আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
68 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (31 points)
প্রিয় শায়েখ,

যেসব পুরুষ অটিজম রোগে আক্রান্ত(মানসিক ভারসাম্যহীন), তাদের সামনে একজন বেগানা মহিলা কি সেভাবেই পর্দার বিধান পালন করবেন, যেমনটা একজন সুস্থ স্বাভাবিক পুরুষের সাথে করেন?

আর যদি এমনটি না হয়, তাহলে কি রকম এবং কতটুকু পর্দা করতে হবে- যদি বিস্তারিত জানাতেন, খুব উপকৃত হতাম

1 Answer

0 votes
by (684,760 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


যাদের সামনে পর্দা করা আবশ্যক নয়,তাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

اَوِ التّٰبِعِیۡنَ غَیۡرِ اُولِی الۡاِرۡبَۃِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِ الطِّفۡلِ الَّذِیۡنَ لَمۡ یَظۡہَرُوۡا عَلٰی عَوۡرٰتِ النِّسَآءِ ۪

পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক।
(সুরা নূর ৩১)

★এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেনঃ এখানে এমন নির্বোধ ও ইন্দ্রিয়বিকল ধরনের লোকদের বুঝানো হয়েছে, যাদের নারী জাতির প্রতি কোন আগ্রহ ও ঔৎসুকই নেই। ইবনে জরীর তাবারী একই বিষয়বস্তুই আবু আব্দুল্লাহ, ইবনে জুবায়র, ইবনে আতিয়্যা প্রমুখ থেকে বর্ণনা করেছেন। কাজেই আয়াতে এমনসব পুরুষকে বুঝানো হয়েছে, যাদের মধ্যে নারীদের প্রতি কোন আগ্রহ ও কামভাব নেই এবং নারীদের রূপ-গুণের প্রতিও তাদের কোন ঔৎসুক নেই যে, অপরের কাছে গিয়ে বর্ণনা করবে।

তবে নপুংসক ধরনের লোক যারা নারীদের বিশেষ গুণাবলীর সাথে সম্পর্ক রাখে, তাদের কাছেও পর্দা করা ওয়াজিব।

 আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণিত হাদীসে আছে, জনৈক খুনসা বা হিজড়া ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের কাছে আসা-যাওয়া করত। রাসূলের স্ত্রীগণ তাকে আয়াতে বর্ণিত
 (غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ) 
এর অন্তর্ভুক্ত মনে করে তার সামনে আগমন করতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে গৃহে প্রবেশ করতে নিষেধ করে দিলেন। [দেখুন, মুসলিমঃ ২১৮০] 

এ কারণেই কোন কোন আলেম বলেনঃ পুরুষ যদিও পুরুষত্বহীন, লিঙ্গকর্তিত অথবা খুব বেশী বৃদ্ধ হয়, তবুও সে (غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ) শব্দের অন্তর্ভুক্ত নয়। তার কাছে পর্দা করা ওয়াজিব। এখানে (غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ) শব্দের সাথে (أَوِ التَّابِعِينَ) শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য এই যে, নির্বোধ ইন্দ্রিয়বিকল লোক, যারা অনাহূত গৃহে ঢুকে পড়ে, তারা ব্যতিক্রমভুক্ত। [দেখুন-তাবারী, কুরতুবী, ফাতহুল কাদীর]

(أَوِ الطِّفْلِ)

 এখানে এমন অপ্রাপ্তবয়স্ক বালককে বুঝানো হয়েছে, যে এখনো সাবালকত্বের নিকটবর্তীও হয়নি এবং নারীদের বিশেষ আকর্ষণ, কামনীয়তা ও গতিবিধি সম্পর্কে সম্পূর্ণ বেখবর। যে বালক এসব অবস্থা সম্পর্কে সচেতন, সে ‘মোরাহিক’ অর্থাৎ সাবালকত্বের নিকটবর্তী। তার কাছে পর্দা করা ওয়াজিব। [ইবন কাসীর]

"إذا كان التخلف شديداً ، بحيث لا يعقل ولا يفهم ، ولا يدرك المعاني وليس له الشهوة التي تبعثه إلى النظر واللمس ونحو ذلك ، ولا همة له نحو النساء ، بل هو كالطفل أو أقل حالة ، فلا حاجة إلى التحجب عنه ، ويدخل في قوله تعالى : (أَوْ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنْ الرِّجَالِ) النور/31 . أما إذا كان يعقل بعض هذه الأشياء ، وله ميل إلى النساء ، ويظهر من كلامه أنه يحس بشهوة ، فلا يمكن من دخوله على النساء ، ويلزمهن التحجب عنه ، 
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তির অবস্থা যদি এমন হয়,কিছুই জানেনা, বুঝেনা,কোনো শব্দের অর্থ বুঝেনা,মহিলার দিকে নজর নিয়ে যাবে বা স্পর্শ করার জন্য হাত চলে যাবে এমন কোনো শাহওয়াত তথা উত্তেজনাও যদি তার না থাকে,মহিলার দিকে যার কোনো হিম্মতই নেই,সে যদি শিশুর মতো হয় বরং তার চেয়েও নিম্ন স্তরের হয়,তাহলে তার সামনে হিজাবের প্রয়োজনীয়তা নেই।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যেসব পুরুষ অটিজম রোগে আক্রান্ত(মানসিক ভারসাম্যহীন), তাদের ক্ষেত্রে দেখতে হবে যে তার শব্দের অর্থ বুঝতে পারে কিনা?
তারা কি এমন নির্বোধ ও ইন্দ্রিয়বিকল ধরনের লোক?যাদের নারী জাতির প্রতি কোন আগ্রহ ও ঔৎসুকই নেই!
সে যদি কিছুই না বুঝে,মহিলার দিকে নজর নিয়ে যাবে বা স্পর্শ করার জন্য হাত চলে যাবে এমন কোনো শাহওয়াত তথা উত্তেজনাও যদি তার না থাকে।
তাহলে এমন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যাক্তির সামনে পর্দা করা আবশ্যক নয়।

পর্দা না করলেও চলবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...