আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
621 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (19 points)
edited by
দোয়ায়ে ইউনুস ১ লক্ষ ২৫ হাজার বার পড়ার আমলটা তো সুন্নতি আমল না তাই না? আমি যদি এই আমলটা মনে প্রানে এই বিশ্বাস রেখে করি যে এইটা অনলি পরীক্ষিত আমল (সুন্নতি আমল না) তাহলে কি এইটা বিদআত হবে??? আর

 পরীক্ষিত আমল গুলো কে পরীক্ষিত হিসেবে বিশ্বাস করলে কি বিদআত হবে নাকি ঐটাকে সুন্নতি আমল মানলে বিদআত হবে??

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

একটি মূলনীতি জানা থাকলে এ বিষয়গুলো বুঝা খুবই সহজ। এক হল দ্বীন। আরেক হল দুনিয়া।

যে বস্তুর ফলাফল মৃত্যুর পর মানুষ পেতে চায়, তার নাম দ্বীন। আর যে বস্তুর ফলাফল মানুষ মৃত্যুর আগেই পেতে চায়, তাই হল দুনিয়া।

বিদআতের সম্পর্ক হল দ্বীনের সাথে। দুনিয়ার সাথে নয়। তা’ই দুনিয়াবী কোন বস্তুর ক্ষেত্রে বিদআত শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। যেমন চেয়ার টেবিল, কম্পিটউটার ইত্যাদি।

কারণ এসব কোনটিই মৃত্যুর পরের ফলাফলের জন্য কেউ নির্মিত করেনি।

আর যেসব বিষয় দ্বীনী বিষয় নয় বরং দুনিয়াবী বিষয়, সেসব ক্ষেত্রে যদি সরাসরি কুরআনের আয়াত বা হাদীস বিরোধী না পাওয়া যায়, কিংবা শরীয়ত বিরোধী আর কোন কারণ না পাওয়া যায়, তাহলে উক্ত কাজটি বৈধ হবে।

উপরোক্ত মূলনীতিটি ভাল করে অনুধাবন করলে প্রশ্নে উল্লেখিত দোয়ায়ে ইউনুস পড়া, খতমে জালালী, খতমে খাজেগান ইত্যাদির হুকুমও আপনি বের করে নিতে পারবেন।

উপরোক্ত খতমের কোনটিই আখেরাতের ফায়দার জন্য করা হয় না। বরং দুনিয়াবী কোন ফায়দার জন্য করা হয়ে থাকে। যেমন বিপদমুক্তি ইত্যাদি। তাই সরাসরি কুরআনের কোন আয়াত বা হাদীস এসবের বিরোধী পেশ না করতে পারলে এসবের কোনটিকে নাজায়েজ বা হারাম বলার কোন সুযোগ নেই।

★এসব খতমের অবস্থান হল, ডাক্তারদের অভিজ্ঞতালব্দ পথ্যের মত। অভিজ্ঞ ডাক্তারগণ যেমন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বের করেছেন যে, জ্বর হলে প্যারাসিটামল খেলে ভাল হয়, ঠান্ডা লাগলে ওরাডিন ইত্যাদি ঔষধ খেলে ভাল হতে পারে, তেমনি বুযুর্গানে দ্বীন তাদের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে জেনেছেন যে, কিছু কিছু নির্দিষ্ট খতমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু ফায়দা হয়ে থাকে। তাই তারা বুযুর্গানে দ্বীন থেকে বিভিন্ন খতমের প্রমাণ পাওয়া যায়।

এসবই অভিজ্ঞতালব্দ বিষয়। কোনটিই দ্বীনের বিষয় নয়। বা কুরআন ও হাদীস থেকে প্রমাণিত বিষয় নয়। এসবকে কেউ সওয়াবের কাজও মনে করে না। বরং প্রয়োজন পূরণের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকে।

যেমন ডাক্তারের সাজেশন অনুপাতে ঔষধ সেবন। তা’ই ডাক্তারের পরামর্শ অনুপাতে পথ্য সেবন যেমন হারাম ও বিদআত নয়, তেমনি কতিপয় দুনিয়াবী উদ্দেশ্য হাসিলের আশায় বুযুর্গদের অভিজ্ঞতালব্দ উপরোক্ত খতম পড়াও হারাম বা বিদআত নয়।

হ্যাঁ, এসবকে সুন্নত মনে করা, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি মনে করা বিদআত। নতুবা এমনিতে আমল করতে কোন সমস্যা নেই।

রাসুল সাঃ বলেন-
وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.
আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)

অর্থাৎ দ্বীনের নামে যত নতুন জিনিস আসবে তা থেকে বিরত থাকবে। দেখুন, বলা হয়েছে- ‘দ্বীনের নামে যত নতুন জিনিস আসবে।’ কারণ জাগতিক বিষয়ে নতুন নতুন জিনিস আসতে পারে। 

মসজিদের,পাখা,মাইক এগুলো জাগতিক  বিষয়। আর জাগতিক বিষয়ে নীতি হল, যদি শরীয়তবিরোধী না হয়, আপনি তা গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু দ্বীনী বিষয়ে কোনো ‘নতুন’ নেই। এক্ষেত্রে কোনো ‘নতুন’ গ্রহণযোগ্য নয়। নতুন বলতে প্রত্যেক এমন বিষয়, যা শরীয়তের দলীলের মধ্যে মওজুদ নেই। শরীয়তের দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয় এমন কোনো জিনিসকে কেউ দ্বীন ও শরীয়ত বানিয়ে দিবে- এটা হতে পারে না।

 কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ
‘(দ্বীনের নামে) নবউদ্ভাবিত সকল বিষয় থেকে দূরে থাক।’
আরেক হাদীসে আছে-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدّ .
‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত দোয়ায়ে ইউনুস এর বিধানঃ    
এটা অভিজ্ঞতার দ্বারা প্রমাণিত যে, কোন পার্থিব উদ্দেশ্যে এক লক্ষ ২৫ হাজার বার দোয়ায়ে ইউনুস পাঠ করলে এটা বিদআত হবেনা
এটা যেহেতু কুরআন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত কোন বিষয় নয় তাই এটাকে সুন্নাত মনে করে পড়লে বিদআত হবে। বুযুর্গানে দ্বীন ও উলামায়ে কেরামের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে সোয়া লক্ষ বার দুআয়ে ইউনুস পাঠ করে দুআ করা হলে এই ওসীলায় আল্লাহ তাআলা রোগ-ব্যাধি ও বিপদ-আপদ থেকে হেফাজত করেন। তবে এ পদ্ধতিকে  কোন সুন্নাত তরীকা মনে করা যাবে না। 
,


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...