আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
479 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (41 points)
একজন ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করেন। ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী। উনি অন্যের মাধ্যমে পণ্য আনেন। যিনি পণ্য আনছেন তিনি সরকারের ট্যাক্স ফাকি দিয়ে আনছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সে ব্যবসায়ীর কোন হাত নেই। কারন তিনি তো অন্যের দ্বারা আনাচ্ছেন, নিজে আনছেন না।
এখন তার প্রশ্ন হলো এতে কি তার গুনাহ হবে? আর ইসলামি রাষ্ট্রে কি আদৌ সরকারকে ট্যাক্স দেয়ার হুকুম আছে? শরীয়তে কি ট্যাক্স এর হুকুম আছে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم  
,
মুসলিম সরকার জনগনের উপকারার্থে যে আইন করে, তা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে হারাম না হলে তা মানা সে দেশের নাগরিকের জন্য আবশ্যক।
সেই হিসেবে পণ্য আমদানীর উপর সরকারী ট্যাক্স প্রদান করাই উচিত। তা ফাঁকি দেয়া বা ঘুষ দিয়ে আমদানী ঠিক নয়।

হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত

 عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي " شُعَبِ الْإِيمَانِ.

রাসুলাল্লাহ সাঃ বলেন,হালাল রিযিক তালাশ করা অন্যন্য ফরয বিধানের পরই ফরয।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৭৮১)

কিন্তু এ কারণে ব্যবসাকৃত টাকাকে হারাম বলা যাবে না।
যদিও আমদানী করার পদ্ধতিটা শরয়ী সাপোর্ট যোগ্য নয়। কিন্তু এ কারণে পণ্য বিক্রির টাকাকে হারাম বলা যাবে না।
এভাবে কর ও ট্যাক্স ফাকি দিয়ে পণ্য আমদানী করা থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য। 

ولا ينبغي للسلطان أن يسعر على الناس” لقوله عليه الصلاة والسلام: “لا تسعروا فإن الله هو المسعر القابض الباسط الرازق” ولأن الثمن حق العاقد فإليه تقديره فلا ينبغي للإمام أن يتعرض لحقه إلا إذا تعلق به دفع ضرر العامة (كتاب الكراهية، فصل فى البيع-4/4722، وكذا فى البدائع الصنائع-5/129)
যার সারমর্ম হলো জনগনের স্বার্থে তাদের উপকারের জন্য সরকার পন্যের উপর ভ্যাট বসাইতে পারবে।  
كل من يسكن دولة فانه يلتزم قولا أو عملا بأنه يتبع قوانينها وحينئذ يجب عليه اتباع أحكامها الخ (بحوث فى قضايا فقهية معاصرة-166
যার সারমর্ম হলো  দেশের জনগনের উপর সরকারী আইন মানা ওয়াজিব।  
যদি তা ইসলাম বিরোধী না হয়ে থাকে। 
,
★সুতরাং প্রশ্নে  উল্লেখিত  ছুরত "একজন ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করেন। ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী ইত্যাদি, এক্ষেত্রে  তিনি অন্যের মাধ্যমে পণ্য আনছেন উক্ত (মাধ্যম) সরকারের ট্যাক্স ফাকি দিয়ে আনছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সে ব্যবসায়ীর কোন হাত নেই। কারন তিনি তো অন্যের দ্বারা আনাচ্ছেন, নিজে আনছেন না।""

তারপরেও এহেন কাজ জায়েজ হবেনা।
যেহেতু এক্ষেত্রে অন্যায়ের সহযোগিতা হচ্ছে।  


وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

তাই তাকে আদেশ করে ট্যাক্স দিতে বলা হবে,বা অন্য কাহারো মাধ্যমে নিয়ে আসতে হবে।

 সরকারকে ভ্যাট না দিয়ে এথেকে উপার্জিত টাকা হারাম হবেনা।
তবে শরীয়ত এটাকে সাপোর্ট করেনা।
 এভাবে কর ও ট্যাক্স ফাকি দিয়ে পণ্য আমদানী করা থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য। 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

সরকারকে ট্যাক্স দেওয়া সংক্রান্ত আরো জানুন


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...