আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,429 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।

এক প্রসিদ্ধ বক্তা বলেছেন জান্নাতের নিয়ামত নিয়ে বলছিলেন। আল্লাহ্ প্রথমে জিজ্ঞেস  করবেন কে কে দুনিয়ায় গান  শুনে নি। তখন যারা শুনে নি তারা আনন্দিত হয়ে জানাবে।এরপর আল্লাহর আদেশে প্রথমে হূররা গান করবে। তারপর হযরত দাউদ আলাইহিসসালাম গান করবেন। তারপর আমাদের নবীজী (ﷺ) গান করবেন। তারপর আল্লাহ্ গান করবেন।

শুনে অস্বস্থি লাগায় একটু সার্চ দিয়ে দেখলাম অনেকে বলেছেন হূররা গান করবে, হযরত দাউদ আলাইহিসসালাম কুরআন তেলাওয়াত করবেন। এরপর মহানবী (ﷺ) কুরআন তেলাওয়াত করবেন। সর্বশেষে আল্লাহ্ কুরআন তেলাওয়াত করবেন।

কোনটা বিশ্বাস করবো বুঝতে পারছি না। দয়াকরে এমন কোনো সঠিক বর্ণনা থাকলে জানান। জাযাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)

ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।


জবাবঃ-
যে ব্যক্তি দুনিয়াতে গান শুনবে,সে আখেরাতে গান শুনবে না মর্মে যেসব হাদীস বর্ণিত রয়েছে,সেগুলোর অধিকাংশই দুর্বল বা যঈফ।সেসব হাদীস সমূহের একটি হল,
( من لها بالغناء ، لم يؤذن له أن يسمع صوت الروحانيين يوم القيامة . قيل : وما الروحانيون ؟ قال : قراء أهل الجنة )
যে ব্যক্তি দুনিয়াতে গান করবে,কিয়ামতের তাকে রুহানীদের মঞ্চে ডাকা হবে না।রাসূলুল্লাহ সাঃ কে রুহানীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে,তিনি জবাবে বললেন,জান্নাতের ক্বারী সাহেবগণ।ইমাম ওয়াকিদি উনার তাফসীর গ্রন্থে (৩/৪৪১) তা উল্লেখ করেন।
উক্ত হাদীসের সনদে হাম্মাদ ইবনে আমর নামীয় এক ব্যক্তি রয়েছেন,যার দরুণ মুহাদ্দিসিনে কেরাম উক্ত হাদীসকে যঈফ বলে থাকেন।(সিলসিলাতুয-যঈফা-৬৫১৬)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এটা নিশ্চিতরূপে বলা যাবে না যে,যে ব্যক্তি দুনিয়াতে গান শুনবে,সে আখেরাতে গান শুনবে না।কেননা এ সম্পর্কীয় যে হাদীস প্রচলিত রয়েছে,সেটা যঈফ।তবে এটা অবশ্যই নিশ্চিত যে,দুনিয়াতে কেউ কোনো হারাম জিনিষের স্বাদ গ্রহণ করলে,আখেরাতে সেই জিনিষকে সে হারাবে।যেমন,দুনিয়াতে কেউ রেশম পরিধান করলে আখারাতে সে রেশম পরিধান করতে পারবে না।ইত্যাদি ইত্যাদি।


জান্নাতের হুররা গজল বা সংগিত উপস্থাপনা করবে, এটা অবশ্যই ঠিক।
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ فِي الجَنَّةِ لَمُجْتَمَعًا لِلْحُورِ العِينِ يُرَفِّعْنَ بِأَصْوَاتٍ لَمْ يَسْمَعِ الخَلاَئِقُ مِثْلَهَا، قَالَ: يَقُلْنَ: نَحْنُ الخَالِدَاتُ فَلاَ نَبِيدُ، وَنَحْنُ النَّاعِمَاتُ فَلاَ نَبْأَسُ، وَنَحْنُ الرَّاضِيَاتُ فَلاَ نَسْخَطُ، طُوبَى لِمَنْ كَانَ لَنَا وَكُنَّا لَهُ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে আয়াতলোচনা হুরদের সমবেত হওয়ার একটি জায়গা রয়েছে। তারা সেখানে এমন সুরেলা আওয়াজে গান গাইবে, যেমন আওয়াজ কোন মাখলূক ইতিপূর্বে কখনো শুনেনি। তারা এই বলে গান গাইবেঃ আমরা তো চিরঙ্গিনী, আমাদের ধ্বংস নেই। আমরা তো আনন্দ-উল্লাসের জন্যই, দুঃখ-কষ্ট নেই আমাদের। আমরা চির সন্তুষ্ট, আমরা কখনো অসন্তুষ্ট হব না। তাদের কতই না সৌভাগ্য যাদের জন্য আমরা এবং আমাদের জন্য যারা।(সুনানু তিরমিযি-২৫৬৪)

তবে আল্লাহ তা'আলা এবং হযরত দাউদ আঃ বা হযরত মুহাম্মাদ সাঃ যে কুরআন তেলাওয়াত করবেন,সেটা কোনো বিশুদ্ধ রেওয়াত দ্বারা বর্ণিত হয়নি।বা তারা সংগিত গাইবেন,এমন কোনো বর্ণনা নেই।কেননা এগুলো গায়েবের সংবাদ।আর গায়েবের সংবাদ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ-ই জানে না।
তবে অস্পষ্ট কিছু বর্ণনা দ্বারা জান্নাতে কুরআন তেলাওয়াতের কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়,সেগুলো দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় না যে,নির্দিষ্টকরে কোনো নবী কোনো সূরাকে তেলাওয়াত করবেন।(হাদীল আরাওয়াহ ইলা বিলাদিল আফরাহ-ইবনুল কাইয়্যিম-১/৫৪৩)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...