আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
188 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (31 points)
edited by
মূর্খদের সম্পদ – তর্ক

.

তর্ক মূলত মূর্খদের সম্পদ। আর তর্কের সবচেয়ে বড় শক্তি উচ্চ কন্ঠস্বর। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য যাদের রয়েছে উচ্চকন্ঠ এবং প্রচুর গালাগালি ও অপবাদ দেয়ার ক্ষমতা, তারাই তর্কে নিশ্চিত বিজয়ী। তাই যুক্তিহীন তর্ককে ঝগড়া বলা যায়।

.

হুমায়ূন আহমেদ তার ‘দেয়াল’ উপন্যাসে বিষয়টি চমৎকার ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মূর্খদের সাথে কখনও তর্ক করতে যাবে না। কারণ হলো, মূর্খরা তোমাকে, তাদের পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে এসে, তর্কে’ হারিয়ে দিবে।’

.

হ্যাঁ, মূর্খদের সাথে তর্কে আপনি নিশ্চিত পরাজিত হবেন, কারণ শিক্ষা ও রুচি ঝগড়ুটে হতে দেয়নি আপনাকে। আপনার দ্বারা চিৎকার চেচামেচি করা সম্ভব না, গালাগালিতো নয়ই। সুতরাং তর্কে আপনি নিশ্চিত হারবেন, তবে যুক্তিতে নয়।

.

তর্ক মূলত দুই শ্রেণির মানুষ করেন। এক অশিক্ষিত, যার নাম হলো “ঝগড়া”। দুই শিক্ষিত, যার নাম “সুবিধাবাদ”। দু’টো শ্রেণিই মূর্খ। তবে তৃতীয় আর এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা সদ্য জাতে উঠেছেন, যার নাম “অহংকার”।

.

মহান আল্লাহ বলেছেন: রহমান-এর (আল্লাহর) বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাদের সাথে যখন মূর্খরা কথা বলতে থাকে, তখন তারা বলে, সালাম। (সালাম বলার অর্থ: মুখ ফিরিয়ে নেওয়া ও তর্ক-বিতর্ক ছেড়ে দেওয়া) (সূরা ফুরকান, আয়াত ৬৩)

.

জ্ঞানী যদি মূর্খের মোকাবিলায় পড়ে তবে তার (মূর্খের) নিকট থেকে সম্মানের আশা করা ঠিক নয়। আর কোন মূর্খ যদি জ্ঞানী লোকের মোকাবিলায় জিতে যায়, তবে আশ্চর্যের কিছু নয়। কারণ, পাথরের আঘাতে মুক্তার বিনাশ সহজেই হয়ে থাকে। (শেখ সা’দী)

.

সুতরং তর্কের প্রয়োজন কতটুকু? যদি না তা আপনার চিন্তার প্রতিফলন ঘটায়। অন্যথায় তা আপনার সময় এবং সাধ্যের নিদারুণ অপচয় ছাড়া আর কিছু দিতে পারে?…।

.

একবার গাধা এবং শিয়াল বনের মাঝে ঝগড়া শুরু করলো।

.

গাধা: ঘাসের রং হলুদ!!!

শিয়াল: না! ঘাস সবুজ!!!

.

যখন এই বিতর্ক চরম আকার ধারণ করলো তখন তারা বিচারের জন্য বনের রাজা সিংহের কাছে গেলো। সিংহ শিয়ালকে পূর্ণ একমাস বন্দি রাখার এবং গাধাকে মুক্তি দেয়ার আদেশ দিলো।

.

শিয়াল সিংহকে প্রশ্ন করলো: এটা কি ধরণের ন্যায়বিচার, মহারাজ? ঘাস কি সবুজ নয়?

.

সিংহ উত্তর দিলো: ঘাস অবশ্যই সবুজ… কিন্তু আমি তোকে বন্দি রাখার আদেশ করেছি, কারণ তুই ‘গাধা’র সাথে তর্ক করেছিস…!!!

.

– এটি রুশ দেশের একটি কাল্পনিক গল্প।
সুতরাং সবার সাথে তর্ক করা উচিত নয়।


-সংগৃহিত

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/19877 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻨﻮﻭﻱ ﻓﻲ " ﺷﺮﺡ ﻣﺴﻠﻢ " ( 11/50 ) :
" ﻭﻓﻲ ﺣﺪﻳﺚ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺯﻳﺪٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺟﻮﺍﺯ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻈﺎﻟﻢ " ﺍﻧﺘﻬﻰ .
ﻭﺇﺫﺍ ﺩﻋﺎ ﺍﻟﻤﻈﻠﻮﻡ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻇﻠﻤﻪ ، ﻓﻼ ﻳﺘﻌﺪَّ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻋﺎﺀ ، ﻭﻻ ﻳﺘﺠﺎﻭﺯْ ﻣﺎ ﺷﺮﻋﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻟﻪ .
ইমাম নববী বলেনঃঅত্র হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে যালিমের উপর বদদো'আ করা বৈধ আছে,যখন দো'আয় কোনো প্রকার সীমালঙ্ঘন হবে না,এবং অবৈধ দু'আ হবেনা।
ﻗﺎﻝ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﺍﻟﺒﺼﺮﻱ :
( ﻻ ﻳﺪﻉ ﻋﻠﻴﻪ ، ﻭﻟﻴﻘﻞ : ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺃﻋﻨّﻲ ﻋﻠﻴﻪ ، ﻭﺍﺳﺘﺨﺮﺝ ﺣﻘّﻲ ﻣﻨﻪ ) .
ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔٍ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ( ﻗﺪ ﺃﺭﺧﺺ ﻟﻪ ﺃﻥ ﻳﺪﻋﻮ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﻇﻠﻤﻪ ، ﻣﻦ ﻏﻴﺮ ﺃﻥ ﻳﻌﺘﺪﻱ ﻋﻠﻴﻪ ) ﺍﻧﺘﻬﻰ . " ﺗﻔﺴﻴﺮ ﺍﺑﻦ ﻛﺜﻴﺮ " ( 1/572 )
ইমাম হাসান বসরী রাহ বলেনঃমাযলুম যালিমের উপর কখনো বদদু'আ করবেনা,বরং সে বলবেঃহে আল্লাহ তার কাছে থেকে আমার হক্বকে ফিরিয়ে দাও,কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায়,তিনি বলেনঃতার জন্য অনুমতি রয়েছে, সে যালিমের বিপক্ষে সীমালঙ্ঘন ব্যতীত দু'আ করতে পারবে,(তাফসিরে ইবনে ক্বাসির, ১/৫৭২)
এই সমস্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায় যালিমের বিপক্ষে দু'আ করা ও আল্লাহ তা'আলা কর্তৃক যুলুম এর  প্রতিশোধের অপেক্ষা করা বৈধ আছে,এতে কোনো প্রকার গোনাহ হবেনা।তবে সর্বাবস্থায় ক্ষমা করে দেয়াই উত্তম চরিত্রের বৈশিষ্ট্য।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
স্বামী অন্যায়ভাবে তালাক দিলে, স্ত্রীর যদি লা'নত বা অভিশাপ দেয়, তাহলে এর অর্থ হল, সে আল্লাহর কাছে বিচার চাচ্ছে।এরজন্য স্ত্রীর কোনো গোনাহ হবে না।আর স্ত্রীর দোষে তালাক দিলে, স্ত্রীর জন্য তাৎক্ষণিক ক্ষমা চাওয়া এবং যাকে অভিশাপ দেয়া হয়েছে, তার জন্য কল্যাণের দোয়া করা জরুরী। কাফফারা আসবে না।শুধুমাত্র অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইলেই হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।
by (31 points)
Jazakallah khair

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...