ওয়া
আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
যে ব্যক্তি দুনিয়াতে গান শুনবে,সে আখেরাতে গান শুনবে না মর্মে যেসব হাদীস বর্ণিত রয়েছে,সেগুলোর অধিকাংশই দুর্বল বা যঈফ।সেসব হাদীস সমূহের একটি হল,
( من لها بالغناء ، لم يؤذن له أن يسمع صوت الروحانيين يوم القيامة . قيل : وما الروحانيون ؟ قال : قراء أهل الجنة )
যে ব্যক্তি দুনিয়াতে গান করবে,কিয়ামতের তাকে রুহানীদের মঞ্চে ডাকা হবে না।রাসূলুল্লাহ সাঃ কে রুহানীদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে,তিনি জবাবে বললেন,জান্নাতের ক্বারী সাহেবগণ।ইমাম ওয়াকিদি উনার তাফসীর গ্রন্থে (৩/৪৪১) তা উল্লেখ করেন।
উক্ত হাদীসের সনদে হাম্মাদ ইবনে আমর নামীয় এক ব্যক্তি রয়েছেন,যার দরুণ মুহাদ্দিসিনে কেরাম উক্ত হাদীসকে যঈফ বলে থাকেন।(সিলসিলাতুয-যঈফা-৬৫১৬)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এটা নিশ্চিতরূপে বলা যাবে না যে,যে ব্যক্তি দুনিয়াতে গান শুনবে,সে আখেরাতে গান শুনবে না।কেননা এ সম্পর্কীয় যে হাদীস প্রচলিত রয়েছে,সেটা যঈফ।তবে এটা অবশ্যই নিশ্চিত যে,দুনিয়াতে কেউ কোনো হারাম জিনিষের স্বাদ গ্রহণ করলে,আখেরাতে সেই জিনিষকে সে হারাবে।যেমন,দুনিয়াতে কেউ রেশম পরিধান করলে আখারাতে সে রেশম পরিধান করতে পারবে না।ইত্যাদি ইত্যাদি।
জান্নাতের হুররা গজল বা সংগিত উপস্থাপনা করবে, এটা অবশ্যই ঠিক।
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
عَنْ عَلِيٍّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ فِي الجَنَّةِ لَمُجْتَمَعًا لِلْحُورِ العِينِ يُرَفِّعْنَ بِأَصْوَاتٍ لَمْ يَسْمَعِ الخَلاَئِقُ مِثْلَهَا، قَالَ: يَقُلْنَ: نَحْنُ الخَالِدَاتُ فَلاَ نَبِيدُ، وَنَحْنُ النَّاعِمَاتُ فَلاَ نَبْأَسُ، وَنَحْنُ الرَّاضِيَاتُ فَلاَ نَسْخَطُ، طُوبَى لِمَنْ كَانَ لَنَا وَكُنَّا لَهُ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাতে আয়াতলোচনা হুরদের সমবেত হওয়ার একটি জায়গা রয়েছে। তারা সেখানে এমন সুরেলা আওয়াজে গান গাইবে, যেমন আওয়াজ কোন মাখলূক ইতিপূর্বে কখনো শুনেনি। তারা এই বলে গান গাইবেঃ আমরা তো চিরঙ্গিনী, আমাদের ধ্বংস নেই। আমরা তো আনন্দ-উল্লাসের জন্যই, দুঃখ-কষ্ট নেই আমাদের। আমরা চির সন্তুষ্ট, আমরা কখনো অসন্তুষ্ট হব না। তাদের কতই না সৌভাগ্য যাদের জন্য আমরা এবং আমাদের জন্য যারা।(সুনানু তিরমিযি-২৫৬৪)
তবে আল্লাহ তা'আলা এবং হযরত দাউদ আঃ বা হযরত মুহাম্মাদ সাঃ যে কুরআন তেলাওয়াত করবেন,সেটা কোনো বিশুদ্ধ রেওয়াত দ্বারা বর্ণিত হয়নি।বা তারা সংগিত গাইবেন,এমন কোনো বর্ণনা নেই।কেননা এগুলো গায়েবের সংবাদ।আর গায়েবের সংবাদ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ-ই জানে না।
তবে অস্পষ্ট কিছু বর্ণনা দ্বারা জান্নাতে কুরআন তেলাওয়াতের কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়,সেগুলো দ্বারা এটা প্রমাণিত হয় না যে,নির্দিষ্টকরে কোনো নবী কোনো সূরাকে তেলাওয়াত করবেন।(হাদীল আরাওয়াহ ইলা বিলাদিল আফরাহ-ইবনুল কাইয়্যিম-১/৫৪৩)