আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
151 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (40 points)
edited by
১)সেদিন এমন একটা অবস্থায় পড়েছিলাম যে গার্লফ্রেন্ডকে ছেড়ে না দিলে শিরক হবে । এরপর আমি তাওবা করি।আর থেকে আমি সবসময় সতর্ক থাকি যাতে আল্লাহ আমাকে এমন কোন পরীক্ষায় না ফেলেন যে ওকে ছেড়ে না দিলে শিরক হবে।

এই মনভাব কি শিরক??

২)এবার ইদে আম্মু আমার জন্য সুন্দর একটা পাঞ্জাবি কিনেছিল

আমার খুব পছন্দ। এটা আমি বেশি পরি না।তুলে রাখি।

এই পাঞ্জাবির প্রতি কেমন জানি মায়া কাজ করে,সম্মান কাজ করে।

এটা এলোমেলো হয়ে থাকলে আমার ভালো লাগে না।গুছাই রাখি।

এই মনভাব কি শিরক?

৩)কাল গার্লফ্রেন্ড এর সাথে মেসেঞ্জারে কথা বলছিলাম

এমন সময় এমন অবস্থা হইল যে তাকে একটা কথা বলেছিলাম। সেটা শিরক ছিল। সেটা নিয়ে তাওবা করছিলাম।

এরমধ্যে ও আবার মেসেজ দিচ্ছিল।

আমি তাওবার সময় তারাহুরা করছিলাম,মনে একটা অস্থিরতা কাজ করছিল ওর রিপ্লাই দেওয়ার জন্য।

এটা কি শিরক??

৪)কুরআনের সুরেলা তিলাওয়াত খুব শুনতে ইচ্ছা করছিল।

কোন সাওয়াব এর আশা ছিল না।

মনের খোরাক মিটানোর জন্য শুনছিলাম।

এটা কি শিরক??

৫) নামাযে শারীরিক পরিশ্রম হয়,এই জন্য আমি কেবল  শারীরিক সুস্থতা লাভের জন্যই যদি নামাজ পরি।আবার অনেক সময় মানুষ কে খুশি করার জন্য নামায পরি।

আল্লাহ কে খুশি করার জন্য  না।

তবে কি বড় শিরক হয়??

৬)ধরুন দুটো শিরক করেছি

একটার তাওবা এখনই না করলে দুনিয়াবি ক্ষতির আশংকা আছে ।
আরেক টার এরকম বিষয় নেই।

যেই শিরকের তাওবা না করলে দুনিয়াবি ক্ষতির আশংকা আছে সেটা যায় যদি আমি আগে করি তবে কি শিরক হবে?
তাওবা কবুল হবে বলে আশা করা যায়??

৭)একবার এমন অবস্থায় পরি যে পরাশুনা ছেড়ে না দিলে শিরক হবে । পরে জানতে পারি যে, তাওবা করে নিলে আর পরাশুনা ছেড়ে দেওয়া লাগবে না।
তারপর তাওবা করি আর পরাশুনা চালিয়ে যেতে যাই।

এরপর যখনই কোন শিরক করে ফেলি, তখন চিন্তা করি যে পরাশুনা বাদ দেওয়া লাগবে কি না?

যখন দেখি যে আল্লাহ কে খুশি করার জন্য পরাশুনা ছেড়ে দেওয়া লাগবে না, তখন আমার মনে খুশি লাগে।
আমার মনে খুশি লাগার জন্যই আমি এটা করি

এটা কি শিরক??

৮)একজন ব্যাক্তি দুনিয়াবি ফায়দা লাভ,মানুষকে খুশি করার জন্য মাঝে মধ্যে নফল,সুন্নাহ,আল্লাহ কে সন্তুষ্ট করে এমন কাজ ছেড়ে দেয়।

সে কি মুশরিক বা কাফির হিসেবে গন্য হবে??


৯) আমি আল্লাহ কে ভালো বাসি। আনুগত্য করি।

তিনি আদেশ করেছেন বলেই নবি (সা) কে ভালো বাসি।
যদি আল্লাহ না বলতেন তবে নবি (সা) কে ভালো বাসতাম না।


এই আকিদা ঠিক আছে??

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
https://ifatwa.info/16411/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  
ইসলামে বিবাহ পূর্ব প্রেম স্পষ্ট  হারাম।
হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন-

اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْككَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه

“দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, যবানের ব্যভিচার হল অশোভন উক্তি, হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (মেশকাত ১/৩২)

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 

সুরা বাকারার ১৬৫ নং আয়াতে যাকে ইবাদত করা হয় (উদাহরণ স্বরুপ মূর্তি) উদ্দেশ্য।
কোনো প্রেমিক প্রেমিকা এখানে উদ্দেশ্য নয়।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّتَّخِذُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَنۡدَادًا یُّحِبُّوۡنَہُمۡ کَحُبِّ اللّٰہِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰہِ ؕوَ لَوۡ یَرَی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡۤا اِذۡ یَرَوۡنَ الۡعَذَابَ ۙ اَنَّ الۡقُوَّۃَ لِلّٰہِ جَمِیۡعًا ۙ وَّ اَنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعَذَابِ ﴿۱۶۵﴾

আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে, তারা তাদেরকে ভালবাসে আল্লাহ্র ভালবাসার মতই পক্ষান্তরে যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালবাসে । আর যারা যুলুম করেছে যদি তারা আযাব দেখতে পেত, (তবে তারা নিশ্চিত হত যে,) সমস্ত শক্তি আল্লাহরই। আর নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।

অর্থাৎ কাফেররা আল্লাহকে যেমন ভালবাসে তাদের (মিথ্যা) মা’বুদদেরও তেমন ভালবাসে। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলার ভালবাসা কাফেরদের মনেও ছিল, কিন্তু তা ছিল শির্কযুক্ত। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য নয়।
,
★সুতরাং  অবৈধ প্রেম হারাম হলেও তাহা শিরক নয়। 
,
তবে কিছু ইসলামী স্কলারদের মত হলোঃ   
হারাম-প্রেম অনেক সময় বান্দাহকে শিরকের নিকটবর্তী করে দেয়। কারণ অনেক সময় তারা একে অপরকে এতটাই ভালবাসা শুরু করে দেয় যে প্রকার ভালবাসা পাওয়ার দাবীদার একমাত্র আল্লাহ। 
,
সুতরাং এটি যেহেতু বান্দাহকে শিরকের নিকটবর্তী করে দেয়,তাই যেকোনো ভাবেই হোক,দ্রুত এর থেকে হেফাজত থাকতে হবে। 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত মনোভাব শিরক নয়।

(০২)
পাঞ্জাবির প্রতি এমন মনোভাব শিরক নয়।

(০৩)
এটা শিরক নয়।

(০৪)
শিরক নয়।
এটি প্রশংসনীয়।

(০৫)
এটি শিরক নয়।

(০৬)
এতে শিরক হবেনা।
তওবা কবুল হবে বলে আশা করা যায়।

(০৭)
না,শিরক নয়।

(০৮)
না,সে মুশরিক বা কাফির হিসেবে গন্য হবেনা।

(০৯)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

قُلۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰہَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡکُمُ اللّٰہُ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۳۱﴾ 

বলুন, ‘তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবাস তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করবেন। আল্লাহ্ অত্যান্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(সুরা আল ইমরান ৩১)

আল্লাহ তায়ালা যদি রাসুলুল্লাহ সাঃ কে  মুহাব্বত করতে নিষেধ করতেন,তাহলে নবি সাঃ কে মুহাব্বত করতামনা,এটি ঠিক আছে। 

তবে নিষেধাজ্ঞা না থাকলে অবশ্যই মুহাব্বত করতাম।
কেননা তাকে মুহাব্বত না করলে ঈমান পূর্ণ হবেনা।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...