আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
266 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (21 points)
edited by
আসসালামু আ'লাইকুম

আমি পরামর্শ এর জন্য ব্যক্ত করছি।আমি জেনেরাল পড়ুয়া আর জেনেরাল মুসলিম ফ্যামিলির।বয়স ২৪+।আগে আমার ওয়াসওয়াশার সমস্যা পবিত্রতা নিয়ে ছিল।কিন্তু কাউকে শেয়ার করিনি বা বুঝিনি বলে দিনে দিনে অপবিত্র লাগতো বলে দিনে দিনে ইবাদত কমতে কমতে কুরআন, নামায সব  কমতে লাগতো,ভয় হত অপবিত্র হয়ে কুরআন নামায পড়লে গোনাহ,অনেক সময় হতাশ হতাম।কিন্তু কিছুদিন আগে বিয়ে হয়,তখন তালাক এর মাশয়ালা,বিভিন্ন গ্রুফের মাসয়ালা পড়তে পড়তে ওয়াশওয়াশা বেড়ে গেল।মনে হল এতদিন কিসে ছিলাম এখন সাগরে,,সবচেয়ে বেশি সমস্যা কুফরি শিরকি হয়ে যাচ্ছে না ত! এই চিন্তায় চিন্তায় অস্থির!!অনেক ধরনের খারাপ চিন্তা আসে যা আমি উচ্চারন করতে চাইনা,,সারাদিন মনে হয় আমার কোন ইমান ভেঙ্গে গেল কিনা! বিয়ে ভেঙ্গে গেল কিনা!!আমি নিয়তে অনিচ্ছাকৃত ইচ্ছাকৃত কি আনি মাঝেমধ্যে বুঝিনা।অনিচ্ছাকৃত হলে ত স্থির থাকি কিন্তু কাজের মধ্যই যদি ইচ্ছাকৃত নিয়ত হয়ছে  মত যখন লাগে তখন অস্থির হয়ে যায়,কাজটা ত স্টপ করা যায়না যে নিয়ত ঠিক করব।।সারাদিন ক্ষমা ও কালেমা পাঠ করি।কখনো মন বুঝে আমাকে কবুল করে নিয়েছেন আল্লাহ কখনো মন বুঝেনা তাও বুঝাই।।সবচেয়ে বেশি আমি এখন মনে হয় আরবী উচ্চারন পারিনা তাই আরবী উচ্চারন ও করতে ভয় হয় যদি ভুল উচ্চারন হয়!! সব মিলিয়ে আমি নিরব,আমার খুব খারাপ লাগে কলিজা কাটে,কারো সাথে মিশতে ভাল লাগে না মনে হয় কথা বার্তা বলার সময় যে টাইপের কথা হোল অন্তরে শিরক কুফরি চলে আসলো কিনা!!  সব মিলিয়ে কি বলব কি করব কোন টা করলে কি হবে আমি জটিলতায় ভুগছি।মানসিকভাবে অসুস্থ।।বেশ কয়েকসপ্তাহ ত কি হুশ এ কি হয় বুঝিনা,।কোন সময় কি মানব বুঝিনা।আমি আগে বুঝতাম অনিচ্ছায় কোনটা ইচ্ছায় কোনটা,এখন বুঝিনা,, এসব কিছু মুখেও উচ্চারন করিনা,করতে চাইওনা,, মনে মনে নিয়ত গুলা ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত হয়ে থাকে,,

১/কোন ব্যক্তির শিরক কুফরি মুলক ইচ্ছাকৃত নিয়তে করা কাজ বা কথা যদি অই ব্যক্তি ব্যতীত ( আল্লাহ ত অবশ্যই জানবেন) আর কেউ না বুঝে মানে অন্যরা সেটাকে নরমাল কথা বা কাজের মত মনে করে এতে কি প্রথম ব্যক্তির ইমান চলে গেছে ধর্তব্য হবে??সে মুনাফিক হবে নাকি কাফের?

২/কোন একটা গোনাহের কাজ করলে আমি জানি এটা গোনাহ,যেমন পানি অপচয় করার সময় আমি জানি অপচয় করা গোনাহ,আমি মানি এই বিধান,অপচয় কম করতে চাই,তাও  অপচয় হয়,, কাজটা করার সময় মনে মনে ও বলি "অপচয় করা গোনাহ মানি" যাতে মনে না আসে " অপচয় করা গোনাহ মানিনা"" কিন্তু তাও এক মুহুর্তের জন্য মনে  চলে আসে বা মনে মনে বলি ""অপচয় করা গোনাহ মানিনা",অনিচ্ছাতে আসলে জানি ইমান ভাংবেনা,কিনতু একমুহুর্তের জন্য ইচ্ছাতে বলি কি ইমান ভাংবে ? এরকম যেকোন কাজের বেলায়।আমি কাজের আগে মনকে বুঝায় এই সম্পর্কিত বিধান আমি মানি, যদি মানিনা চলেও আসে তার মানে হবে বিধান স্বিকার করি কিন্ত চলিনা,,কিন্তু তাও যখন কাজ চলমান অবস্থার মাঝখানেই মনে মনে "মানিনা'' চলে আসে,এক্ষেত্রে যদি এক মূহূর্তের জন্য ও ইচ্ছাকৃত  আসে তাহলে ইমান ভেঙ্গে যাবে?? কাজ টা ত মনে মনে "মানিনা" বলার সাথে সাথে স্টপ করা যায়না আর ঠিক পরের মুহুর্তে আমি আবার  মনে মনে বলি "মানি",কিন্তু এক।মুহুর্তের টার জন্য ঈমান থাকবে কিনা থাকবেনা এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা।
৩/ওয়াশওয়াশায় যারা আক্রান্ত তাদের কি অন্তরের নিয়ত ধর্তব্য হবে?ইচ্ছাকৃত নিয়ত কি ধর্তব্য হবে? শরীয়তের দিক থেকে কোন ছাড় আছে যে সুস্ত হওয়া পর্যন্ত অন্তরের ইচ্ছাকৃত  নিয়তের গোনাহ মাফ বা গোনাহ হবে কিন্তু ইমান ভাংবেনা,??

৪/কালেমা তাইয়্যেবাহ পড়লে কি ইমান নবায়ন হবে নাকি কালেমা শাহাদাত উচ্চারন করতে হবে?কালেমা উচ্চারনেও যদি ভুল হয়(হা এর উচ্চারন,) এতেও কি ঈমান নবায়ন হবে?
৫/সারাদিন যদি ইমান নবায়ন বার বার করি তাহলে কি গোসল ও বার বার করতে হবে??
৬/গোনাহরত অবস্থায় ও যদি কালেমা পড়ে এই বিশ্বাসে ( কুরআন হাদিস মেনে নিয়েছি,ঠিক মত চলতে না পারলে গোনাহগার হব শাস্তি পাব,,কিন্তু অমুসলিম হবনা,) তখন ও কি কালেমা পাঠে ইমান নবায়ন হবে?,

৭/ঠিক মত বুঝাতে পারলাম কিনা।।কিন্তু কি করনীয় পরামর্শ দেন।এসব আমার জন্য ট্রমার মত।মানসিক রোগির মত হয়ে যাচ্ছি

৮/আমি যদি মানসিক চাপ নিতে না পেরে বা দুনিয়াবি কাজের কারনে সাথে সাথে তওবা কালেমা পড়তে না পারলে বা মনে মনে পড়তেসি এমন সময় অন্য কারনে স্টপ হয়ে যায় এতে কি শিরক বা গোনাহ হবে??আযানের সময় কালেমা আগে পড়ব নাকি ইমান নবায়ন?

৯/আমি মনে মনে কুচিন্তা গুলার জন্য ক্ষমা ও কালেমা পড়তে গেলে আমার আবার গোনাহ টা মনে পড়ে আবার খারাপ লাগে আবার ক্ষমা চাই,এতে মানসিক চাপ বেড়ে যায়,,,আমি যদি মানসিক চাপ কমাবার জন্য নিয়ত করি কিছুসময় পর ক্ষমা চাইব বা এসব মনে না পড়ার জন্যক্ষমা না চাই এতে কি গোনাহ হবে?

১০/কেউ কাফের হল কি হল না ইমান ভাংলো কি ভাংল না এসব কি প্রকাশ্য কাজের বা কথার জন্য ধর্তব্য হবে? অন্তরের  ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত নিয়তের জন্য ধর্তব্য হবে?

১১/সব মিলিয়ে আমি কি ধরব?? যত কিছু হোক আমি মুসলিম??

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনাকে শয়তান ওয়াসওয়াসা দিচ্ছে। শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বাচতে সর্বদা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন। এবং মনে প্রাণে আল্লাহর কাছে সমস্যা উত্তোরণের জন্য দু'আ করতে থাকুন।আল্লাহ আপনার সহায় হোক।

দ্বিতীয় কথা হল, আপনি তাসাউফ চর্চা করবেন।তথা নেককার লোকের সাথে সম্পর্ক রাখবেন ও তাদের সংস্পর্শকে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করবেন। নেককার লোকের সাথে সম্পর্ক যদি রাখেন, তাহলে আ'মলে বরকত হবে, এবং ধীরে ধীরে এই ওয়াসওয়াসা রোগ দূর হয়ে যাবে।

https://www.ifatwa.info/1037 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
রাসূলুল্লাহ সাঃ কে আল্লাহ তা'আলা ৪ টি বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেছেন।এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।(সূরা-জুমুআহ-২)

রাসূলুল্লাহ সাঃ এর ৪ টি দায়িত্বের একটি দায়িত্ব হল,আত্মসুদ্ধি।এই আত্মসুদ্ধির অপর নাম তাসাউফ।তাসাউফ সম্পর্কে জানতে উপরের লিংকে ক্লিক করুন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১)
অপবিত্রতার ওয়াসওয়াসা শয়তান আপনার মনে ঢুকিয়ে সে আপনাকে ইবাদত থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চাচ্ছে।আপনি কিছুতেই শয়তানকে বিজয়ী হতে দিবেন না।বরং সর্বদাই আ'মল করতে থাকবেন।মনে অপবিত্রতার ওয়াসওয়াসা অাসলেও সেটাকে জায়গা দিবেন না।

আপনার বর্ণিত বিষয়ে কুফরি হবে না।

(২)
এটা দ্বারাও শিরক হবে না।কেননা এটা অনিচ্ছাকৃত।

(৩)
জ্বী, বর্ণিত পরিস্থিতি অনুযায়ী মাফ।কেননা এটা অসুস্থ হালতে পড়বে।

(৪)
কালেমায়ে শাহাদত পড়তে হবে।ভুল হওয়ার ওয়সওয়াসাকে মনের ভিতর জায়গা দিবেন না।

(৫)
না, গোসল করতে হবে না।

(৬)
জ্বী, ঈমান নবায়ন হবে।

(৭)
আপনার প্রতি পরামর্শ হল, আপনি অতিসত্বর একজন আলেমের সাথে সর্বদা চলাফেরা করবেন।অথবা তাবলীগে তিন চিল্লা দিবেন। ইনশা'আল্লাহ সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (21 points)
হুজুর প্রশ্ন ইডিট করছিলাম,, আরো ৩/৪ টা প্রশ্ন আছে,,,দয়া করে উত্তর দিলে উপকার হত

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...