আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
278 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (55 points)
edited by
মুফতি ওলি উল্লাহ হুজুরকে প্রশ্ন। আসসালামু আলাইকুম হুজুর।  আমি অপেক্ষা করে আছি কিছুদিন থেকে আপনার থেকে কিছু বিষয় জানার জন্য।  আমি প্রচন্ড ওয়াসওয়াসায় ভোগছি অনেকদিন থেকে। আমি ঠিক মত ঘুমাতে পারিনা। আমার স্বামী আমাকে কিছু কথা বলেছিক সেগুলোঈ আমার অশান্তির কারন। সে আমাকে কিছু কথার মাধ্যমে তা++ এর অধিকার দিয়েছে। এখন আমি প্রতি সেকেন্ডে টেনশনে থাকি কখন কি বলে ফেলি। আমাকে সাহায্য করুন। আমি জানতে চাই নিচের ঘটনা গুলোর কারণে আমি কয় তা++ এর অধিকার পাব??

১। কাবিন নামার ১৮ নং কলামে হ্যাঁ লিখা থাকলে,, এবং ওইসব শর্ত না পাওয়া গেলে যদি স্ত্রী ভুল করে বা ওয়াসওয়াসার জন্য  মুখে তা++ গ্রহণ এর মত কিছু বলে ফেলে তাহলেও কি তাদের তা++ হয়ে যায়? নাকি শর্ত পাওয়া যেতে হবে??

২।কোন মহিলার স্বামী যদি তাকে বলে যে,"" তা*** তুমি দিলেও হবে আমি দিলেও হবে, তুমি পেপার সিগ্নেচার করে পাঠিয়ে দিও। আমিও সিগ্নেচার করে দিব নে।"" এইভাবে বলার ফলে ওই স্ত্রী কয় তা** দেওয়ার অধিকার পাবে?? যদি স্বামীর মনে কোন সংখ্যা না থেকে থাকে।

 সে বলেছে তার মন থেকে অধিকার দেওয়ার ইচ্ছা ছিল না বা কোন সংখ্যা ছিল না। স্ত্রী পরবর্তীতে জিজ্ঞেস করে তুমি ওইদিন কয় তা++ এর অধিকার দিয়েছিলে? সে বলে ১ তা++ এর ও অধিকার দেইনি। আমি রাগ করে বলেছিলাম।

৩ । ১ম প্রশ্নের ঘটনার পর  আরেকদিন স্বামী বলে, " অধিকার তো দিয়েই দিয়েছি,  ভালো না লাগলে চলে যেও। এইখানে সে বলে থাকতে পারে সে মন থেকে বা সত্যি সত্যি অধিকার দিয়েছে।" এইখানে সে তা** শব্দটি উচ্চারণ করেনি,,তাহলে  এই কথার মাধ্যমে স্ত্রী আবার তা++ এর অধিকার পাবে??স্বামীর মনে কোন সংখ্যা ছিল না। আর সে বর্তমানে বলছে তার অধিকার দেওয়ার ইচ্ছা ও ছিল না মন থেকে। তাহলে এইভাবে কথা বলার কারনে স্ত্রী কি আবার তালা* এর অধিকার পাবে??

৪। উপরের ২ টি ঘটনা ২ দিন ঘটেছে। স্বামী যদি ১ম দিনের ঘটনা মনে না করে ২য় দিন বলে থাকে যে অধিকার তো দিয়েই দিয়েছি। ভালো না লাগলে চলে যেও। এইভাবে বললে কি স্ত্রী ২য় দিনেও আবার অধিকার পাবে? নাকি টোটাল ১ তা** এর মালিক থাকবে স্ত্রী?

৫। মহিলার কাবিন নামার ১৮ নং কলামেও হ্যাঁ লিখা থাকলে, এবং পরবর্তীতে স্বামী এইভাবে মৌখিক অধিকার দিলে মহিলা টোটাল  কয় তা++ এর মালিক হবে??
৬। উপরের ২ নাম্বার প্রশ্ন এর ঘটনার দিন  মহিলা বলেছিল """ আমি যদি এত খারাপই হই আমাকে তা*** দিয়ে দেও। তার পর তার স্বামী সেই কথায় খুবই কষ্ট পায় আর বলে ছিঃ এই কথাটা বলতে পারলা তুমি??

কিছুক্ষন পর সে অভিমানে বলে,  তা++ এর কথা বললা না?? তালা+ তো তুমি দিলেও হবে,, আমি দিলেও হবে,,, তাহলে তুমিই দিয়ে দিও। পেপার সিগ্নেচার করে পাঠিয়ে দিও আমিও সিগ্নেচার করে দিব নে। """
এইভাবে বলার ফলে কি সেই অধিকার শুধুমাত্র ওই মজলিসে সীমাবদ্ধ থাকবে? নাকি আজীবনের জন্য মহিলা অধিকার পেয়ে যাবে??

৭. হুজুর অপরাধ নিবেন না। আপনি এরকম বিষয়ে প্রশ্ন করায় আমাকে বলেছিলেন মহিলা ১ তা++ এর মালিক হবে টোটাল।  কিন্তু মুফতি ইমদাদুল হক হুজুর বললেন সে নাকি ৩ তা++ এর মালিক হবে। এই কথা জানার পর থেকে মহিলা প্রতি সেকেন্ড অশান্তিতে থাকে,,  সে ভাবে সে বার বার কিছু বলে কখন জানি তার সংসার চিরতরে হা*ম করে দেয়।  নিচে ওই প্রশ্নের লিংক টা দেওয়া হলো৷
https://ifatwa.info/45503/

৮। হুজুর আজকে আপনি আমায় সাহায্য করুন। মহিলা যদি সঠিক জিনিস টা জানতে পারে যে তার শুধু ১ তা++ এর অধিকার আছে তাহলে বার বার ওয়াসওয়াসা আসলেও সে ভয় পাবে না। সে এই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে উদ্ধার করতে পারবে।

1 Answer

0 votes
by (559,410 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

إذا وجد الشرط انحلت الیمین۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵، کذا في الہدایۃ / باب الأیمان في الطلاق ۲؍۳۵۸، البحر الرائق / باب التعلیق ۴؍۸ کوئٹہ)
সারমর্মঃ
যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে। 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
তালাককে শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে শর্ত পাওয়া গেলেই বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।

ألفاظ الشرط إن … ومتی ومتی ما ففي ہٰذہٖ الألفاظ إذا وجد الشرط انحلت الیمین وانتہت؛ لأنہا لا تقتضي العموم والتکرار، فبوجود الفعل مرۃ تم الشرط وانحلت الیمین فلا یتحقق الحنث بعدہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵) 
সারমর্মঃ
শর্তের কিছু বাক্য আছে,যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে এবং শেষ হয়ে যাবে।
সেই শর্ত অনুপাতে হুকুম ফিরে আসবেনা।
কেননা এটি বারংবার কে চায়না।  

আরো জানুনঃ  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কাবিননামার ১৮ নং ধারাতে যেহেতু শর্ত স্বাপেক্ষে স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দেয়া হয়েছে,তাই শর্ত পাওয়া না গেলে স্ত্রী নিজেকে নিজে তালাক দিতে পারবেনা।

তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো তালাক হবেনা। 

(০২)
এক তালাকের অধিকার পাবে।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

(০৩)
আবার নতুন করে তালাকের অধিকার পাবেনা।
আগের সেই এক তালাকেরই অধিকার পাবে।

(০৪)
স্ত্রী টোটাল এক তালাকের মালিক থাকবে। 

(০৫)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী এক তালাকের অধিকার পাবে।

তবে স্বামী যদি একাধিক তালাকের ক্ষমতা দেয়ার নিয়ত করে,তাহলে স্ত্রী একাধিক তালাকের ক্ষমতা পাবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত স্বামীর যেহেতু একাধিক তালাকের ক্ষমতা প্রদানের নিয়ত ছিলোনা,তাই স্ত্রী এক তালাকেরই অধিকার পাবে। 
      
(০৬)
প্রশ্নে উল্লেখিত মহিলা আজীবনের জন্য তালাকের ক্ষমতা পাবে।

(০৭)
সার্বিক দিক বিবেচনা করে স্বামীর কথা ও তার নিয়ত দেখে কোনো ভাবেই একের অধিক তালাক দেয়ার ক্ষমতা প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে দেখছিনা।

তাই স্ত্রী এক তালাকের অধিকার পাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...