আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
226 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (42 points)
edited by

১)আমার কারণ এ নাপাকি যদি বাইরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায়, নাপাকি টা অদৃশ্যমান ছিল। তাহলে সেই ব্যক্তিদেরকে কি বলতে হবে যে উক্ত স্থান বা জিনিস গুলো ধুয়ে নিতে? ( উল্লেখ্য নাপাকি ছড়িয়ে যাওয়ার নিশ্চয়তাই বেশি,)  

২) কোন কারণ ছাড়া নামাজ কাজা করলে কেমন গুনাহ হবে? এতে কি আল্লাহ সেই ব্যক্তির উপর থেকে আল্লাহ জিম্মাদারী উঠিয়ে নেবেন যেহেতু সে ওয়াক্তের পরে সালাত পরছে?

৩) হাম্বলী মাযহাবে মেইবি নামাজ ছেড়ে দেওয়াকে কুফরি বলা হয়। হানাফি মাযহাবে তা বলা হয়না। এখন বাংলাদেশে হানাফি মাযহাবের অনুসারী ই বেশি। কিন্তু মাযহাব মানতে গেলে যদি হাম্বলী মাযহাব মানি তবে এদেশের অধিকাংশ মানুষের সাথে মিল হয় না, বিভিন্ন ফাতওয়া সাইট বাংলায় যেগুলা আছে সেগুলাও হানাফি। নামাজ ছেড়ে দেওয়া কুফর না( ফরজ জানাসত্ত্যেও),  হানাফি মাযহাবের দৃষ্টিকোন থেকে। কিন্তু যদি আমি নামাজ কাজা করি এই ভেবে যে হানাফি মাযহাব অনুযায়ী এটা কুফর নাহ, তাহলে মনে হয় যে আমি কি নিজের মনের খেয়ালখুশি মত দ্বীন পালন করছি নাতো?মানে হানাফি মাযহাবে ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ জেনেও তা ছেড়ে দেওয়া কুফর না এই টা যে আমি মানছি, এভাবে এই মাযহাব টা মানা কি নিজের সুবিধা অনুযায়ী মাযহাব পালন করা হচ্ছে কি? এমন মনে হলে কোন মাযহাব মানব??

 

৪) আমি আমার ফ্যামিলির সবচেয়ে ছোট সদস্য। আমার প্রায় সবসময় সাদা স্রাব বের হয়, এজন্য পায়জামা পড়ে থাকি, সেই পায়জামায় সাদাস্রাব লেগে যায়। তো সেই পায়জামা খুলে অন্য জায়গায় রাখলে পরিবারের মানুষ সেটা ধরে অন্য কোন জায়গায় রাখে, যে স্থানে সাদাস্রাব লেগেছিল সে স্থানে হাত দিয়ে ধরসিল। তো আমি বলসিলাম হাত টা ধুয়া ফেল, কিন্তু সে ধোয় নাই। এই হাতেই সে অনেক কিছু ধরসে।বিছানা ও ঝারসে। ©

পরে মুখে যে ব্রন হয় এই ব্রন থেকে পানির মত কিছু ১টা বের হয়, সেটা কি নাপাক? সেটা বিছানার কিছু জায়গায় লাগসিল, সেগুলা আর ধোয়া হয়নাই।আর ব্রন গালানোর পরের সাদা পুজ এর মত ময়লাটাও বিছানায় লাগসিল। আমি ফ্যামিলির মানুষগুলোরে বলেও ধুয়াইতে পারিনাই। এমন অবস্থায় নামাজ পড়তে চাচ্ছি

আমার প্রশ্ন যে © বিছানা সে এই হাতে ধরেছিল,আর ব্রন সংশ্লিষ্ট পানি আর পুজ লেগেছিল , সেই বিছানায় কি পাক জামাকাপড় রাখলে তা নাপাক হবে? যদি নাপাকির চিহ্ন বা গন্ধ কিছুই না পাওয়া যায় তাহলে কি তা  নাপাক হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত জায়গায় নাপাকি থাকার বিষয়টি সেই ব্যাক্তিদের জানাতে হবে।
কোনো কিছু সেখানে রাখলে তাতে নাপাকি লাগলে পাক করতে হবে।

(০২)
ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ওয়াক্ত মত আদায় না করে পরবর্তী ওয়াক্তে বা পরবর্তীতে আদায় করা কবিরাহ গুনাহ।
আল্লাহ তায়ালা জিম্মাদারি উঠিয়ে নেন।
,   
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ، قَالَ أَوْصَانِي خَلِيلِي ـ صلى الله عليه وسلم ـ أَنْ " لاَ تُشْرِكْ بِاللَّهِ شَيْئًا وَإِنْ قُطِّعْتَ وَحُرِّقْتَ وَلاَ تَتْرُكْ صَلاَةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّدًا فَمَنْ تَرَكَهَا مُتَعَمِّدًا فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّةُ وَلاَ تَشْرَبِ الْخَمْرَ فَإِنَّهَا مِفْتَاحُ كُلِّ شَرٍّ " .

আবূ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার প্রিয় বন্ধু (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে এই উপদেশ দিয়েছেনঃ তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছু শরীক করো না, যদিও তোমাকে টুকরা টুকরা করে ছিন্নভিন্ন করা হয় অথবা আগুনে ভস্মীভূত করা হয়। তুমি স্বেচ্ছায় ফরয নামায ত্যাগ করো না। যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় তা ত্যাগ করে তার থেকে (আল্লাহর ) যিম্মাদারি উঠে যায়। তুমি মদ্যপান করো না। কেননাতা সর্বপ্রকার অনিষ্টের চাবিকাঠি।
(ইবনে মাজাহ ৪০৩৪.মুসনাদে আহমাদ ২৭৩৬৪.মিশকাত ৫৪০, আত-তালীকুর রাগীব ১/১৯৫, ইরওয়া ২০৮৬।)

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ أَبِي جَنَابٍ، عَنْ مَغْرَاءٍ الْعَبْدِيِّ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ سَمِعَ الْمُنَادِيَ فَلَمْ يَمْنَعْهُ مِنَ اتِّبَاعِهِ عُذْرٌ " . قَالُوا وَمَا الْعُذْرُ قَالَ خَوْفٌ أَوْ مَرَضٌ " لَمْ تُقْبَلْ مِنْهُ الصَّلَاةُ الَّتِي صَلَّى " . قَالَ أَبُو دَاوُدَ رَوَى عَنْ مَغْرَاءٍ أَبُو إِسْحَاقَ . صحيح

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের আযান শুনা সত্ত্বেও কোনরূপ ওজর ছাড়া (বিনা কারণে) জামা‘আতে সলাত আদায়ে বিরত থাকে তার অন্যত্র (একাকী) সলাত কবুল হবে না। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ওজর কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ভয়-ভীতি অথবা অসুস্থতা। 

(আবু দাউদ ৫৫১.বায়হাক্বী ‘সুনানুল কুবরা’ (৩/৭৫), হাকিম (১/পৃঃ ২৪৫), দারাকুতনী (১/পৃঃ ৪২১)

★★শুধু জামা'আত ছেড়ে দেওয়ার কারনেই হাদীস শরীফে এমন কঠিন বাক্য ব্যবহার হয়েছে,সুতরাং নামাজ কাজা করলে সেটি আরো বড় মারাত্মক অপরাধ হবে।
,
অনেক ফুকাহায়ে কেরামগন বলেছেন ইচ্ছাপূর্বক ভাবে নামাজ কাজা করা চুরি করা যেনা করার চেয়েও মারাত্মক বলে আখ্যায়িত করেছেন।

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَقِيقٍ العُقَيْلِيِّ، قَالَ: كَانَ أَصْحَابُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَرَوْنَ شَيْئًا مِنَ الأَعْمَالِ تَرْكُهُ كُفْرٌ غَيْرَ الصَّلاَةِ.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন শাকীক রহঃ বলেছেন, হুজুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাগণ কোন আমল ছেড়ে দেয়াকে কুফরী মনে করতেন না শুধু নামায ব্যতীত। অর্থাৎ নামায ছেড়ে দেওয়াকে তারা কুফরীর প্রায় নিকটবর্তী কাজ মনে করতেন। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৬২২]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির উপর থেকে আল্লাহ তায়ালা জিম্মাদারি উঠিয়ে নিবেন।
তবে কাজা আদায় করার পর তওবা করলে এবং ভবিষ্যতে  আর এহেন কাজ না করার ওয়াদা বদ্ধ হলে আল্লাহ তায়ালা আবারো তার জিম্মাদারী নিবেন,ইনশাআল্লাহ। 

(০৩)
আপনি হাম্বলি মাযহাব অনুযায়ী চললে হানাফি মাযহাবের কোনো মাসয়ালা মানতে পারবেননা।
এতে শরীয়তের আনুগত্য নয়,বরং নফসের পূজা হবে।

(০৪)
নাপাকির চিন্হ,গন্ধ না থাকায় সেই বিছানায় পাক জামা কাপড় রাখলে সমস্যা হবেনা।

তবে ভেজা জামা (যাহা হতে পানি টপকিয়ে পড়ে) কাপড় তাতে রাখবেননা।

আর উক্ত বিছানার উপর জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়া যাবে,সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...