ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
কুফরি ২ প্রকারঃ-
এক,
বড় কুফরীঃ যা মানুষকে দ্বীন থেকে বের করে দেয়। যেমনঃ আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং তাঁর মনোনীত ধর্ম ইসলামকে গালি দেওয়া অথবা ইসলামের রুকনসমূহ সহ আল্লাহ কর্তৃক ফরযকৃত দ্বীনের অন্যান্য যরূরী বিষয়ের কোনো কিছুকে অস্বীকার করা।
ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি।
মহান আল্লাহ বলেন,
﴿قُلۡ أَبِٱللَّهِ وَءَايَٰتِهِۦ وَرَسُولِهِۦ كُنتُمۡ تَسۡتَهۡزِءُونَ
٦٥ لَا تَعۡتَذِرُواْ قَدۡ كَفَرۡتُم بَعۡدَ إِيمَٰنِكُمۡۚ﴾ [التوبة: ٦٥، ٦٦]
“আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহ্র সাথে, তাঁর আয়াতের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করতে? ওযর পেশ করো না, নিশ্চয় তোমরা ঈমান আনার পর (ঠাট্ট-বিদ্রূপের কারণে) কাফের হয়ে গেছ” (তাওবাহ ৬৫-৬৬)।
দুই.
ছোট কুফরীঃ যেমনঃ আল্লাহ্র নে‘মত অস্বীকার করা অথবা কোনো মুসলিম ব্যক্তির সাথে অন্যায়ভাবে কলহ-বিবাদ ও মারামারি করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ»
“মুসলিম ব্যক্তিকে গালি দেওয়া ফাসেক্বী এবং তার সাথে কলহ-বিবাদ ও মারামারি করা কুফরী” (বুখারী)।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বড় কুফরি করলে তথা ইসলাম থেকে বের হয়ে যাওয়ার মতো কুফরি করলে স্বামী স্ত্রীর বিবাহ ভঙ্গ হয়।
(০২)
এতে কুফরি হবেনা।
(০৩)
কারো সাথে তিনদিনের বেশি কথা না বললে ব্যাক্তি মুমিন /মুসলমানই থাকেনা,এমন কথা হাদীসে নেই।
তবে এমতাবস্থায় মারা গেলে জাহান্নামে যাওয়ার কথা হাদীস শরীফে এসেছেঃ
হাদীস শরীফে এসেছেঃঃ-
عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَقَاطَعُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَحَاسَدُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا وَلاَ يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلاَثٍ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ وَالزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ وَابْنِ مَسْعُودٍ وَأَبِي هُرَيْرَةَ .
আবদুল জাব্বার ইবনু ’আলা আত্তার ও সাঈদ ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) ... আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর সম্পর্ক ছিন্ন করবে না। পরস্পরকে ত্যাগ করবে না, পরস্পর বিদ্বেষ পোষণ করবে না, পরস্পর হিংসা রাখবে না বরং আল্লাহর বান্দা হয়ে ভাই ভাই হিসাবে থাকবে। কোন মুসলিমের জন্য হালাল নয় তার অপর মুসলিম ভাইকে তিন দিনেরও বেশী পরিত্যাগ করে থাকা। (তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৯৩৫)
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثٍ فَمِنْ هَجَرَ فَوْقَ ثَلَاثٍ فَمَاتَ دَخَلَ النَّارَ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُد
আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিমের জন্য এটা বৈধ নয় যে, সে তিনদিনের বেশি সময় অপর কোন মুসলিম ভাইয়ের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে সাক্ষাৎ পরিত্যাগ করে। যে ব্যক্তি তিনদিনের বেশি সময় অপর ভাইকে ত্যাগ করল, আর এ সময় তার মৃত্যু হলো, তবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
সহীহ : আহমাদ ৯০৯২, আবূ দাঊদ ৪৯১৪, সহীহুল জামি‘ ৭৬৫৯, সহীহ আত্ তারগীব ২৭৫৭, ইরওয়া ৭/৯৪, সুনানুন্ নাসায়ী আল কুবরা ৯১৬১, হিলইয়াতুল আওলিয়া ৮/১২৬।
★প্রশ্নে উল্লেখিত আপনি কাহারো সাথে কথা না বললে গুনাহ হবে।
গীবত ইত্যাদি থেকে বাঁচতে কম কথা বলবেন,কম সময় দিবেন,প্রয়োজনে শুধু সালাম চালিয়ে যাবেন।