কাঙ্ক্ষিত কাউকে বিয়ে করতে চায় বা বিয়ের ব্যবস্থাপনায় সহজ হতে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে ইসলামি শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শের আলোকে একটি শর্ত উল্লেখ করে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া উচিত। তাহলো-

‘হে আল্লাহ! তাকে ( অমুক ব্যক্তিকে) জীবনসঙ্গী বা জীবনসঙ্গীনী হিসেবে পাওয়া যদি সার্বিক দিক থেকে আমার জন্য কল্যাণকর হয় তবে আপনি সেটি আমার জন্য সহজ করে দিন।’

আর এভাবে দোয়া করা প্রত্যেকের জন্য কল্যাণকর, ভালো এবং উপকারি। কেননা আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে শর্ত জুড়ে দিয়ে এভাবে দোয়া করার বিষয়ে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَعَسَى أَن تَكْرَهُواْ شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَى أَن تُحِبُّواْ شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ

‘আর তোমাদের কাছে হয়তো কোনো একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোনো একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তা তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুত আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২১৬)

কাউকে বিয়ে করার জন্য আল্লাহর কাছে শর্তজুড়ে দিয়ে দোয়া করার পাশাপাশি ইস্তেখারা করা যেতে পারে। হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্মের ভালো-মন্দ ইঙ্গিত লাভে ইস্তেখারা করার নসিহত পেশ করেছেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সব কাজের জন্য ইস্তেখারার শিক্ষা দিতেন। যেমনভাবে তিনি কুরআনের সুরা শিক্ষা দিতেন। (বলতেন)- যখন তোমাদের কারো কোনো বিশেষ কাজ করার ইচ্ছে হয়, তখন সে যেন দুই রাকাআত নামাজ পড়ে এভাবে দোয়া করে-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ، وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ،

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার জ্ঞানের দ্বারা আমার উদ্দিষ্ট কাজের ভালো-মন্দ জানতে চাই এবং আপনার ক্ষমতা বলে আমি কাজে সক্ষম হতে চাই। আর আমি আপনার মহান অনুগ্রহ প্রার্থনা করি।

কারণ, আপনি ক্ষমতাবান আর আমার কোনো ক্ষমতা নেই এবং আপনি জানেন আর আমি জানি না। আপনিই গায়েব সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন।’

হে আল্লাহ! যদি আপনার জ্ঞানে এ কাজটিকে আমার দ্বীনের ব্যাপারে, আমার জীবন ধারণে ও পরিণামে (রাবী বলেন; কিংবা তিনি বলেছেন)- আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক দিয়ে মঙ্গলজনক বলে জানেন তাহলে তা আমার জন্য নির্ধারিত করে দিন। আর যদি আমার এ কাজটি আমার দ্বীনের ব্যাপারে, জীবন ধারণে ও পরিণামে- রাবী বলেন, কিংবা তিনি বলেছেন- দুনিয়ায় আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক দিয়ে আপনি আমার জন্য অমঙ্গলজনক মনে করেন, তবে আপনি তা আমার থেকে ফিরিয়ে নিন। আমাকেও তা থেকে ফিরিয়ে রাখুন। আর যেখানেই হোক, আমার জন্য মঙ্গলজনক কাজ নির্ধারিত করে দিন। তারপর আমাকে আপনার নির্ধারিত কাজের প্রতি তৃপ্ত রাখুন। রাবী বলেন, সে যেন এ সময় তার প্রয়োজনের নির্দিষ্ট বিষয়ের কথা উল্লেখ করে।’ (বুখারি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের জন্য কেনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে জীবনসঙ্গী বা জীবনসঙ্গীনী হিসেবে পাওয়ার জন্য দোয়া করতে কোনো ধরনের বাধা নেই। কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী শর্তজুড়ে দিয়ে এবং ইস্তেখারা করে যদি দোয়া করা হয়, তাতে বরকত ও কল্যাণের দরজা খুলে দেবেন মহান আল্লাহ।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই / বোন!

সর্ব প্রথম আল্লাহর প্রশংসা আদায় করছি,যিনি রহম ও করম করে আপনাকে দ্বীনের পথে নিয়ে এসেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছিআপনারা যেহেতু হারাম রিলেশন থেকে বের হয়ে এসেছেন।

আল্লাহ তায়ালা আপনাদের চিরকাল দ্বীনের উপরে রাখুন। হ্যাঁ আপনারা দুজনেই পরিবারের সম্মতির জন্য অপেক্ষা করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যে এই অপেক্ষার কারনে যেনো কেহ শরীয়তের খেলাফ কোনো কাজে জড়িয়ে না পড়ে। কেহ যেনো অন্যকে নিয়ে কুচিন্তা না করে।

কোনো মহিলার মাঝে দ্বীনদারী, উন্নত চরিত্র, জ্ঞান-গরিমা, মেধা, যোগ্যতা, সৌন্দর্য ইত্যাদি দেখে পছন্দ হলে তাকে স্ত্রী হিসেবে পাওয়ার জন্য আল্লাহর নিকট দুআ করা যাবে। কারণ একজন ভালো স্ত্রী একজন পুরুষের জীবনের বিশাল প্রাপ্তি- তাতে কোনো সন্দেহ নাই। এতে সে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় জগতে লাভবান হবে।  আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/3668/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...