আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
134 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসালামুলাইকুম,
আমি একজন পুরুষ (অবিবাহিত)। কিন্তু আমি অতীত জীবনে কিছু গুনাহ করেছি। এখন এই গুনাহ গুলোর কারণে আমি ভালো কাজ করেও শান্তি পাচ্ছি না। সবসময় মাথায় এই চিন্তাগুলো ঘুরপাক খায়।
১) আমি অতীতে জিনা করেছি। কিন্তু তখন এই কাজটি যে জিনা তা আমার জানা ছিল না। কিন্তু কাজটি করার পর আমি অপরাধবোধে ভুগছিলাম এবং আমার এক বন্ধুর সাথে শেয়ার করায় সে বলে এই কাজটা নাকি জিনার অন্তর্ভুক্ত। তারপর আমি ইসলামিক বিভিন্ন বই ও ওয়েবসাইট থেকে রিসার্চ করা শুরু করি এবং আমি এটা বুঝতে পারি যে আমার কাজটা জিনা ছিল। এখন আমি এটাও বুঝতে পারি যে এই কাজের কোনো ক্ষমা নাই। আল্লাহ কি আমার এই গুনাহ মাফ করবেন। অধিকাংশ ব্যাক্তিগণ বলে তওবা করলে এই গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু সেটা আল্লাহর ইচ্ছায়। কিন্তু একজন পাপি ব্যক্তি আল্লাহর প্রিয় হতে পারে না আর আল্লাহ আমার এই গুনাহ মাফ করবে কিনা জানি না।
আমি তওবা কিভাবে করতে হয় সেটাও জানি না।
২) ছোটবেলায় আমি অনেক মানুষের হক নষ্ট করেছি। যেমন কৃষকের ক্ষেতের শস্য ছুরি করা, মানুষের গাছের আম ছুরি করা ইত্যাদি। কিন্তু যখন আমি এই কাজগুলো করতাম তখন জানতাম না যে কাজগুলো মানুষের হক নষ্ট করে। এখন আমি এই পাপ থেকে কিভাবে মুক্তি পাবো। অনেকে বলেন যে, তাদের কাছে গিয়ে মাফ চাও। কিন্তু আমি এমন অনেক মানুষের হক নষ্ট করেছি যাদের আমি নিজের চোখে দেখিনি এমনকি তাদের চিনিও না। আমার এমন অনেকে আছেন যারা মৃত্যুবরণ করেছেন। এখন আমি কিভাবে এসব গুনাহ থেকে মাফ পেতে পারি?
নিজেকে খুব অসহায় মনে হয় মৃত্যুর পরের জীবনে। আল্লাহ ছাড়া সেখানে কেউ নেই। কিন্তু আমি যে পাপ কাজগুলো করেছি সেটা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত নিন্দনীয়। এমনকি কেউ কেউ বলে এসব গোনাহের মাফ নেই। পরকালের শাস্তি সবসময় আমার মাথায় ঘুরপাক খায়। আমি নিজের জিবনে খুব বিষণ্ণতায় ভুগছি। দয়া করে আমাকে সঠিক পথ দেখান।

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে গেলে নিজ পক্ষ্য থেকে বান্দার হককে আদায় করে দিবেন।
যেমন হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,তিনি বলেন,
ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺍﻟﺨﺪﺭﻱ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ - ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ - : " ﻛﺎﻥ ﻓﻲ ﺑﻨﻲ ﺇﺳﺮﺍﺋﻴﻞ ﺭﺟﻞ ﻗﺘﻞ ﺗﺴﻌﺔ ﻭﺗﺴﻌﻴﻦ ﺇﻧﺴﺎﻧﺎ ، ﺛﻢ ﺧﺮﺝ ﻳﺴﺄﻝ ، ﻓﺄﺗﻰ ﺭﺍﻫﺒﺎ ، ﻓﺴﺄﻟﻪ ، ﻓﻘﺎﻝ : ﺃﻟﻪ ﺗﻮﺑﺔ ؟ ﻗﺎﻝ : ﻻ ; ﻓﻘﺘﻠﻪ ، ﻭﺟﻌﻞ ﻳﺴﺄﻝ ، ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺭﺟﻞ : ﺍﺋﺖ ﻗﺮﻳﺔ ﻛﺬﺍ ﻭﻛﺬﺍ ، ﻓﺄﺩﺭﻛﻪ ﺍﻟﻤﻮﺕ ﻓﻨﺎﺀ ﺑﺼﺪﺭﻩ ﻧﺤﻮﻫﺎ ، ﻓﺎﺧﺘﺼﻤﺖ ﻓﻴﻪ ﻣﻼﺋﻜﺔ ﺍﻟﺮﺣﻤﺔ ﻭﻣﻼﺋﻜﺔ ﺍﻟﻌﺬﺍﺏ ، ﻓﺄﻭﺣﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻥ ﺗﻘﺮﺑﻲ ، ﻭﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻥ ﺗﺒﺎﻋﺪﻱ ، ﻓﻘﺎﻝ : ﻗﻴﺴﻮﺍ ﻣﺎ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﻓﻮﺟﺪ ﺇﻟﻰ ﻫﺬﻩ ﺃﻗﺮﺏ ﺑﺸﺒﺮ ﻓﻐﻔﺮ ﻟﻪ " ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, বনি ইসরাঈল গোত্রে একজন ব্যক্তি ছিল,যে নিরানব্বই জনকে হত্যা করেছিল।অতঃপর যখন হেদায়তের নিকটবর্তী হল,তখন সে একজন পাদ্রীর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল তার তাওবাহ কি কবুল হবে?ঐ পাদ্রী উত্তরে বলল,না, তোমার তাওবাহ কবুল হবে না। তখন সে ঐ পাদ্রীকেও হত্যা করে ফেলল।অতঃপর সে তার তাওবাহর কবুল হওয়া না হওয়া সম্পর্কে লোকদেরকে জিজ্ঞেস করতে লাগল।তখন এক ব্যক্তি তাকে বলল, তুমি অমুক গ্রামে যাও সেখানে হয়তো কোনো সমাধান পেতে পারেন। সে ঐ গ্রামের দিকেই যেতে লাগল,তার বুক সেই গ্রামের দিকে থাকাবস্থায় রাস্তায় মধ্যখানে সে মূত্যুমূখে পতিত হল।সে সময় জান কবজের ব্যাপারে রহমতের ফিরিস্তা এবং আযাবের ফিরিস্তিাদের মধ্য ঝগড়া বেধে গেলো।তখনই আল্লাহ তা'আলা তার উদ্দিষ্ট ঐ গ্রামকে নিকটবর্তী হওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করলেন।এবং ছেড়ে আসা গ্রামকে দূরবর্তী হওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করলেন। তারপর আল্লাহ তা'আলা ফিরিস্তাদেরকে জায়গা পরিমাপন করার নির্দেশ দিলেন।জায়গা পরিমাপণ করে দেখা গেল যে, উদ্দিষ্ট গ্রাম ছেড়ে আসা গ্রাম থেকে অর্ধহাত কম।অতঃপর সেই ব্যক্তিকে মাফ করে দেয়া হল।(এবং রহমতের ফিরিস্তা তার জান কবয করল)
(মিশকাত-২৩২৭)

দেখুন, আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে গেলে বান্দার হক পর্যন্ত মাফ করে দিতে পারেন।কেননা যাকে হত্যা করা হয়েছে তার বেঁচে থাকার হক্বকে ধংস করা হয়েছিলো।সুতরাং এটাও একটা বান্দার হক।
কিন্তু এর পরও আল্লাহ তা'আলা মাফ করে দিয়েছেন।এবং হক নষ্ট হয়ে যাওয়া উক্ত বান্দাদিগকে এমন পুরুস্কার দান করবেন যে, তারা আর তাদের হক সম্পর্কে কোনো প্রকার অভিযোগ দায়ের করবে না। বান্দার হক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/641 (শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনি যিনার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান,এবং বান্দার হক নষ্ট করে থাকলে বান্দার কাছে ক্ষমা চান,বান্দাকে না পাইলে অবশেষে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...