আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
720 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (18 points)
আসসালামুআলাইকুম।। আমি আগেও কিছু প্রশ্ন করেছি।।অতি দ্রুত উত্তর পেয়েছি৷ জাযাকাল্লাহ।

আমি আইটি সাবজেক্টে পড়া লেখা করছি ।এই সেক্টরের অধিকাংশ চাকরির সাথেই প্রানীর ছবি জড়িত তাই এ সেক্টরে চাকরি করার আশা বাদ দিছি।আলহামদুলিল্লাহ।
এই সেক্টর বাদ দিয়ে শিক্ষকতা হিসেবে চাকরি করার সুযোগ আছে। আপনাদের ফতোয়ায় দেখলাম বেতন হালাল হলেও সহশিক্ষা ব্যবস্থায় চাকরি না করাই উচিত।
কিন্তু মুফতি সাহেব আমি যদি কোন প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করি।।যেখানে ক্লাস ৫ পর্যন্ত ছেলে মেয়েরা পড়া লেখা করে যারা যথেষ্ট ছোট।যদিও ৫ এর মেয়েরা একটু বড় তবুও ফেতনার আশংকা খুবই কম। যদি তাকওয়ার সাথে প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করতে চাই তাহলে কি করতে পারবো ?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

পর্দার ক্ষেত্রে ক্লাস বিবেচ্য নয়।বরং এক্ষেত্রে বিবেচ্য হল ফিতনার আশংকা না থাকা।যেহেতু সাধারণ প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের মধ্যেই ফিতনা সংগঠিত হয়ে থাকে।তাই শরীয়ত বালিগ ও বালিগা পুরুষ-নারীর জন্য পর্দার বিধান আরোপ করা হয়েছে।যেহেতু ফিতনাই মূল বিবেচ্য বিষয়,তাই মুরাহিক/মুরাহিকা তথা এমন বালক/বালিকা যে,এখনও বালিগ হয়নি,তার সামনেও পর্দা করা ফরয হয়ে যায়।

সুতরাং ক্লাশ ফাইফ,ফোরের ছাত্রীরা যেহেতু সাধারণত  ১০-১১ বছর বয়সী হয়ে থাকে,(কখনো তার চেয়ে বেশি বছরেরও হয়ে থাকে,কম হবেনা) তাই এক্ষেত্রে তারা নাবালেগা যদি হয়,তারপরেও তারা মুরাহিকাহ তথা বালেগাহ হওয়ার নিকটবর্তী। 
তাই তাকওয়ার খাতিরে তাদেরকে না পড়ানোই উত্তম।
কারন তাদের সামনেও পর্দা ফরজ।
তাদের দিকেও দৃষ্টিপাত নাজায়েজ।      

عَنْ ابْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ؛ فَإِنَّمَا  لَكَ الْأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الْآخِرَةُ “

হযরত বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ  হযরত আলী রাঃ কে বলেন, হে আলী! [সহসা] একবার দেখার পর পুনরায় [কোন বেগানা নারীকে] দেখো না। কারণ, তোমার জন্য প্রথমবারে অনুমতি রয়েছে [যখন তা অনিচ্ছায় হয়ে যাবে], কিন্তু দ্বিতীয়বারের অনুমতি নেই। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২৯৭৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৭৫১, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৪৯, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৭৭৭}

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَنْظُرُ إِلَى مَحَاسِنِ امْرَأَةٍ أَوَّلَ مَرَّةٍ، ثُمَّ يَغُضُّ بَصَرَهُ إِلَّا أَحْدَثَ اللهُ لَهُ عِبَادَةً يَجِدُ حَلَاوَتَهَا “

হযরত আবু উমামা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে কোন মুসলমান কোন নারীর সৌন্দর্যের প্রতি হঠাৎ দৃষ্টি পড়ে যায়, অতঃপর সে নিজ চক্ষু নিচু করে নেয়, তবে আল্লাহ তাআলা তার জন্য এক ইবাদতের সুযোগ সৃষ্টি করেন, যাতে সে তার স্বাদ পায়। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২২২৭৮}

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।
فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

আর যদি উক্ত স্কুলের ছাত্র ছাত্রী  সকলেই নাবালেগ নাবালেগা হয়,বা তার নিকটতম বয়সী না হয়,তাহলে ফিতনার আশংকা না থাকলে এমন স্কুলে জায়েজ আছে। 

সেই হিসেবে তাকওয়ার দিক লক্ষ্য করলে ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত যেহেতু সেই বয়সী হয়না,তাই তাদেরকে পড়ানো যাবে।
তার উপরের ক্লাশের ছাত্রীরা সাধারণত মুরাহিকাহ হয়ে থাকে,তাই তাকওয়ার খাতিরে তাদেরকে না পড়ানোই উত্তম।   
 
কোনোভাবেই যদি ৫ম,৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রীরা মুরাহিকাহ না হয়,তাহলে তাদেরকেও পড়াইতে পারবেন,যদি ফিতনার আশংকা না থাকে।তবে এক্ষেত্রে সতর্কতা এবং উত্তম হচ্ছে, ছাত্রীদেরকে  হিজাব পড়ার নির্দেশ দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
জাযাকাল্লাহ।। আসলে এমন একটা যুগে আছি যেখানে প্রায় সবকিছুর সাথেই একটু না একটু সমস্যা বিদ্যমান৷ একটা দোকান করতে গেলেও সেখানে বেপর্দা মহিলারা আসবে। 
এইক্ষেত্রে প্রাইমারি স্কুলে ফিতনার আশংকা অনেক কম।আর ছেলে মেয়েরা সবাই থাকবে সনার বয়স ও এক না।যারা একটু বড় থাকবে তাদের দিকের  একদম প্রয়োজন ব্যতীত দৃষ্টি না দেওয়ার চেষ্টা করবো। তবুও যথেষ্ট  সতর্কতার সাথে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...