আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
194 views
in সালাত(Prayer) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম।

(১) সুরা ফাতিহা পড়ার সময় একই লাইন যদি দুইবার পড়ি। অর্থাৎ ১বার পড়লাম। মনে হলো কোথাও ভুল গেছে। তাই আবার একাধিকবার সেই লাইন পড়লাম।(যেন লাইনটা সঠিক উচ্চারণ হয়) তাহলে কি সেজদা সাহু দিতে হবে? নাকি একাধিক বার একি লাইন পড়লে সমস্যা হবে না?

(২) নামাজে যদি সুরা ফাতিহা বা অন্য সুরা সম্পুর্ন পড়ার পর হঠাৎ মনে হয় যে সুরার কোথাও ভুল হয়ে গেল কিনা, তখন আবার সেই সুরা প্রথম থেকে পড়া যাবে? (যেহেতু একবার পড়েছি।)

(৩) একাকি নামাজে সুরা ফাতিহা পড়ার পর কি "আমিন" বলা যাবে? যদি বলা যায়, তাহলে "আমিন" কি জোড়ে বলতে হবে?

(৪) ওজু করার সময় কুলি করার ক্ষেত্রে কি পানি গলা পর্যন্ত যেতে হবে? শুধু মুখে নিয়ে কুলি করলে কি হবে?(কারন, গলা পর্যন্ত নিতে গেলে অনেক সময় পানি কিছুটা গিলে ফেলতে হয়, বা হঠাৎ পানি গলার মধ্যে নিতে গেলে হাল্কা বমিভাব চলে আসে)

(৫) খাওয়ার পর অনেক সময় দাতের কোনায় ভাত/কোন খাবার জমে থাকে। কিন্তু কুলি করার পরও অনেক সময়  দাতের কোনা থেকে যায় না। কুলির পরও যদি দাতের কোনায় কোন খাবার লেগে থাকে, তাহলে কি ওজুর সুন্নত পূরণ হবে? (কারন অনেক সময় হয়তো মেসওয়াক, ব্রাশ ব্যবহার করা হয়না)

(৬) ওজু করার সময় যদি ভুলে যাই যে, হাত/শরীরের অন্য কোন অংশ ২বার ধৌত করলাম নাকি ৩বার ধৌত করলাম। তখন কি আরো ১বার বেশি ধৌত করবো?

(যদি ২বার ধৌত করেছি এইটা সিওর,কিন্তু ৩বার ধৌত  করেছি নাকি সিওর হতে পারতেছিনা। তখন কি ওই অবস্থায়ই রেখে দিব নাকি আরো ১বার ধৌত করবো?) (কারন ৩ বারের কম হলে তো সুন্নত পালন হবে না, আবার ৩ বার যদি ১ম এই করে থাকি কিন্তু মনে নেই,তখন আরো ১বার বেশি করলেও তো ৪ বার হয়ে গেল। কিন্তু ৩ বারের বেশি করলে তো সুন্নত পালন হবে না।)

(৭) ফরজ নামাজে প্রথম রাকাতে সুরা ইখলাস পড়ে ২য় রাকাতে সুরা ফালাক/নাস পড়া যাবে? অর্থাৎ ১ম রাকাতে যেই সুরা পড়বো, ২য় রাকাতে তার থেকে বড় সুরা পড়া যাবে? ১ম রাকাতের থেকে ২য় রাকাতে বড় সুরা পড়া কি অনুত্তম?

(৮) ঘুমাতে যাওয়ার সময় যখন কোন দোয়া/সুরা (যেমনঃ সুরা ইখলাস,সুরা ফালাক,সুরা নাস- ৩বার করে) পড়ে ঘুমানো হয়, তখন সেই দোয়া/সুরা কি মনে মনে পড়া যাবে? নাকি সেই দোয়া/সুরা নামাজের মতই এতটুকু জোড়ে পড়তে হবে যেন নিজের কানে আসে।

(৯) ওজুতে একবার যেই পানি ব্যবহার হয়ে গেছে, সেই পানি কি আবার প্রস্রাব/পায়খানা করার পর নিজেকে পাক করার জন্য ধৌত করতে ব্যবহার করা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (588,060 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
সুরা ফাতিহাকে পড়ার সময় একই লাইন যদি দুইবার পড়া হয়। অর্থাৎ ১বার পড়ার পর মনে হলো কোথাও ভুল গেছে। তাই আবার একাধিকবার সেই লাইন পড়া হল, তাহলে সেজদা সাহু দিতে হবে।

(২)
সুরা ফাতিহার কোনো অংশকে দুইবার পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে। তবে ফাতেহা ব্যতিত অন্য কোনো সুরা সম্পুর্ন পড়ার পর হঠাৎ মনে হল যে, সুরার কোথাও ভুল হয়েছে, তখন আবার সেই সুরা প্রথম থেকে পড়া যাবে, এখানে কিন্তু সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।

(৩)
একাকি নামাজে সুরা ফাতিহা পড়ার পর "আমিন" বলা যাবে। "আমিন" কি নিম্নস্বরে বলতে হবে।

(৪)
ওজুর ধারাবাহিক সুন্নত বর্ণানায় ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় উল্লেখিত রয়েছে-
(ومنها المضمضة والاستنشاق) والسنة أن يتمضمض ثلاثا أولا ثم يستنشق ثلاثا ويأخذ لكل واحد منهما ماء جديدا في كل مرة وكذا في محيط السرخسي.

وحد المضمضة استيعاب الماء جميع الفم وحد الاستنشاق أن يصل الماء إلى المارن. كذا في الخلاصة.

إن ترك المضمضة والاستنشاق أثم على الصحيح؛ لأنهما من سنن الهدى وتركها يوجب الإساءة بخلاف السنن الزوائد فإن تركها لا يوجب الإساءة هكذا في السراج الوهاج.
ওজুর সুন্নত সমূহের মধ্যে একটি সুন্নত হলো,(১)মাদমাদাহ তথা গড়গড়া করে কুলি করা(২)ইস্তেনশাক্ব তথা নাকের নরম স্থান পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।নতুন পানি দ্বারা প্রথমে তিনবার মাদমাদাহ করা তারপর আবার নতুন পানি দ্বারা তিনবার ইস্তেনশাক্ব করা সুন্নত।
বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মাদমাদাহ এবং ইস্তেনশাক্ব ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে।কেননা এ দু'টো সুন্নতে মু'আক্বাদাহ (অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিয়মিত সুন্নত)।এবং ছেড়ে দেওয়া গোনাহকে ওয়াজিব করে।তবে অন্যান্য সুন্নতে যায়েদাহ কে ছেড়ে দিলে কেউ গোনাহগার হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৭)

وَالْمُبَالَغَةُ فِيهِمَا سُنَّةٌ أَيْضًا. كَذَا فِي الْكَافِي وَشَرْحِ الطَّحَاوِيِّ إلَّا أَنْ يَكُونَ صَائِمًا. كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة
ভালভাবে গড়গড়া করে কুলি করা, ও ভালভাবে নাকে পানি পৌঁছানো সুন্নত।তবে রোযাদারদের জন্য সুন্নত নয়।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৮)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/8222

(৫)
যথাসম্ভব এগুলো দাতের ফাঁক থেকে বের করার চেষ্টা করতে হবে। তবে বের না হলেও অজুতে কোনো সমস্যা হবে না।হ্যা, অজুর সুন্নত পরিপূর্ণ রূপে আদায় হবে না।

(৬)
২ বার ধৌত করলে না ৩য় বার। এসম্পর্কে গভীর চিন্তাভাবনা করে মন যে দিকে সায় দিবে, সে দিকে সিদ্ধান্ত নিবেন।

(৭)
দ্বিতীয় রাকাতে তুলনামূলক ছোট সূরা পড়া মুস্তাহাব। তাই ইচ্ছাকৃত দ্বিতীয় রাকাতে তুলনামূলক বড় সূরা পড়া অনুত্তম।

(৮)
জবান নাড়িয়ে নিজের কান দ্বারা শ্রবণ করা যায়,সেই পরিমাণ আওয়াজ করে পড়তে হবে।

(৯)
না, ব্যবহার করা যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 127 views
...