আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
233 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)
edited by
১)এক বোন বাধ্য হয়ে সহশিক্ষায় পড়ছেন। তার ক্লাসে প্রেজেন্টেশন এর উপরে কিছু নাম্বার আছে। শিক্ষক পুরুষ। ক্লাসে বোর্ডের সামনে গিয়ে প্রেজেন্টেশন দিতে হবে। এখন সেই বোন যদি পরিপূর্ণ পর্দা করে এবং তার কণ্ঠকে নরম না করে প্রেজেন্টেশন দেন তাহলে কি এটা  জায়েজ হবে? প্রেজেন্টেশন না দিলে উনি পরীক্ষায় পাস করতেও পারেন, আবার না ও করতে পারেন। মিডটার্ম, এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, ফাইনাল পরীক্ষা এবং এটেন্ডেন্স এর নাম্বার মিলে রেজাল্ট দেওয়া হয়। উনি যদি বুঝতে পারেন যে, উনি প্রেজেন্টেশন না দিলেও পাস করবেন, কিন্তু রেজাল্ট খারাপ আসতে পারে, তাহলে কি তার জন্য এভাবে প্রেজেন্টেশন দেওয়া জায়েজ আছে?

আসলে উনি একদম সিউর হতে পারছেন না যে উনি পাস করবেন কিনা। ফাইনাল এর আগে প্রেজেন্টেশন হয়। ফাইনাল এ উনি ভালো নাম্বার তুলতে পারবেন কিনা তা তাই বলা যাচ্ছেনা। আবার কখনো মনে হচ্ছে তিনি পাস করতে পারবেন ইন শা আল্লাহ। যেহেতু প্রেজেন্টেশন না দিলে উনার শুধুমাত্র ১০ নাম্বার কাটা যাবে। অন্যান্য পরীক্ষায় উনার রেজাল্ট কেমন হবে সেটা সিউরলি না জানার জন্য কিছুটা সন্দেহে আছেন পাস করা নিয়ে।

২) উনার ক্লাসে ল্যাবরেটরিতে কিছু পরীক্ষা করানো হয়। ছেলে মেয়েরা একটা বড় টেবিলের আশেপাশে দাঁড়িয়ে কাজগুলো করে। যদিও ছেলে-মেয়ে আলাদা গ্রুপে কাজ করার কথা, কিন্তু দেখা যায় যে তারা একই টেবিলে কাজ করছে এবং কথাবার্তা বলছে। তাদের মধ্যে দূরত্ব ও কম (১ ফুট বা তার কম বেশি)। এই অবস্থায় তার কি ওই টেবিল এর কাছে যাওয়া জায়েজ হবে?

৩) ক্লাসে শিক্ষক থাকাকালীন সময়ে কিছুসময় ছেলে-মেয়েরা অপ্রয়োজনীয় কথা বলে একে অপরের সাথে। এই অবস্থায় তার কি সেই ক্লাসরুমে অবস্থান করা জায়েজ হবে?  ক্লাস থেকে উঠে গেলে শিক্ষকের কাছে জবাবদিহি করতে হতে পারে বা সে কিছু পড়া মিস করতে পারে।

৪) ইদানীং প্রায় সব পুরুষকে নিয়ে বাজে চিন্তার ওয়াসওয়াসা আসছে উনার, যা আগে ছিলোনা। এখন উনি যদি বাধ্য হন শিক্ষকের দিকে তাকানোর জন্য, তাহলে কি গুণাহ হবে? উনি যদি নিশ্চিত হন যে, উনি কিছু সময়ের জন্য বাজে চিন্তা কন্ট্রোলে রাখতে পারবেন তাহলে কি উনি কোনো পুরুষের দিকে তাকাতে পারবেন সেই কিছু সময়ের জন্য? তারপর যখন বাজে চিন্তা আসবে তখন চোখ নামিয়ে নিবেন। এমনটা করা কি ঠিক হবে?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন৷ 
    
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

উক্ত আয়াত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে এবং আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
শরীয়তের বিধান মতে পূর্ণ পর্দা মেনে পর্দার আড়ালে থেকে মহিলারা পর পুরুষদের সাথে প্রয়োজনীয় কথা বলতে পারবে।
তবে অপ্রয়োজনে কথা বলতে এবং আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রেজেন্টেশন দেয়া যেহেতু ক্লাশের একটি নিয়ম।
তাই এই নিয়ম যেহেতু পরিপূর্ণ  পর্দা মেইনটেইন করেই নিয়ম মানা যায়,তাই এই নিয়ম মানা যাবে,তবে পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করতে হবে,আওয়াজ যেনো আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে না হয়,সেটির জন্য আপ্রান চেষ্টা করবে।
আওয়াজ আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে না হওয়ার চেষ্টা না করলে গুনাহ হবে।  

হ্যাঁ যদি সেটি ফিতনার কারন হয়,তাহলে সেক্ষেত্রে এভাবে আর প্রেজেন্টেশন দিবেনা। 

(০২)
এভাবে ছেলে মেয়ের কথা বলা শরীয়ত সম্মত নয়।
এটি শরীয়ত বহির্ভূত কাজ।
কেননা এটি প্রয়োজনের আওতায় পড়েনা,কেননা নারী পুরুষ  একই টেবিলে না বসে কাজ করাও সম্ভব।
এথেকে পরিপূর্ণ হেফাজতে থাকতে হবে।

এক ফুট বা তার চেয়ে বেশিকে সমাজে নিরাপদ দুরত্ব বলে,এর চেয়ে কম হলে সেটিকে সমাজে নিরাপদ দুরত্ব বলেনা।

(০৩)
এ সময় তার চুপ থাকতে হবে,চুপ থাকা সম্ভব না হলে বাহিরে অবস্থান করবে।
প্রয়োজনে শিক্ষকের কাছে জবাবদিহি দিবে।
ক্লাশ রুম বেশি দূরে যাবেনা,যাতে পড়া যেনো মিস না হয়।

(০৪)
হ্যাঁ এমনটি করা ঠিক হবে।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...