আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,439 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by
closed
মাগরিবের সালাতের পর সূরা ওয়াক্বিয়াহ পড়লে ঘরে অভাব প্রবেশ করে না - এই হাদিসটি কি সহীহ? এক জায়গায় পড়েছিলাম, হাদিসটি য্বয়ীফ বা দুর্বল। সেক্ষেত্রে কি এর ওপর নিয়মিতভাবে আমল করা ঠিক হবে?
closed

1 Answer

0 votes
by (709,640 points)
 
Best answer
বিসমিহি তা'আলা

জবাবঃ-

সূরা ওয়াকেয়া সম্পর্কে নিম্নোক্ত হাদীস বর্ণিত রয়েছে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ـ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ـ ﻳﻘﻮﻝ : " ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﻮﺍﻗﻌﺔ ﻛﻞ ﻟﻴﻠﺔ ﻟﻢ ﺗﺼﺒﻪ ﻓﺎﻗﺔ ﺃﺑﺪًﺍ "

তরজমাঃ- তিনি বলেন, নবীজী ﷺ বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক রাতে সূরা ওয়াকেয়া তিলাওয়াত করবে; সে কখনও অভাব-অনটনে পতিত হবেনা।’ (শু‘আবুল ঈমান, হাদীস নং-২৪৯৯)

সূরা ওয়াক্বেয়ার ফযিলত সম্পন্ন হাদীস সহীহ না যঈফ? এ সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণের নিকট মতপার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

মুহাদ্দিস মুনাওয়ী রাহ বলেন,

ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻤﻨﺎﻭﻱ ﻓﻲ ﻓﻴﺾ ﺍﻟﻘﺪﻳﺮ:

ﻣﺎ ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻲ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ﻣﻦ ﻗﺮﺃ ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﻮﺍﻗﻌﺔ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻟﻴﻠﺔ ﻟﻢ ﺗﺼﺒﻪ ﻓﺎﻗﺔ ﺃﺑﺪﺍً . ﻭﻫﻮ ﺣﺪﻳﺚ ﺿﻌﻴﻒ،
ইমাম বায়হাক্বী যে হাদীস ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণনা করেছেন,সেটা যঈফ।(ফয়যুল ক্বাদির)

সৌদিআরবের 'হাই'আতু কিবারিল উলামা' এর সদস্য সালেহ বিন ফাওযান লিখেন........

সূরা ওয়াক্বেয়া এর ফযিলত সম্পর্কে বিশুদ্ধ হাদীস রয়েছে,এ বিষয়ে তাফসিরে ইবনে ক্বাসির দেখতে পারেন,(তাফসিরে ইবনে কাসির-৪/৩৮৩)

ইবনে আসাকির হযরত ইবনে আব্বাস রাযি এর সূত্রে সহীহ সনদে বর্ণনা করেন যে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,সূরায়ে ওয়াক্বেয়া হল ধনরত্নের সূরা।সুতরাং তোমরা তা পাঠ করো এবং তোমরা তোমাদের সন্তানাদিকে তা শিক্ষা দাও।

(ফাতহুল কাদ্বীর-৫/১৪৬)

এভাবে সূরায়ে ওয়াক্বেয়া সম্পর্কে আরো বর্ণিত রয়েছে যে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা তোমাদের স্ত্রীদেরকে সূরায়ে ওয়াক্বেয়া শিক্ষা দাও,কেননা এটা ধনরত্নের সূরা।(ফাতহুল ক্বাদীর-৫/১৪৬)

এসব বিশুদ্ধ বর্ণনা নিঃসন্দেহে সূরায়ে ওয়াক্বেয়ার ফযিলতের উপর প্রমাণ করে।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!

সূরা ওয়াক্বেয়ার ফযিলত সম্পন্ন হাদীস সম্পর্কে উলামায়ে কিরামের মতবিরোধ রয়েছে।অধিকাংশই  যঈফ বলেছেন।কেউ কেউ সহীহ বলেছেন।

যদি ধরে নেয়া হয় যে,সূরা ওয়াক্বেয়া সম্পর্কে বর্ণিত সকল হাদীস যঈফ।তাহলে বলা হবে,যে কেউ-ই তো মাওযু বলেননি।সবাই যঈফ বলেছেন।তথা এটা হাদীস রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বানী ঠিকই কিন্তু আমরা পর্যন্ত পৌছতে সনদে কিছুটা সমস্যা হয়ে গেছে।সে হিসেবে এটা যঈফ।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!

ফযিলত বিষয়ে যঈফ হাদীসের উপরও আ'মল করা যায়,যেমন বর্ণিত রয়েছে,

ইমাম আহমাদ সহ অন্যান্য মুহাদ্দিসীনে কেরাম বলেন-

ﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﺷﺪﺩﻧﺎ ﻭﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻔﻀﺎﺋﻞ ﻭﻧﺤﻮﻫﺎ ﺗﺴﺎﻫﻠﻨﺎ

অর্থঃ যখন আমরা হালাল – হারামে রেওয়ায়েত করি (সনদে খুব) কড়াকড়ি করি। আর যখন ফযীলাত ইত্যাদির ক্ষেত্রে রেওয়ায়েত করি শিথিলতা করি।

(হাফেয সুয়ূতী, তাদরীবুর রাবী ১/২৯৮)

মোল্লা আলী কারী (রহঃ) বলেন,

যঈফ হাদীস ফাযায়েলে আমালে গ্রহণযোগ্য  (আলমাউজূআত, মোল্যা কারী, পৃঃ ৭৩)

তাই সূরায়ে ওয়াক্বেয়ার উপর আ'মল করা যাবে।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

উত্তর লিখনে

মুফতী ইমদাদুল হক

ইফতা বিভাগ, IOM.

পরিচালক

ইসলামিক রিচার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
জাযাকুমুল্লাহ খায়রান

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 109 views
...