জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
অনলাইনে অনেক ধরনের ইনকাম সোর্স রয়েছে,যদি এতে নাজায়েজ এর কোনো কার্যক্রম না থাকে,তাহলে তা নাজায়েজ হবেনা।
,
★অনলাইনে এড দেখার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার বিধানঃ
যদি হালাল উপায়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়, আর কোন নাজায়েজ বিষয় এতে সম্পৃক্ত না থাকে, তাহলে এভাবে অনলাইনে যেকোনো সাইট থেকে টাকা উপার্জন করতে শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই। জায়েজ আছে। [জামিয়া বিন্নুরিয়া করাচি, পাকিস্তান, ফাতওয়া বিভাগ, ফাতওয়া নং-১০৫০৪]
★ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে
وَأَمَّا شَرَائِطُ الصِّحَّةِ فَمِنْهَا رِضَا الْمُتَعَاقِدِينَ. وَمِنْهَا أَنْ يَكُونَ الْمَعْقُودُ عَلَيْهِ وَهُوَ الْمَنْفَعَةُ مَعْلُومًا عِلْمًا يَمْنَعُ الْمُنَازَعَةَ فَإِنْ كَانَ مَجْهُولًا جَهَالَةً مُفْضِيَةً إلَى الْمُنَازَعَةِ يَمْنَعُ صِحَّةَ الْعَقْدِ وَإِلَّا فَلَا. (الفتاوى الهندية، كِتَابُ الْإِجَارَةِ، الْبَابُ الْأَوَّلُ فِي تَفْسِيرِ الْإِجَارَةِ وَرُكْنِهَا الخ-4/411)
যার সারমর্ম হলো মুতায়াকিদাইন (ক্রেতা,বিক্রেতা) উভয়ের সন্তুষ্টি শর্ত।
এবং লাভের অংশ নির্দিষ্ট হতে হবে।
,
★তবে কেহ কেহ এর বিপরিত মত প্রকাশ করেছেন।
তারা বলছেন যে এখানে যারা যারা বিজ্ঞাপন প্রচারের উদ্দেশ্য টাকা দিয়েছেন, তাদের উদ্দেশ্য হলো এর দ্বারা সম্ভাব্য ২০.০০০ কাস্টমার আপনার সাইটে আসবে, আপনার ব্যবসা সম্পর্কে জানবে,আপনার পন্য সেবা গ্রহন করবে ।
কিন্তু আপনার বিজ্ঞাপনে যারা যারা ক্লিক করলো, তাদের আপনার বিজনেস সম্পর্কে কোনো ধারণা, আগ্রহ, বা প্রয়োজন কোনোটাই নাই।
আপনি এতে ক্ষতিগ্রস্থ হলেন।
এই ক্ষতির জন্য কারা দায়ী?
যারা এডস ক্লিকের কাজ করছে,তারা।
সুতরাং সেই ব্যাক্তির ক্ষতির জন্য আপনিও দায়ী।
সুতরাং এটা নাজায়েজ ।
,
★★প্রিয় দ্বীনি ভাই,বোন! যেহেতু এক্ষেত্রে জায়েজ ও নাজায়েজ উভয় হুকুম রয়েছে।
উলামাদের মতবিরোধ রয়েছে,সুতরাং যদিও এটার হুকুম এখন হালকা হয়ে যাবে,তাই এই কাজ করে টাকা উপার্জনের সুযোগ থাকলেও সতর্কতামূলক এহেন কাজ করা থেকে বিরত থাকাই উচিত।
হাদীস শরীফে এসেছে
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، أَنْبَأَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ مُجَالِدٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهُ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " الْحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَ ذَلِكَ أُمُورٌ مُشْتَبِهَاتٌ لاَ يَدْرِي كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ أَمِنَ الْحَلاَلِ هِيَ أَمْ مِنَ الْحَرَامِ فَمَنْ تَرَكَهَا اسْتِبْرَاءً لِدِينِهِ وَعِرْضِهِ فَقَدْ سَلِمَ وَمَنْ وَاقَعَ شَيْئًا مِنْهَا يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَ الْحَرَامَ كَمَا أَنَّهُ مَنْ يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَهُ أَلاَ وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى أَلاَ وَإِنَّ حِمَى اللَّهِ مَحَارِمُهُ " . حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ زَكَرِيَّا بْنِ أَبِي زَائِدَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ بِمَعْنَاهُ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ وَقَدْ رَوَاهُ غَيْرُ وَاحِدٍ عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ .
নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি বলতে শুনেছিঃ হালালও সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট এবং এ দুটির মাঝে অনেক সন্দেহজনক বিষয় আছে। তা হালাল হবে না হারাম হবে সেটা অনেকেই জানে না। যে লোক এই সন্দেহজনক বিষয়গুলো নিজের দ্বীন এবং মান-ইজ্জাতের হিফাযাতের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেবে সে নিরাপদ হল। যে লোক এর কিছুতে লিপ্ত হল তার হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ারও সংশয় থেকে গেল। (উদাহরণস্বরূপ) নিষিদ্ধ এলাকার আশেপাশে যে লোক পশু চড়ায়, তার এতে প্রবেশের ভয় আছে। জেনে রাখ! প্রতিটি সরকারেরই কিছু সংরক্ষিত এলাকা থাকে। সাবধান! আল্লাহ্ তা'আলার সংরক্ষিত এলাকা হল তার হারাম করা বিষয়গুলো'।
- সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৯৮৪),বুখারী, মুসলিম
হান্নাদ ওয়াকী হতে, তিনি যাকারিয়্যা ইবনু আবী যাইদা হতে, তিনি শা'বী হতে, তিনি নুমান ইবনু বাশীর হতে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ অর্থে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। একাধিক বর্ণনাকারী নুমান (রাঃ)-এর সূত্রে একই বিষয়বস্তু সম্বলিত হাদীস বর্ণনা করেছেন।
(তিরমিজি ১২০৫)
,
★অনলাইনে গেইম খেলার কথা প্রশ্নে বলেছেন,এতে কোনো ফায়দা নেই।অযথা কালক্ষেপণ করা ছাড়া তাতে আর কিছুই নেই।সুতরাং এমন খেলার অনুমোদন শরীয়তে নেই।
এবং অর্জিত টাকা ব্যবহারও জায়েয হবে না।বরং সদকাহ করে দিতে হবে।
গেম খেলার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা জায়েজ নয়।
★মোবাইলে গেম খেলার শরয়ী বিধানঃ
এসবগুলোর মাঝে অনেক হারাম জিনিস জড়িত।
বর্তমান স্মার্টফোন,কম্পিউটারের বেশিরভাগ গেমসে আছে প্রাণীর ছবি। এছাড়াও অনেক সময় এই গেমসগুলোতে আরো অনেক মন্দ ও গোনাহর বিষয় যুক্ত থাকে।
যেমন, ১. মিউজিক, গান, বাজনা ও বাদ্যযন্ত্র।
২. বেপর্দা নারীদের নগ্ন ও অশ্লীল ছবি।
৩. কাফেরদেরকে সম্মান করা, তাদের নষ্ট সংস্কৃতিকে প্রচার করে মুসলিম শিশু-কিশোর ও যুবসমাজকে ধ্বংস করা।
৪.কাফেরদের ধর্মীয় শিরকি-কুফুরী বিশ্বাস ও কাফেরদের চিহ্নকে কৌশলে মুসলিমদের মাঝে প্রচার করাসহ আরো বহু মন্দ-বিষয় এসব গেমসে থাকে। সর্বোপরি মোবাইলে গেমস খেলা মানে নিজের অমূল্য সম্পদ সময়কে অপচয় করা এবং অল্প থেকে ধীরে ধীরে এটা নেশায় পরিণত হওয়া।
সুতরাং একজন মুসলিম হিসাবে এ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
আবু হুরাইরা রাযি. বলেন , রাসূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন , من حُسنِ إسلام المرءِ تركُهُ ما لا يعنيه একজন ব্যক্তির ইসলামের পরিপূর্ণতার একটি লক্ষণ হল যে, তার জন্য জরুরী নয় এমন কাজ সে ত্যাগ করে। (জামে তিরমিযী ২২৩৯)
ভিডিও গেম এ অনর্থক খেলার মাঝে শামিল। যেহেতু এর দ্বারা শারিরিক কোন উপকার নেই। অহেতুক সময় নষ্ট করা, তাই এটি অপছন্দনীয়। কিন্তু বর্তমানের ভিডিও গেমগুলোতে নানা ধরণের হারাম মিউজিক থাকে।যা সম্পূর্ণই নাজায়েজ। আর এসব মারামারি দৃশ্যগুলো বাচ্চাদের মন মগজে খুবই খারাপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে। বাচ্চাদের প্রতিহিংসা পরায়ন, প্রতিশোধী মনোভাবাপন্ন বানিয়ে দেয়।
আমাদের ধারণা এসব ভিডিও গেম এবং সিনেমাগুলোর এ্যাকশন দৃশ্যগুলোর কুপ্রভাবে কম বয়সী বাচ্চাদের দ্বারাও বড় বড় অপরাধমূলক কাজ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাই এসব অহেতুক ভিডিও গেম থেকে বিরত রাখাই জরুরী।
وكره كل لهو لقوله عليه الصلاة والسلام كل لهو المسلم حرام إلا ثلاثة: ملابعة اهله، وتأديبه لفرسه، مناضلته بقوسه… ألخ
وقال ابن عابدين- كره كل لهو أى كل لعب وعبث (رد المحتار، كتاب الحظر والإباحة-6/395،
যার সারমর্ম হলো প্রতিটা অনার্থক কাজই মাকরুহ।
,
★রেফার করার মাধ্যমে ইনকাম করার শরয়ী বিধানঃ
যে সমস্ত Apps বা ওয়েবসাইট হালাল উপায়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত করে, আর কোন নাজায়েজ বিষয় এতে সম্পৃক্ত না থাকে, সেখানে রেফার করা জায়েজ।
তার ইনকামও জায়েজ।
,
যে সমস্ত Apps বা ওয়েবসাইট হারাম উপায়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত করে,সেখানে কাউকে রেফার করাও জায়েজ হবেনা।
সেখান থেকে ইনকাম করাও জায়েজ হবেনা।