আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
553 views
in সালাত(Prayer) by (4 points)
জুমুআহ এর পূর্বের ও পরের সুন্নাতগুলা কি সহীহ সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

 ﺑﺴْﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮّﺣْﻤﻦ ﺍﻟﺮّﺣﻴْﻢ

ﺣﺎﻣﺪﺍ ﻭ ﻣﺼﻠﻴﺎ ﻭﻣﺴﻠﻤﺎ

ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﻻَ ﻋِﻠْﻢَ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻋَﻠَّﻤْﺘَﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ

আপনি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে আপনি আমাদিগকে যা শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা।

(২/৩২)

জবাবঃ

সালাতুল জুমুআহ এর পর সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামায হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে এ সম্পর্কে সমস্ত উলামাগণ একমত ।
দলীলঃনবীজী সাঃ এর বাণী,হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﺇﺫﺍ ﺻﻠﻰ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻓﻠﻴﺼﻞ ﺑﻌﺪﻫﺎ ﺃﺭﺑﻊ ﺭﻛﻌﺎﺕ  (ﺻﺤﻴﺢ ﻣﺴﻠﻢ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ » ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ)
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃযখন তোমাদের মধ্যে কেউ জুম্মার নামায পড়বে তখন সে যেন জুম্মার পর চার রাকাত সুন্নাত (মুয়াক্কাদা)নামায পড়ে।(সহীহ মুসলিম- ৮৮১)

হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ : ( ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻛﺎﻥ ﻳﺼﻠﻲ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻓﻲ ﺑﻴﺘﻪ )  
নবীজী সাঃ জুম্মার নামাযের পর নিজ ঘরে দু-রাকাত নামায পড়তেন।(সহীহ বুখারী-৯২৭,সহীহ মুসলিম-৮৮২)
তবে দু-রাকাত না চার রাকাত এ বিষয়ে পরে আলোচনা আসছে......

জুমুআহ এর নামাযের পূর্বে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামায আছে কি না?
এ সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
  1. হানাফি এবং শা'ফেয়ী মাযহাবে জোহরের সুন্নাতের মত জুমুআহ এর ও সুন্নাত রয়েছে।সুন্নাতের রাকাত সংখ্যা ও সময় জোহরের পূর্বের সুন্নাতের মতই।(আল-এখতিয়ার ১/২২২৮,আল-মিনহাজ-১/২১৬)
  2. মালেকি মাযহাব মতে অনুসরণীয় ব্যক্তিবর্গের জন্য জুমুআহ এর প্রথম আযানের সময় মসজিদে যে কোনো প্রকার নামায পড়া মাকরুহ।কেননা জনসাধারণ সেই নামাযকে ওয়াজিব মনে করে নিতে পারে।আর দ্বিতীয় আযানের সময় হারাম।তবে প্রথম আযানের পূর্বে বা ঘরে নফল পড়তে পারবে এতে কোনো অসুবিধা নেই।(আশ-শরহুস সগির-১/৫১১)
  3. হাম্বলী মাযহাবে জুমুআহ এর নামাযের পূর্বে নির্ধারিত কোনো নামায বা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামায বলতে কিছু নেই।তবে চার রাকাত নফল হিসাবে পড়া মুস্তাহাব।(নাইলুল মা'আরিব-১/৭০,আল-কাফি-১/৩০০)

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ "আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " চার মাযহাবে জুমুআহ এর সুন্নাতকে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে,
سنة الجمعة: قال الحنفية والشافعية: تسن الصلاة قبل الجمعة وبعدها، فعند الحنفية: سنةالجمعة القبلية أربع، والسنة البعدية أربع كذلك، وقال الشافعية: أقل السنة ركعتان قبلها وركعتان بعدها، والأكمل أربع قبلها وأربع بعدها لقوله صلى الله عليه وسلم: من كان منكم مصليا بعد الجمعة فليصل أربعا-وقال المالكية والحنابلة: يصلي قبلها دون التقيد بعدد معين، على أن أكثر من قال بصلاة السنة يوم الجمعة حملها على تحية المسجد، ومن كره صلاة السنة يوم الجمعة كرهها لأنها توافق وقت الاستواء غالبا، لكن لو تقدمت أو تأخرت بعد ذلك فلا شيء فيها .
জুমুআহ এর সুন্নাত সমূহঃহানাফি এবং শা'ফেয়ী উলামাগণ বলেনঃজুমুআহ এর নামাযের পূর্বে ও পরে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামায রয়েছে।তবে রাকাত সংখ্যা নির্ধারণে উভয় মাযহাবে ভিন্নতর বিশ্লেষণ রয়েছে।হানাফিগণ জুমুআহ এর পূর্বে ও পরে চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বলে থাকেন।অন্যদিকে শা'ফেয়ীগণ বলেনঃ জুম্মার আগে ও পরে সর্বনিম্ন দু-রাকাত এবং সর্বোচ্ছ চার রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা  রয়েছে।উভয় মাযহাব নিম্নোক্ত হাদীস থেকে যার যার মাযহাব মত ব্যাখ্যা করে থাকেন।মালিকি ও হাম্বলীগণ মনে করেন,জুমুআহ এর পূর্বে রাকাত সংখ্যা নির্ধারণ ও জরুরীকরণ ব্যতীত নামায পড়া যাবে।তারা বলে থাকেন জুমুআহ এর পূর্বে যেখানে নামাযের কথা আসবে সেখানেই সেই নামাযকে তাহিয়্যাতুল মসজিদ মনে করা হবে।আর যারা জুমুআহ এর পূর্বে নামাযকে মাকরুহ মনে করেন তারা এজন্য করে থাকেন যে,সাধারণত এ সময় ইস্তেওয়ায়ে সামছ তথা সূর্য অক্ষরেখার মধ্যখানে অবস্থিত থাকে।তবে যদি সূর্য মধ্যভাগে অবস্থিত হওয়ার পূর্বে বা পরে নামায পড়া হয় তাহলে তা হারাম হবে না।(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাহ-২৫/২৭৮)

হানাফি মাযহাব মতে জুমূআহ এর নামাযের পূর্বে চার রাকাত নামায পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
এ সম্পর্কে দলীল হল;
হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত আছে যে,
وروي عن عبد الله بن مسعود: أنه كان يصلي قبل الجمعة أربعا، وبعدها أربعا.
তিনি জুমুআহ এর পূর্বে ও পরে চার রাকাত নামায পড়তেন।(জামে তিরমিযি-৫২৩নং হাদীসের আলোচনায় বর্ণিত)

প্রকাশ থাকে যে,ইবনে মাসউদ রাযি এর উক্ত আ'মল নবীজী সা এর কাছ থেকে জেনেই করেছেন,কেননা গায়রে মা'ক্বুল(আ'কল গবেষনার উর্ধে কোনো) বিষয়ে কোনো সাহাবীর আ'মল হাদীসের মারফুর হুকমে হয়।তাই বুঝা গেল,হযরত ইবনে মাসউদ রাযি নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে এ বিষয়টা জেনেই করেছেন।এটা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর আ'মল।ইবনে মাসউদ রাযি এর গবেষণা নয় যাতে ভূল ভ্রান্তির সমূহ সম্ভাবনা থাকতে পারে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফ্ফাল আল মুযানি রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﻐﻔﻞ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ( ﺑﻴﻦ ﻛﻞ ﺃﺫﺍﻧﻴﻦ ﺻﻼﺓ، ﻗﺎﻟﻬﺎ ﺛﻼﺛﺎً، ﻭﻗﺎﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﺜﺎﻟﺜﺔ ﻟﻤﻦ ﺷﺎﺀ ) 
ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺻﺤﻴﺢ ﻣﺴﻠﻢ » ﻛﺘﺎﺏ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻤﺴﺎﻓﺮﻳﻦ ﻭﻗﺼﺮﻫﺎ » ﺑﺎﺏ ﺑﻴﻦ ﻛﻞ ﺃﺫﺍﻧﻴﻦ ﺻﻼﺓ
ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻷﺫﺍﻥ » ﺑﺎﺏ ﺑﻴﻦ ﻛﻞ ﺃﺫﺍﻧﻴﻦ ﺻﻼﺓ ﻟﻤﻦ ﺷﺎﺀ
প্রত্যেক দুই আযান তথা আযান ও ঈকামাতের মধ্যকার নামায রয়েছে।তিনি এ কথা তিনবার বললেন।তৃতীয়বার বললেনঃ যার ইচ্ছা সে পড়বে।(সহীহ বুখারী-৬০১)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺍﻟﺰﺑﻴﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻣﺮﻓﻮﻋﺎً : ( ﻣﺎ ﻣﻦ ﺻﻼﺓ ﻣﻔﺮﻭﺿﺔ ﺇﻻ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻳﻬﺎ ﺭﻛﻌﺘﺎﻥ )
নবীজী সাঃ বলেনঃএমন কোনো ফরয নামায নেই যার সামনে বা প্রথমে দু-রাকাত (সুন্নাত/নফল)নামায নেই।(সহীহ ইবনে হিব্বান-২৪৮৮)এই হাদীস এবং তার উপরের হাদীস ব্যাপকতার ধরুণ জুমুআহ এর নামাযকেও শামিল রাখবে।

ইবনে হাজার রাহ বলেনঃ
ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺣﺠﺮ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ : " ﻭﺃﻗﻮﻯ ﻣﺎ ﻳﺘﻤﺴﻚ ﺑﻪ ﻣﻦ ﻣﺸﺮﻭﻋﻴﺔ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻋﻤﻮﻡ ﻣﺎ ﺻﺤﺤﻪ ﺍﺑﻦ ﺣﺒﺎﻥ ﻣﻦ ﺣﺪﻳﺚ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺍﻟﺰﺑﻴﺮ ﻣﺮﻓﻮﻋﺎً : ( ﻣﺎ ﻣﻦ ﺻﻼﺓ ﻣﻔﺮﻭﺿﺔ ﺇﻻ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻳﻬﺎ ﺭﻛﻌﺘﺎﻥ ) ﻓﺘﺢ ﺍﻟﺒﺎﺭﻱ ( 3 351/ ) 
জুম্মার নামাযের পূর্বে দু-রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামায বিষয়ে সবচেয়ে মযবুত দলীল হচ্ছে,ইবনে হিব্বান রাহ কর্তৃক বর্ণিত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাযি এর নিম্নোক্ত হাদীস।"এমন কোনো ফরয নামায নেই যার প্রথমে দু-রাকাত (সুন্নাত/নফল)নামায নেই।ফতহুল বারী-৩/৩৫১--৬০১নং হাদীসের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺮﻛﻊ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﺃﺭﺑﻌﺎً ﻻ ﻳﻔﺼﻞ ﻓﻲ ﺷﻲﺀ ﻣﻨﻬﻤﺎ
নবীজী সাঃ জুম্মার নামাযের পূর্বে চার রাকাত নামায পড়তেন।এবং এই চার রাকাতে সালাম দ্বারা কোনো পৃথকতা করতেন না।(ইবনে মাজা-১১২৯)
এই হাদীসকে মুহাদ্দিসগণ দুর্বল বললেও এ বিষয়ে অনেক সহীহ সাক্ষ্য দেয়ায় তার দুর্বলতা রহিত হয়ে গেছে।

হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত আছে,যে 
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ : ( ﺃﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻳﻄﻴﻞ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻭﻳﺼﻠﻲ ﺑﻌﺪﻫﺎ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻓﻲ ﺑﻴﺘﻪ، ﻭﺣﺪﺙ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻛﺎﻥ ﻳﻔﻌﻞ ﺫﻟﻚ )
ইবনে উমর রাযি জুম্মার নামাযের পূর্বে দীর্ঘ নামায পড়তেন।এবং জুম্মার নামাযের পর নিজ ঘরে দু-রাকাত নামায পড়তেন।এবং তিনি বলতেন যে, নবীজী সাঃ এরকম করতেন।(সুনানে বায়হাক্বী-২/৩৪৯,সহীহ ইবনে হিব্বান-৬/২২০)

হযরত জাবের রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ
ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ :  ﺟﺎﺀ ﺭﺟﻞ ﻭﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺨﻄﺐ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻓﻘﺎﻝ : ﺃﺻﻠﻴﺖ ﻳﺎ ﻓﻼﻥ، ﻗﺎﻝ : ﻻ، ﻗﺎﻝ : ﻗﻢ ﻓﺎﺭﻛﻊ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ  (ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ » ﺑﺎﺏ ﺇﺫﺍ ﺭﺃﻯ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺭﺟﻼ ﺟﺎﺀ ﻭﻫﻮ ﻳﺨﻄﺐ ﺃﻣﺮﻩ ﺃﻥ ﻳﺼﻠﻲ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ
ﺍﻟﻜﺘﺐ » ﺻﺤﻴﺢ ﻣﺴﻠﻢ » ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ » ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺘﺤﻴﺔ ﻭﺍﻹﻣﺎﻡ ﻳﺨﻄﺐ)
একদা এক ছাহাবি মসজিদে আসলেন,এমতাবস্থায় যে,নবীজী সাঃ লোকদের সামনে জুম্মার খুৎবাহ দিচ্ছিলেন।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ ঐ ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমি কি নামায নামায পড়েছ? সে বলল,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ তাৎক্ষণিক তাকে বললেনঃদাড়াও এবং প্রথমে দু-রাকাত নামায পড়ে আসো।(সহীহ বুখারী-৮৮৮সহীহ মুসলিম-৮৭৫)

এই রেওয়ায়াত ইবনে মাজা রাহ উনার কিতাবে হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বিস্তারিত এভাবে বর্ণিত করেন
ﺟﺎﺀ ﺳُﻠﻴﻚ ﺍﻟﻐﻄﻔﺎﻧﻲ ﻭﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺨﻄﺐ، ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺃﺻﻠﻴﺖ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻗﺒﻞ ﺃﻥ ﺗﺠﻲﺀ، ﻗﺎﻝ ﻻ، ﻗﺎﻝ : ﻓﺼﻞِّ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻭﺗﺠﻮﺯ ﻓﻴﻬﻤﺎ
সুলাইক্ব আল-গাথাফানী রাযি মসজিদে আসলেন,এমতাবস্থায় যে রাসূলুল্লাহ সাঃ খুৎবাহ দিচ্ছিলেন,তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমি মসজিদে আসার পূর্বে কি দু-রাকাত নামায পড়েছ।সাহাবী বললেনঃ না।তখন রাসূলুল্লাহ বললেনঃ দু-রাকাত নামায পড়ো।এবং তারাতারি পড়ো।(সুনানে ইবনে মাজা-১১১৪)

উক্ত হাদীসে নবীজী সাঃএর বাণী,”মসজিদে আসার পূর্বে কি নামায পড়েছ?”
তা একথার প্রমাণ বহণ করে যে,উক্ত দু-রাকাত নামায জুমুআহ এর নামায সুন্নাত।তাহিয়্যাতুল মসজিদের নামায নয়।কেননা তাহিয়্যাতুল মসজিদ তো মসজিদে আসার পরই পড়তে হয়।

ﺇﻥ ﻭﻗﺖ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻫﻮ ﻭﻗﺖ ﺻﻼﺓ ﺍﻟﻈﻬﺮ، ﻓﺘﻜﻮﻥ ﺳﻨﺘﻬﺎ ﻛﺴﻨﺔ ﺍﻟﻈﻬﺮ، ﻭﻫﺬﺍ ﻣﺎ ﺟﻌﻞ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﻘﻮﻝ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺤﻪ :  ﺛﻢ ﺫﻛﺮ ﺣﺪﻳﺚ  ﺍﻧﻈﺮ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﺭﻗﻢ : ( 895
জুমুআহ এর নামাযের ওয়াক্ত তো জোহরের নামাযের ওয়াক্তেই হয়ে থাকে।সুতরাং জোহরের সুন্নাতের মত জুমুআহ এর ও সুন্নাত হবে।
দেখুন! ইমাম বুখারী রাহ উনার অমর গ্রন্থ সহীহ বুখারী শরীফে জুমুআহ এর সুন্নাত বর্ণনা করতে যেয়ে শিরোনাম দিয়েছেন
" ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺼﻼﺓ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﻭﻗﺒﻠﻬﺎ "
"জুমুআহ এর পরে ও পূর্বের নামায অধ্যায়"
এবং উক্ত অধ্যায়ের আওতাধীন করে ইবনে উমর রাযি কর্তৃক নিম্নে বর্ণিত জোহরের নামাযের হাদীসটিকেই উল্লেখ করেছেন।তাতে বুঝা গেল জোহরের যেমন যেভাবে সুন্নাত রয়েছে জুমুআহ এর ও সুন্নাত রয়েছে।

হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ :ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻛﺎﻥ ﻳﺼﻠﻲ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﻈﻬﺮ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻭﺑﻌﺪﻫﺎ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ، ﻭﺑﻌﺪ ﺍﻟﻤﻐﺮﺏ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻓﻲ ﺑﻴﺘﻪ ﻭﺑﻌﺪ ﺍﻟﻌﺸﺎﺀ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ، ﻭﻛﺎﻥ ﻻ ﻳﺼﻠﻲ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﺠﻤﻌﺔ ﺣﺘﻰ ﻳﻨﺼﺮﻑ ﻓﻴﺼﻠﻲ ﺭﻛﻌﺘﻴﻦ 
"রাসূলুল্লাহ সাঃ জোহরের পূর্বে ও পরে দু-রাকাত করে নামায পড়তেন।এবং মাগরিবের পর নিজ ঘরে দু-রাকাত নামায পড়তেন।ও এশার পর দু-রাকাত নামায পড়তেন।আর জুম্মার পরে ঘরে ফিরার পূর্বে কোনো নামায পড়তেন না,অতঃপর যখন ঘরে ফিরে আসতেন,তখন দু-রাকাত নামায পড়তেন।(সহীহ বুখারী-৮৯৫)

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা প্রতিয়মান হয় যে, ইমাম বুখারী রাহ জুমুআহ এর নামাযকে জোহরের নামাযের মত মনে করতেন।
ইবনে উমর রাযি জুমুআহ এর পরের সুন্নাত নামাযের আলোচনা করেছেন,কিন্তু পূর্বের নামাযের আলোচনা করেননি।এত্থেকে প্রতিয়মান হয় যে,ইমাম বুখারী মনে করেন যে,জুম্মার পূর্বের নামায তাই যা ইবনে উমর জোহরের পূর্বে বলেছেন।অর্থাৎ জোহরের পূর্বে যেভাবে দু-রাকাত ঠিকতেমনি জুমুআহ এর পূর্বেও দু-রাকাত।এজন্যই তিনি শিরোনাম করেছেন জুমুআহ এর পূর্বের ও পরের নামায।নয়তো শুধুমাত্র "জুমুআহ এর পরের নামায"শিরোনাম করে অধ্যায় রচনা করতেন।

যদিও এখানে দু-রাকাত বর্ণিত হয়েছে কিন্তু অন্যান্য বর্ণনায় চার রাকাত আসায় চার রাকাত কেই গ্রহণযোগ্য মনে করা হয়।

জুমুআহ এর সুন্নাত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীসে বিভিন্ন রকম বর্ণনা এসেছে।কোথাও জুমুআহ এর পূর্বে দু-রাকাত এবং কোথাও চার রাকাত।এবং জুমুআহ এর পরে কোথাও দু-রাকাত আবার কোথাও চার রাকাত সম্ভলিত বর্ণনা ইতিপূর্বে আমাদের সামনে চলে গেছে।
উপরোক্ত পরস্পর বিরোধপূর্ণ বর্ণনা সামনে রেখে আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি যে,
বিজ্ঞ মুহাদ্দিসিনে কেরাম ব্যতীত শুধুমাত্র হাদীসের দিকে তাকিয়ে আ'মল করা কখনো সম্ভবপর হবে না।এজন্যই ইমাম আবু-হানিফা সর্ব প্রথম ইলমে ফিকহের গোড়াপত্তন করেন।

এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হল,কোরআন এবং হাদীসকে সামনে নিয়ে যেই সমস্ত উলামাগণ সারাটা জীবন গবেষনা চালিয়ে গেছেন।তাদের সেই গবেষনা কর্মে মনযোগ দেয়া, সেখান থেকে জানা ও মানা। বিজ্ঞজনের কর্মকৌশলের দিকে মনোনিবেশ করাই সঠিক বিদ্যাণের কাজ ও পরিচয়।
তো আসুন!দেখি ফুকাহায়ে কেরামগণ এ বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আদ্দুরুল মুখতার কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
(ﻭَﺳُﻦَّ) ﻣُﺆَﻛَّﺪًا (ﺃَﺭْﺑَﻊٌ ﻗَﺒْﻞَ اﻟﻈُّﻬْﺮِ ﻭَ) ﺃَﺭْﺑَﻊٌ ﻗَﺒْﻞَ (اﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَ) ﺃَﺭْﺑَﻊٌ (ﺑَﻌْﺪَﻫَﺎ ﺑِﺘَﺴْﻠِﻴﻤَﺔٍ) 
জোহরের পূর্বে চার রাকাত এবং জুম্মা নামাযের পূর্বে এক সালামে চার রাকাত এবং পরেও চার রাকাত নামায পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।

বিদগ্ধ গবেষক আল্লামা ইবনে আবেদিন শামী রাহ উক্ত ইবারতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ
(ধারাবাহিক ইবারত ও তরজমা নিচে উল্লেখ করা হল)
(ﻗَﻮْﻟُﻪُ ﺑِﺘَﺴْﻠِﻴﻤَﺔٍ) ﻟِﻤَﺎ ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ - «ﻛَﺎﻥَ اﻟﻨَّﺒِﻲُّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﻗَﺒْﻞَ اﻟﻈُّﻬْﺮِ ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ، ﻭَﺑَﻌْﺪَﻫَﺎ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ، ﻭَﺑَﻌْﺪَ اﻟْﻤَﻐْﺮِﺏﺛِﻨْﺘَﻴْﻦِ، ﻭَﺑَﻌْﺪَ اﻟْﻌِﺸَﺎءِ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ، ﻭَﻗَﺒْﻞَ اﻟْﻔَﺠْﺮِ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ» ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻭَﺃَﺑُﻮ ﺩَاﻭُﺩ ﻭَاﺑْﻦُ ﺣَﻨْﺒَﻞٍ.
বঙ্গানুবাদঃএক সালামে চার রাকাত পড়তে হবে। কেননা হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে যে,রাসূলুল্লাহ সাঃ জোহরের পূর্বে চার রাকাত এবং পরে দু-রাকাত,আর মাগরিবের ফরযের পর দু-রাকাত ও এশার ফরযের পর দু-রাকাত এবং ফজরের পূর্বে দু-রাকাত নামায পড়েছেন।

ইমাম মুসলিম-ইমাম আবু-দাউদ-ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল-রাহ উক্ত হাদিসকে বর্ণনা করেছেন।
ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺃَﻳُّﻮﺏَ «ﻛَﺎﻥَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ اﻟﻨَّﺒِﻲُّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﺑَﻌْﺪَ اﻟﺰَّﻭَاﻝِ ﺃَﺭْﺑَﻊَ ﺭَﻛَﻌَﺎﺕٍ، ﻓَﻘُﻠْﺖ: ﻣَﺎ ﻫَﺬِﻩِ اﻟﺼَّﻼَﺓُ اﻟَّﺘِﻲ ﺗُﺪَاﻭِﻡُ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ: ﻫَﺬِﻩِ ﺳَﺎﻋَﺔٌ ﺗُﻔْﺘَﺢُ ﺃَﺑْﻮَاﺏُ اﻟﺴَّﻤَﺎءِ ﻓِﻴﻬَﺎ، ﻓَﺄُﺣِﺐُّ ﺃَﻥْ ﻳَﺼْﻌَﺪَ ﻟِﻲ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻋَﻤَﻞٌ ﺻَﺎﻟِﺢٌ، ﻓَﻘُﻠْﺖ: ﺃَﻓِﻲ ﻛُﻠِّﻬِﻦَّ ﻗِﺮَاءَﺓٌ؟ ﻗَﺎﻝَ ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘُﻠْﺖ: ﺑِﺘَﺴْﻠِﻴﻤَﺔٍ ﻭَاﺣِﺪَﺓٍ ﺃَﻡْ ﺑِﺘَﺴْﻠِﻴﻤَﺘَﻴْﻦِ؟ ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺑِﺘَﺴْﻠِﻴﻤَﺔٍ ﻭَاﺣِﺪَﺓٍ»ﺭَﻭَاﻩُ اﻟﻄَّﺤَﺎﻭِﻱُّ ﻭَﺃَﺑُﻮ ﺩَاﻭُﺩ ﻭَاﻟﺘِّﺮْﻣِﺬِﻱُّ ﻭَاﺑْﻦُ ﻣَﺎﺟَﻪْ ﻣِﻦْ ﻏَﻴْﺮِ ﻓَﺼْﻞٍ ﺑَﻴْﻦَ اﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَاﻟﻈُّﻬْﺮِ، ﻓَﻴَﻜُﻮﻥُ ﺳُﻨَّﺔُ ﻛُﻞِّ ﻭَاﺣِﺪَﺓٍ ﻣِﻨْﻬَﺎ ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ.
হযরত আবু আইয়ুব আনছারী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাঃ সূর্য ঢলার পর চার রাকাত নামায পড়েছেন।আবু আইয়ুব আনছারী রাযি বলেনঃআমি জিজ্ঞাসা করলাম হে রাসূলুল্লাহ সাঃ!এটা কোন নামায যা আপনি নিয়মিত পড়েন?রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেনঃএটা এমন এক মূহুর্ত যে সময় আকাশের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়।সুতরাং আমি পচন্দ করি যে ঐ সময় যেন আমার নেক আ'মল আকাশে উত্তোলিত হয়।তখন আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম হে রাসূলুল্লাহ সাঃ!সকল রাকাতে কি ক্বেরাত পড়তে হবে? তিনি উত্তরে বললেনঃহ্যা পড়তে হবে।তখন আমি আবার প্রশ্ন করলাম যে, উক্ত চার রাকাত এক সালামে পড়তে হবে না দু সালামে? তখন প্রতিউত্তরে নবীজী সাঃ বললেনঃ এক সালামে পড়তে হবে।
ইমাম ত্বাহাবী,ইমাম আবু-দাউদ,ইমাম তিরমিযি,ইমাম ইবনে মাজা রাহ(সূর্য ঢলার পর রাসূলুল্লাহ সাঃ এর চার রাকাত নামায কে) জোহর এবং জুম্মার মধ্যে কোনো প্রকার পৃথকতা ব্যতীত বর্ণনা করেছেন।সুতরাং জোহর এবং জুমুআহ-উভয় নামাযের জন্য সুন্নাত নামায চার রাকাত হিসেবে গণ্য হবে।

 ﻭَﺭَﻭَﻯ اﺑْﻦُ ﻣَﺎﺟَﻪْ ﺑِﺈِﺳْﻨَﺎﺩِﻩِ ﻋَﻦْ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ «ﻛَﺎﻥَ اﻟﻨَّﺒِﻲُّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻳَﺮْﻛَﻊُ ﻗَﺒْﻞَ اﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ ﻻَ ﻳَﻔْﺼِﻞُ ﻓِﻲ ﺷَﻲْءٍ ﻣِﻨْﻬُﻦَّ»
ইমাম ইবনে মাজা রাহ হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণনা করেনঃনবীজী সাঃ জুম্মার নামাযের পূর্বে চার রাকাত নামায পড়তেন।এবং এই চার রাকাতে সালাম দ্বারা কোনো পৃথকতা করতেন না অর্থাৎ এক সালামে চার রাকাত পড়তেন।

ﻭَﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺃَﻧَّﻪُ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ «ﻣَﻦْ ﻛَﺎﻥَ ﻣِﻨْﻜُﻢْ ﻣُﺼَﻠِّﻴًﺎ ﺑَﻌْﺪَ اﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻓَﻠْﻴُﺼَﻞِّ ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ» ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﺯَﻳْﻠَﻌِﻲٌّ. ﺯَاﺩَ ﻓِﻲ اﻹِْﻣْﺪَاﺩِ: ﻭَﻟِﻘَﻮْﻟِﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - «ﺇﺫَا ﺻَﻠَّﻴْﺘُﻢْ ﺑَﻌْﺪَ اﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻓَﺼَﻠُّﻮا ﺃَﺭْﺑَﻌًﺎ، ﻓَﺈِﻥْ ﻋَﺠَّﻞَ ﺑِﻚ ﺷَﻲْءٌ ﻓَﺼَﻞِّ ﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ ﻓِﻲ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﻭَﺭَﻛْﻌَﺘَﻴْﻦِ ﺇﺫَا ﺭَﺟَﻌْﺖ» ﺭَﻭَاﻩُ اﻟْﺠَﻤَﺎﻋَﺔُ ﺇﻻَّ اﻟْﺒُﺨَﺎﺭِﻱَّ.
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত যে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি জুমুআহ এর নামাযের পর সুন্নাত পড়বে সে যেন চার রাকাত পড়ে।
ইমাস মুসলিম-ইমাম যায়লায়ী রাহ উক্ত হাদিসকে বর্ণনা করেছেন।
ইমাদাদুল ফাত্তাহ কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে,জুমুআহ এর পরে চার রাকাত এজন্য যে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যখন তোমরা জুমুআহ এর পরে নামায পড়বে তখন তোমরা চার রাকাত পড়বে।যদি তারাহুরা থাকে তাহলে মসজিদে দু-রাকাত পড়বে এবং ঘরে ফিরে এসে আরো দু-রাকাত পড়বে।(বুখারী ব্যতীত প্রায় সকল মুহাদ্দিস উক্ত হাদীস বর্ণনা করেন)(রদ্দুল মুহতার-২/১৩)

  • হাকীমুল উম্মাত থানভী রাহ বলেনঃজুম্মার পূর্বে চার রাকাত সুন্নাত।এবং পরেও চার রাকাত সুন্নাত।(ইমদাদুল ফাতাওয়া-১/৫৩৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...