মানুষ মারা যাওয়ার পর তার কাফনের দাফনের পর তার রেখে যাওয়া সমূদয় সম্পত্তি থেকে তার ঋন পরিশোধ করা ওয়ারিশদের উপর আবশ্যক।
,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
وَ لَکُمۡ نِصۡفُ مَا تَرَکَ اَزۡوَاجُکُمۡ اِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّهُنَّ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَکُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَکۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصِیۡنَ بِهَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ وَ لَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَکۡتُمۡ اِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّکُمۡ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَکُمۡ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَکۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ تُوۡصُوۡنَ بِهَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ وَ اِنۡ کَانَ رَجُلٌ یُّوۡرَثُ کَلٰلَۃً اَوِ امۡرَاَۃٌ وَّ لَهٗۤ اَخٌ اَوۡ اُخۡتٌ فَلِکُلِّ وَاحِدٍ مِّنۡهُمَا السُّدُسُ ۚ فَاِنۡ کَانُوۡۤا اَکۡثَرَ مِنۡ ذٰلِکَ فَهُمۡ شُرَکَآءُ فِی الثُّلُثِ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصٰی بِهَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ۙ غَیۡرَ مُضَآرٍّ ۚ وَصِیَّۃً مِّنَ اللّٰهِ ؕ وَ اللّٰهُ عَلِیۡمٌ حَلِیۡمٌ ﴿ؕ۱۲﴾
আর তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীগণ যা রেখে গেছে তার অর্ধেক, যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তারা যা রেখে গেছে তা থেকে তোমাদের জন্য চার ভাগের এক ভাগ। তারা যে অসিয়ত করে গেছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। আর স্ত্রীদের জন্য তোমরা যা রেখে গিয়েছ তা থেকে চার ভাগের একভাগ, যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে তাহলে তাদের জন্য আট ভাগের এক ভাগ, তোমরা যা রেখে গিয়েছে তা থেকে। তোমরা যে অসিয়ত করেছ তা পালন অথবা ঋণ পরিশোধের পর। আর যদি মা বাবা এবং সন্তান-সন্ততি নাই এমন কোন পুরুষ বা মহিলা মারা যায় এবং তার থাকে এক ভাই অথবা এক বোন, তখন তাদের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের একভাগ। আর যদি তারা এর থেকে অধিক হয় তবে তারা সবাই তিন ভাগের এক ভাগের মধ্যে সমঅংশীদার হবে, যে অসিয়ত করা হয়েছে তা পালনের পর অথবা ঋণ পরিশোধের পর। কারো কোন ক্ষতি না করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে অসিয়তস্বরূপ। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।
(সুরা নিসা ১২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
সামুরা বিন জুনদুব (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) আমাদের উদ্দেশে খুতবারত অবস্থায় জিজ্ঞেস করেন, অমুক গোত্রের কোনো লোক এখানে আছে কি? কিন্তু কেউ সাড়া দিল না। এমনকি তৃতীয়বার একই প্রশ্ন করার পর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমি উপস্থিত আছি। তখন তিনি বলেন, ‘প্রথম দুই বার তুমি সাড়া দিলে না কেন? জেনে রেখো! আমি তোমাদের শুধু কল্যাণ কামনা করি। তোমাদের অমুক ব্যক্তি ঋণের দায়ে আটকে আছে। সামুরা (রা.) বলেন, তখন আমি ওই ব্যক্তিকে মৃত ব্যক্তির পক্ষে ঋণ পরিশোধ করতে দেখি। যার পর আর কেউ তার কাছে আর কোনো পাওনা চাইতে আসেনি।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৩৪১)
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের আত্মা তার ঋণের সঙ্গে ঝুলন্ত থাকে, যতক্ষণ না তা পরিশোধ করা হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১০৭৮)
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-এর কাছে যখন কোনো ঋণী ব্যক্তির জানাজা উপস্থিত করা হতো, তিনি জিজ্ঞেস করতেন, সে তার ঋণ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত সম্পদ রেখে গেছে কি? যদি বলা হতো যে সে তার ঋণ পরিশোধের মতো সম্পদ রেখে গেছে। তখন তার জানাজার সালাত আদায় করতেন। নতুবা বলতেন, তোমাদের সাথীর জানাজা আদায় করে নাও।’ (বুখারি, হাদিস : ২২৯৮)
★যদি স্ত্রীর দেনমোহর আদায় করা না হয়, তাহলে সেটাও ঋণ বলে গণ্য এবং রেখে যাওয়া সম্পত্তির ভাগাভাগির পূর্বে তা আদায় করা জরুরী হবে। আর তার (স্ত্রীর) নির্দিষ্ট অংশ হবে এ থেকে পৃথক।
কোন মানুষ যদি বিয়ের পর স্ত্রী মোহরানা পরিশোধ না করে মারা যান, এক্ষেত্রে ঐ ব্যাক্তির সমূদয় সম্পদ হতে তার ওয়ারিশ গন সম্পদ বন্টনের পূর্বেই তার স্ত্রীর মোহরানা শোধ করে দিবে।
যদি মাইয়্যিতের সেই পরিমান সম্পদ না থাকে,তাহলে সন্তান,ওয়ারিশগন নিজেদের থেকে তাহা আদায় করে দিলে এটি দয়া ও ইহসান হবে।
তবে যদি মাইয়্যিতের স্ত্রী মোহরানা সন্তুষ্টি চিত্তে মাফ করে দেয়,তাহলে তাহা আর শোধ করতে হবেনা।