আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
429 views
in সালাত(Prayer) by (3 points)

আসসালামু আলাইকুম। 
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের অংশ হিসেবে জুমু'আর দিন মসজিদে মুসল্লিরা ফাকা হয়ে দাড়ায়।ফলে এলাকার সকল মুসল্লির স্থান সংকুলান হয়না।এর সমাধান হিসেবে ২য় জামাআতের ব্যবস্থা করা হয়েছ।এভাবে ২য় জামাআতে জুমু'আ আদায় করতে কোন সমস্যা আছে কি?

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

মসজিদে জুমআ,অন্যান্য ফরজ নামাজে ২য় জামাতের বিধানঃ
মসজিদ সাধারণতঃ দুই ধরণের। যথা-
স্থানীয় মসজিদ।

চলাচলের রাস্তায়, যানবাহনের স্টপিজ ইত্যাদি স্থানের মসজিদ।

১ম প্রকার মসজিদের বিধান!
স্থানীয় মসজিদগুলোতে যদি তাতে নির্ধারিত ইমাম থাকে, তাহলে স্থানীয় লোকজনের জন্য নিয়মিত দ্বিতীয় তৃতীয় জামাত করে নামায পড়া মাকরূহ। এতে করে মসজিদে প্রথম জামাতের গুরুত্ব কমে যায়।
কিন্তু কখনো কোন দৈব কারণে স্থানীয় কতিপয় নিয়মিত মুসল্লিদের প্রথম জামাত ছুটে যায়, তাহলে তারা প্রথম জামাত যেখানে আদায় হয়েছে, তার চেয়ে একটু সরে এসে দ্বিতীয় জামাত পড়তে পারে। কিন্তু এটাকে কিছুতেই নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করা যাবে না।

কিন্তু উক্ত মসজিদে যদি কোন মুসাফির দল আসেন, কিংবা অন্য এলাকার বেশ কিছু লোকজন আসেন, এসে দেখেন মসজিদের নিয়মিত জামাত হয়ে গেছে, তাহলে তাদের জন্য দ্বিতীয় জামাত করার অনুমতি রয়েছে।

وَيُكْرَهُ تَكْرَارُ الْجَمَاعَةِ بِأَذَانٍ وَإِقَامَةٍ فِي مَسْجِدِ مَحَلَّةٍ لَا فِي مَسْجِدِ طَرِيقٍ أَوْ مَسْجِدٍ لَا إمَامَ لَهُ وَلَا مُؤَذِّنَ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب الامامة-2/288
أَنَّهُ – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ – كَانَ خَرَجَ لِيُصْلِحَ بَيْنَ قَوْمٍ فَعَادَ إلَى الْمَسْجِدِ وَقَدْ صَلَّى أَهْلُ الْمَسْجِدِ فَرَجَعَ إلَى مَنْزِلِهِ فَجَمَعَ أَهْلَهُ وَصَلَّى» وَلَوْ جَازَ ذَلِكَ لَمَا اخْتَارَ الصَّلَاةَ فِي بَيْتِهِ عَلَى الْجَمَاعَةِ فِي الْمَسْجِدِ وَلِأَنَّ فِي الْإِطْلَاقِ هَكَذَا تَقْلِيلُ الْجَمَاعَةِ مَعْنًى، فَإِنَّهُمْ لَا يَجْتَمِعُونَ إذَا عَلِمُوا أَنَّهُمْ لَا تَفُوتُهُمْ.
وَأَمَّا مَسْجِدُ الشَّارِعِ فَالنَّاسُ فِيهِ سَوَاءٌ لَا اخْتِصَاصَ لَهُ بِفَرِيقٍ دُونَ فَرِيقٍ اهـ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب الامامة-2/288
যার সারমর্ম হলো মহল্লার মসজিদ,যেখানে ইমাম মুয়াজ্জিন নির্দিষ্ট আছে,সেখানে  ২য় জামাত করা জায়েজ নেই।      

২য় প্রকার মসজিদের হুকুম

এসব মসজিদে দ্বিতীয় জামাত করাতে কোন সমস্যা নেই।যদিও তাতে নির্ধারিত ইমাম থাকে। যেহেতু এখানে মুসাফির, কিংবা দ্রুত স্থানান্তর হতে হবে এমন যাত্রীগণ থাকেন, তা’ই এসব স্থানে দ্বিতীয় জামাত হওয়াতে কোন সমস্যা নেই।
তবে যদি নির্ধারিত ইমাম না থাকে, তাহলে সর্ব সূরতে দ্বিতীয় জামাত পড়াতে কোন সমস্যা নেই।
এমন মসজিদে জুময়ার ২য় জামাতও জায়েজ  আছে।
(কিতাবুন  নাওয়াজেল ১৭/২৬৪)

وتقلیل الجماعۃ مکروہ بخلاف المساجد التي علی قوارع الطریق؛ لأنہا لیست لہا أہل معروفون فأداء الجماعۃ فیہا مرۃ بعد أخریٰ لایؤدي إلی تقلیل الجماعات۔ (بدائع الصنائع ۱؍۳۸۰ المکتبۃ النعیمیۃ دیوبند) 
যার সারমর্ম হলো  চলাচলের রাস্তায়, যানবাহনের স্টপিজ ইত্যাদি স্থানের মসজিদ গুলোতে ২য় জামাত করা জায়েজ আছে।   

হাদীস শরীফে এসেছে   
’’عن الحسن قال: کان أصحاب رسول الله ﷺ  إذا دخلوا المسجد، وقد صلي فیه، صلوافرادی‘‘. (المصنف لابن أبي شیبة، کتاب الصلاة، باب من قال: یصلون فرادی، ولایجمعون. مؤسسة علوم القرآن جدید ۵/۵۵، رقم:۷۱۸۸)
ছাহাবায়ে কেরামগন যখন মসজিদে প্রবেশ করে দেখতো যে নামাজ হয়ে গেছে,তখন একাকিই নামাজ আদায় করে নিতেন। 
,
অন্য হাদিসে এসেছে 
عن أبي بکرۃ رضي اللّٰہ عنہ أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم أقبل من نواحي المدینۃ یرید الصلاۃ، فوجد الناس قد صلوا، فمال إلی منزلہ فجمع أہلہ فصلی بہم۔ (رواہ الطبراني في الأوسط ۳؍۲۸۴ رقم: ۴۶۰۱، مجمع الزوائد ۲؍۴۵ 
کذا في إعلاء السنن ۴؍۲۶۶ بیروت)
যার সারমর্ম হলো  রাসুল সাঃ একবার মসজিদে এসে দেখলেন যে জামাত হয়ে গেছে,তখন তিনি বাড়িতে চলে গেলেন,তারপর নিজের পরিবার নিয়ে ঘরেই জামাত করে নামাজ আদায় করলেন।

عن عبد الرحمن بن المجبر قال: دخلت مع سالم بن عبد اللّٰہ مسجد الجمعۃ، وقد فرغوا من الصلاۃ، فقالوا: ألا تجمع الصلاۃ؟ فقال سالم: لا تجمع صلاۃ واحدۃ في مسجد واحد مرتین۔ قال ابن وہب: وأخبرني رجال من أہل العلم عن ابن شہاب ویحییٰ بن سعید وربیعۃ واللیث مثلہ، کذا في المدونۃ الکبریٰ لمالک ورجالہ کلہم ثقات۔ (إعلاء السنن ۴؍۲۶۲ رقم: ۱۲۶۰ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
যার সারমর্ম হলো সালেম রাঃ বলেন যে একই মসজিদে ২য় বার জামাত করা যায়না।  
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত "করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের অংশ হিসেবে জুমু'আর দিন মসজিদে মুসল্লিরা ফাকা হয়ে দাড়ায়।ফলে এলাকার সকল মুসল্লির স্থান সংকুলান হয়না।এর সমাধান হিসেবে ২য় জামাআতের ব্যবস্থা করা হয়েছ।এভাবে ২য় জামাআতে জুমু'আ আদায় করা মাকরুহ হবে। 

 "করোনা ভাইরাসের সময়ে মসজিদে ২য় জামাত এর অনুমতি দেওয়া যাবেনা।
প্রশ্নে উল্লেখিত জুমআর ২য় জামাত মসজিদে  করা উচিত হচ্ছেনা,এটা মাকরুহ হচ্ছে।
এটাই দারুল উলুম দেওবন্দ, জামিয়া বিন নুরির ফাতাওয়া।
যেগুলো কমেন্ট বক্সে দেওয়া আছে।
অনেক সমস্যার দিম লক্ষ্য করেই এই ফতোয়া দেওয়া হয়েছে।     
সেই হিসেবে বাড়িতে,বা মসজিদের সীমানার বাহিরে  অন্য কোথাও জুময়ার নামাজের জামাত করা যেতে পারে।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এর কারনে  বাড়িতে ৩/৪ জন একত্রিত হয়ে অন্যকে সেই জায়গায় আসার অনুমতি সাপেক্ষে সেখানে জুময়ার জামাত আদায় করা জায়েজ আছে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (573,660 points)
জামিয়া বিননুরীর ফাতওয়ার লিংক



দারুল উলুম দেওবন্দ এর ফাতওয়ার লিংক



,

ঘরে ইযনে আমের শর্তে জুময়ার নামাজ জায়েজ আছে।

বিন নুরি পাকিস্তান  এর ফাতওয়ার লিংক

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...