আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,003 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম।
১.https://ifatwa.info/4698/ এই ফতোয়াতে বলা হইছে শরীয়তের বিধান হলো সরকার যদি সরাসরি অকাট্য ভাবে প্রমানীত শরীয়তের আইন বিরোধী কোন আইন জনগণের উপর চাপিয়ে না দেয়,তাহলে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ বিদ্রোহ করা বৈধ নয়। এ হিসেবে বর্তমানে বাংলাদেশের  সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বিদ্রোহ করাও বৈধ হবে না। বাংলাদেশে কি শরিয়তবিরোধী আইন জনগনের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় নি? যেমনঃ

ক. শরীয়তে বিয়ের কোন বয়স নেই কিন্তু দেশের মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ করেছে জোর করে, ১৮ এর নিচে বিয়ে করলে জেল,জরিমানা। এটা শরীয়তবিরোধী আইন নয়?

খ. স্ত্রী স্বামীকে ভিভোর্স দিতে পারবে না কিন্তু দেশের আইনে পারবে। স্বামীর উপর জুলুম।

গ. একটা বিচারকার্য কি শরীয়ত মোতাবেক হয়?

ঘ. স্কুল,কলেজ থেকে পর্দার ফরজ বিধান উঠিয়ে দিয়েছে। পরীক্ষার হলে পুরুষ শিক্ষকরা জোর করে নিকাব খুলাচ্ছে মহিলা থাকা স্বত্বেও। এগুলো শরীয়তবিরোধী নয়?

আরো বহু উদাহরণ রয়েছে তাই এটা ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ নেই। তো বাংলাদেশে শরীয়তের আইন একটাও দৃষ্টিগত নয়।

২. আরেকটি ফতোয়ায় বলা হয়েছে যে কোন দেশে কাফেররা আক্রমণ করলে সে দেশের মুসলিমদের উপর জিহাদ ফরজে আইন, ক্রমান্বয়ে তার পাশ্ববর্তী দেশগুলোর মুসলিমের উপরও ফরজে আইন হবে। তাহলে কাশ্মীরের জিহাদের কারনে বাংলাদেশের মুসলিমদের উপর কি ফরজে আইন হবে না?

https://ifatwa.info/4576/?show=4578#a4578 এই ফতোয়ার শেষের দিকে।

৩. বাড়ির সামনের মসজিদের ইমাম দাড়ি ছাটে, স্টাইল করে দাড়ি রাখে। উপদেশ দিলে রেগে যায়। চুল স্টাইল করে কাটিং দেয়। খেলা দেখে। নামাজে দাঁড়ালে দুই পা সমান্তরাল করে না। বৈঠকে বসলে ডান পা খাড়া করে না। সে হাফেজ কিন্তু নামাজের মাসায়েল নিয়ে তেমন জ্ঞান নেই, তার সামনে কাউকে জানা মাসায়েল বললেও সে বাধা দেওয়ার চেস্টা করে। সে মুলত একটা চাকরী মনে করে নামাজ পড়ায়। আমি অন্য মসজিদে ভালো, দ্বীনদার ইমামের পিছনে নামাজ পড়লে বাড়ির পাশের মসজিদের হক নষ্ট হবে? অনেকে এটা বলছে যে কাছের মসজিদের হক বেশী দুরের মসজিদ থেকে।

1 Answer

0 votes
by (574,320 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(১.২)
সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন ইসলাম পালন করতে যে সমস্ত দ্বীনি ভাই,বোন আটকে যান, যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই,মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস।

দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক।সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব না।চেষ্টা করলেও সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা সামান্য আলোকপাত করে থাকি।

জাযাকাল্লাহ, আপনার প্রশ্নটির জন্য। 

উপরোক্ত প্রশ্নটির ব্যাপারে উলামায় কেরামের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। মতবিরোধপূর্ন প্রশ্নগুলো উত্তর দেওয়ার জন্য স্থান, কাল, পাত্র অনেক কিছু জানার প্রয়োজন হয়। যেটা অনলাইনে জানা সম্ভব নয়। 
তাই এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে যোগাযোগ করলে ভালো হয়।

ইলম অর্জনের জন্য সফর করা জরুরী।তথা কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের পূর্বপুরুষদের রীতি ও নীতি। সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করুন।

আল্লাহ আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরো বাড়িয়ে দিক। আমীন।

প্রত্যেকটা বিষয়ে প্রথমে নিম্নের হাদীসকে লক্ষ্য করবেন।

হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।

ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ 

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)
 
(০৩)
শরীয়তের বিধান হলো নিজের মহল্লার মসজিদে নামাজ পড়া উত্তম। 
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৩/৫৫৫)  
তবে যদি শরয়ী ওযর থাকে,তাহলে দূরের মসজিদে যাওয়া কোনো সমস্যাকর নয়।  

أفضل المساجد مکۃ، ثم المدینۃ، ثم القدس، ثم قبا، ثم الأقدم، ثم الأعظم، ثم الأقرب، (الدر المختار) وفي الشامیۃ: ثم الأقدم أفضل لسبقہ حکمًا إلا إذا کان الحادث أقرب إلی بیتہ؛ فإنہ أفضل حینئذٍ لسبقہ حقیقۃً وحکمًا۔ (شامي / باب ما یفسد الصلاۃ وما یکرہ فیہا، مطلب: في أفضل المساجد ۱؍۶۵۹ کراچی، ۲؍۴۳۲ زکریا) 
যার সারমর্ম হলো নিজের বাড়ির পাশের মসজিদে নামাজ পড়া উত্তম। 
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত ইমামের পিছনে যেহেতু নামাক পড়া মাকরুহে তাহরিমি। 
তাই অন্য মসজিদে যাওয়াই ভালো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
edited
আসসালামু আলাইকুম। 
(১) //শরীয়াহ মোতাবেক বিচার কার্য পরিচালনা হয় না ঠিকই,তবে আল্লাহর দেওয়া অকাট্য ভাবে প্রমানীত কোনো ফরজ বিধানের বিরুদ্ধে কিছু হয়নি।//

"শরীয়াহ মোতাবেক বিচারকার্য পরিচালনা না করে মানবরচিত বিধান দিয়ে ফয়সালা করলে আল্লাহর দেওয়া অকাট্য কোনো বিধান লঙ্ঘন হয় না" এমন একটা নস দেখান।
কিংবা এই বিষয় যা কিনা কোনো ইমামের মাঝে ইখতিলাফ আছে এমন কিছু দলীল দিন।

(২)//কিছু স্কুল,কলেজ থেকে পর্দার ফরজ বিধান উঠিয়ে দিয়েছে। পরীক্ষার হলে পুরুষ শিক্ষকরা জোর করে নিকাব খুলাচ্ছে মহিলা থাকা স্বত্বেও। এগুলো শরীয়তবিরোধী অবশ্যই।
তবে সেটার জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী। 
এক্ষেত্রে সরকার তো কোনো পর্দার বিধান বিরোধী কোনো আইন করেনি //

সরকারের আইন হলো যেসব আইন গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এর বাইরে যতটুকু যাবে ততটুকুই বাতিল,সংবিধানের শুরুতেই আছে।
এখন আইন তৈরির এই মূলনীতি "ইসলামি পদ্ধতি " কিনা তার স্বপক্ষে দলীল উপস্থাপন করুন।এটাই মূখ্য, পর্দা সহ আরো যা কিছু আছে সেসব আইনের  বেসিক রুলস ই এটা,এটার মাপকাঠিতে সব আইন তৈরি করা হয়।এই পদ্ধতি জায়েজ হলে বাকি সব ও জায়েজ। দালিলিক প্রমাণ দিন।

(৩) রশীদ আহমেদ গাঙ্গুহী (রহঃ) ও শাহ মুহাদ্দেসি আজিজ দেহলভী (রহঃ) ;যাদের থেকেই উপমহাদেশে দ্বীনের মেহনত শুরু হয়েছে, তাদের দ্বারা এই হিন্দুস্থান দারুল হারব ফতোয়া দেয়ার পর আজ পর্যন্ত এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যাতে করে সে ফতোয়া পরিবর্তন হয়েছে? 
জানিয়ে উপকৃত করবেন।
আর আমরা কী জমহুর উলামায়ে কেরাম এর অনুসরণ করব না? 

ইমাম জাসসাস (রহঃ)  ইমাম আবু হানিফার মতকে তার যুগের সাথে সাব্যস্ত করে সাহিবাইনের মত কে প্রাধান্য দেন।
ইমাম শাফেয়ি,ইমাম মালেক,ইমাম আহমদ,ইমাম মুহাম্মদ,ইমাম ইউসুফ সহ জমহুর উলামায়ে কেরাম এর মত কেই উলামায়ে কেরাম প্রাধান্য দেন।

বর্তমানে মুসলমানরা,আলেম ওলামারা নিরাপদে আছে কিনা তা পারিপার্শ্বিক খবর রাখে এমন কারো অজানা হওয়ার কথা না।
ইমাম আবু হানিফার মতেই বাংলাদেশে কাফিররা আতঙ্কিত কিনা আর মুসলমানরা নিরাপত্তায় আছে কিনা তা যে কেউ ই বুঝবে।
খিলাফতের সময় যে নিরাপত্তায় ছিলো মুসলমান, আর এখন কেমন নিরাপত্তায় আছে তা বুঝতে খুব কসরত করতে হয় না।আর চারপাশে তো অন্যান্য কুফরি রাষ্ট্র আছেই।

*উম্মাহর কোনো ফকীহ কী "দারুল আমান" নামক নতুন কোনো দারের প্রবক্তা ছিলেন??নাকি এই "দারুল আমান" কে দারুল হারবেরই একটা অবস্থা হিসেবে উল্লেখ করেছেন? 
আরও প্রশ্ন এসে যায়, যে ইমাম আবু হানিফার রেওয়াত এ "দারুল আমান" বলা হচ্ছে তিনি স্বয়ং কোথাও মুসলমানদের আমান ও কাফেরদের খওফ থাকলে এবং কুফরি শাসন ব্যাবস্থা থাকলে সেটাকে কোন দার বলেছেন? ? 
নাকি তিনিও এই দুই দার এর কথাই বলেছেন? হয় দারল ইসলাম, নচেৎ দারুল হারব।

দলীল সহ উত্তর আশা করি।


**আর জিহাদ ফরজে আইন হওয়ার জন্য কী কী শর্ত রয়েছে?  সব গুলোর হাওয়ালা দিলে ভালো হয়।আর গত মুসলিম উম্মাহের যত্তগুলো অঞ্চল হাত ছাড়া হয়ে কাফেরদের হাতে আজ অবধি রয়েছে সেসব অঞ্চলের জন্য আমাদের উপর ফিকহের আলোকে কি দায়িত্ব বর্তায়?
শুধু কাশ্মীর বাদ দিয়ে আরাকান,হিন্দ,স্পেন,সিরিয়া,ফিলিস্তিন, ইরাক এসব অঞ্চলের অবস্থার জন্য আমাদের কী করনীয় আছে কিছু???

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...