উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যারা রাসুল সাঃ এর অবমাননা করেছে,বা তাদের সমর্থন করেছে,বা মুসলমানদের উপর জুলুম করছে,সে সমস্ত কাফেরদের পণ্য ক্রয়ের বিধান হল, যদি বাজারে এছাড়া আর কোন সমমানের পণ্য না থাকে, তাহলে অপারগ অবস্থায় তাদের জায়েজ পণ্য ক্রয় করা জায়েজ আছে। কিন্তু যদি সমমানের পণ্য বাজারে থাকে, তাহলে তাদের প্রোডাক্টকৃত পণ্য ক্রয় থেকে বিরত থাকা উচিত।
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ
لَا بَأْسَ بِأَنْ يَكُونَ بَيْنَ الْمُسْلِمِ وَالذِّمِّيِّ مُعَامَلَةٌ إذَا كَانَ مِمَّا لَا بُدَّ مِنْهُ (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، الباب الرابع عشر فى اهل الذمة والاحكام-5/348
যদি সমমানের পণ্য বাজারে না থাকে,তাহলে কাফেরের পন্য ক্রয় করতে কোনো সমস্যা নেই।
ফ্রান্স বর্তমান যেই জঘন্য কাজ চালিয়েছে,অনেকে আবার তাদের সার্পোটও করেছে, এসব যদি আমরা অন্যায় ভেবে থাকি, একজন মুসলিম হিসেবে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে প্রতিবাদ করা ঈমানের নুন্যতম দাবী।
,
একজন মুসলিম কোন অন্যায় দেখলে সবার আগে হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে, না পারলে মুখ দিয়ে না পারলে মন থেকে অন্যায়কে ঘৃণা করবে। হাদিসে বর্ণিত অন্যায়ের প্রতিবাদের এই সুন্দর সংজ্ঞায়ন আমাদের বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে হবে।
পণ্য বয়কট সেই উপায় যার মাধ্যমে আমরা অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে পারি।
যেহেতু তাদের সাথে বাণিজ্যিক লেনদেন করলে তাদের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা হয়,এবং শক্তিশালী অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে তারা মুসলিমদের উপর যুলম আরো বাড়িয়ে দিতে পারে, কাজেই এসব দেশের পণ্য ক্রয় করা থেকে আমাদের অবশ্যই বিরত থাকা চাই।
তাদের পন্য ক্রয় করে তাদেরকে সহযোগিতা করা যাবেনা।
আল্লাহ তায়ালা বলেন
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، ح وَعَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ أَخْرَجَ مَرْوَانُ الْمِنْبَرَ فِي يَوْمِ عِيدٍ فَبَدَأَ بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ الصَّلَاةِ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا مَرْوَانُ خَالَفْتَ السُّنَّةَ أَخْرَجْتَ الْمِنْبَرَ فِي يَوْمِ عِيدٍ وَلَمْ يَكُنْ يُخْرَجُ فِيهِ وَبَدَأْتَ بِالْخُطْبَةِ قَبْلَ الصَّلَاةِ . فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ مَنْ هَذَا قَالُوا فُلَانُ بْنُ فُلَانٍ . فَقَالَ أَمَّا هَذَا فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ سَمِعْتُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَنْ رَأَى مُنْكَرًا فَاسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ "
.
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা ‘ঈদের দিন মারওয়ান ঈদের মাঠে মিম্বার স্থাপন করে সলাতের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করায় জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলেন, হে মারওয়ান! তুমি সুন্নাত বিরোধী কাজ করলে। তুমি ‘ঈদের দিন বাইরে মিম্বার এনেছো এবং সলাতের পূর্বেই খুত্ববাহ শুরু করেছো। অথচ ইতিপূর্বে (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খুলাফায়ি রাশিদীনের যুগে) কখনো এমনটি করা হয়নি। আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, লোকটি কে? লোকজন বললো, অমুকের পুত্র অমুক। তিনি বললেন, সে তার দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করেছে। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ কেউ কোন গর্হিত (শারী‘আত বিরোধী) কাজ সংঘটিত হতে দেখলে তাকে হাত দিয়ে প্রতিরোধ করবে। এরূপ করতে অক্ষম হলে তা কথার দ্বারা প্রতিহত করবে। যদি এতেও অক্ষম হয় তাহলে সে তা অন্তরে ঘৃণা করবে (বা তা দূর করার উপায় অন্বেষনে চিন্তা-ভাবনা করবে)। তবে এটি হচ্ছে দুর্বলতম ঈমানের পরিচায়ক।
(মুসলিম , ইবনু মাজাহ হাঃ ১২৭৫, হাঃ ৪০১৩), আহমাদ (৩/১০)
,
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ، وَهَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، قَالَا: حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الْأَعْمَشِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، وَعَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: مَنْ رَأَى مُنْكَرًا فَاسْتَطَاعَ أَنْ يُغَيِّرَهُ بِيَدِهِ فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ - وَقَطَعَ هَنَّادٌ بَقِيَّةَ الْحَدِيثِ، وَفَّاهُ ابْنُ الْعَلَاءِ: - فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ، فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ بِلِسَانِهِ فَبِقَلْبِهِ، وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ কেউ কোনো অন্যায় হতে দেখলে সে তা হাতের সাহায্যে দমন করতে সক্ষম হলে তা দ্বারা যেন প্রতিরোধ করে। ‘‘হান্নাদ’’ এ হাদীসের বাকী অংশ উল্লেখ করেনি। তবে ইবনুল আলা তা পূর্ণ করেছেন। তা হলোঃ যদি হাতের দ্বারা প্রতিরোধ করতে সক্ষম না হয়, তবে জিহ্বা দ্বারা আর যদি জিহ্বা দ্বারা প্রতিরোধ করতে সক্ষম না হলে তবে অন্তর দ্বারা, তবে এটা দুর্বল ঈমানের স্তর।
(আবু দাউদ ৪৩৪০)
,
অন্যায় কারীকে যারা যারা সহায়তা করতেছে,তারাও অন্যায় কারীর মতোই।
তাই তাদেরও পন্য বয়কট করা যেতে পারে।
★★উল্লেখ্য যে ফ্রান্স বা তাদের সমর্থন কারীদের পন্য ক্রয় করা নাজায়েজ নয়,তবে ঈমানের তাগীদে আমরা এসব দেশের পন্য বয়কট করতে পারি।
আমার বাবাকে গালি দিলে আমি গর্জে উঠি। মায়ের চরিত্রে কেউ কালিমা লেপন করলে আমি তার টুটি চেপে ধরি। কিন্তু যার নাম আামার কালিমার অংশ, আমার মুসলমানিত্বের অংশ, আমার ঈমান, যার নাম না বলে কবরে মুক্তি পাব না, যার সুপারিশ ছাড়া হাশরের ভয়াবহ হালাত থেকে মুক্তি পাব না, যার হাতে হাউজে কাউসারের পানি পান না করলে কলজে ফাটা কান্নায় কাতরাবো, সেই মহান নবীকে আজ কতিপয় কুলাঙ্গার ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন বানাচ্ছে,অবমাননা করছে,আপাতত নিজ নিজ অবস্থান থেকে তাদের পন্য তো বয়কট করতেই পারি,এটাই ঈমানের নুন্যতম দাবী।