আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in পবিত্রতা (Purity) by (66 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
১। একজন ব্যক্তি ওজু করে ঘুমাতে যায়। ঘুমের মধ্যে প্রস্রাবের বেগ আসায় বাথরুমে যেতে হয়। প্রশ্ন হচ্ছে যেহেতু প্রস্রাব করায় ওজু ভেঙ্গে যায় তাই আবার ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে কি তাকে পুনরায় ওজু করতে হবে? যদি ওজু না করে তবে কি ঘুমের মধ্যে মারা গেলে জাহান্নামী হবে?

২। শুনেছি সালাতের মধ্যে মুচকি হাসি দিলে সালাত ভঙ্গ হয় না। কিন্তু কেউ যদি শব্দ করে হেসে ফেলে তবে কি তাকে আবার প্রথম থেকে সালাত শুরু করতে হবে নাকি যেখানে হাসি এসেছিল সেখান থেকেই শুরু করা লাগবে?

৩। একজন নারীর হায়েজ সেরে যায় ফজরের আগে। তার ঘুম ভাঙ্গে ভোর ৫ টায়, ফজরের শেষ সময় ছিল ৫ঃ১২। এ সময় তিনি ভাবলেন ১২ মিনিটে তো গোসল সম্পন্ন হবে না। ফজরের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে ফরজ গোসল শেষ না হলে ফজরের সালাত আদায় করতে হয় না এরকম নিয়মকে মাথায় রেখে তিনি আর সে সময় ফরজ গোসল করলেন না। পরে গোসল করে নিলেন ও যোহরের সালাত আদায় করলেন। তার ঐ ফজরের সালাত কি কাজা করতে হবে?

৪। ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, স্ট্রোক, হার্ট এটাক, মাইগ্রেন পেইন, জরায়ু ও ডিম্বাশয়ে সিসট, বন্ধ্যাত্ব, প্রস্রাব-পায়খানার সমস্যা  ইত্যাদি জটিল ও দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে কি আমল ও দুয়া করতে হবে? কালোজিরা ও মধু খাওয়া বাদে কি আর কোন শরয়ী আমল আছে যা দ্বারা এ সমস্ত রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়?

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِذَا أَتَيْتَ مَضْجَعَكَ فَتَوَضَّأْ وُضُوءَكَ لِلصَّلاَةِ، ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلَى شِقِّكَ الأَيْمَنِ، ثُمَّ قُلِ اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، اللَّهُمَّ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ. فَإِنْ مُتَّ مِنْ لَيْلَتِكَ فَأَنْتَ عَلَى الْفِطْرَةِ، وَاجْعَلْهُنَّ آخِرَ مَا تَتَكَلَّمُ بِهِ "

মুহাম্মদ ইবনু মুকতিল (রহঃ)... বারা ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন সালাত এর অযুর মতো অযু করে নেবে। তারপর ডান পার্শ্বে শুয়ে বলবেঃ “হে আল্লাহ্! আমার জীবন আপনার কাছে সমর্পণ করলাম। আমার সকল কাজ আপনার কাছে সোপর্দ করলাম এবং আমি আপনার আশ্রয় গ্রহণ করলাম, আপনার প্রতি আগ্রহ ও ভয় নিয়ে। আপনি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল ও নাজাতের স্থান নেই। হে আল্লাহ্! আমি ঈমান আনলাম আপনার নাযিলকৃত কিতাবের উপর এবং আপনার প্রেরিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম র উপর। ” তারপর যদি সে রাতেই তোমার মৃত্যু হয় তবে ফিতরাতে ইসলামের উপর তোমার মৃত্যু হবে। এ কথাগুলি তোমার শেষ কথা বনিয়ে নাও। 
(বুখারী ২৪৫)

★ইসলামী স্কলারগন বলেছেনঃ
ঘুমানোর পূর্বে অজু করার পর পরবর্তীতে কোন কারণে বিছানা ছেড়ে উঠতে হলে বা টয়লেট যাওয়ার প্রয়োজন হলে বারবার অযু করার প্রয়োজন নেই। প্রথম ওযুই যথেষ্ট ইনশাআল্লাহ।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
অযু না করে ঘুমালে সেই ঘুমের মধ্যে মারা গেলে জাহান্নামে যেতে হবে,এমন কথা কোথাও নেই। 

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে জাহান্নামে যাওয়ার প্রশ্ন উঠবেনা।

(০২)
যদি এতে আশেপাশের মানুষও হাসির আওয়াজ পায়,তাহলে  অযু করে এসে পুনরায় শুরু থেকে নামাজ আদায় করতে হবে।

আর যদি সেই হাসির আওয়াজ শুধু সেই শুনতে পায়,তাহলে অযু করতে হবেনা।
পুনরায় নতুন করে উক্ত নামাজ আদায় করতে হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
مصنف عبد الرزاق الصنعاني (2/ 376):
"عن معمر، عن قتادة، عن أبي العالية الرياحي: أن رجلًا أعمى تردى في بئر والنبي صلى الله عليه وسلم يصلي بأصحابه، فضحك بعض من كان يصلي مع النبي صلى الله عليه وسلم، فأمر النبي صلى الله عليه وسلم: «من ضحك منكم فليعد الصلاة»".
সারমর্মঃ এক অন্ধ ব্যাক্তির কুপে পড়ে যাওয়ার উপক্রম দেখে নামাজে কিছু ছাহাবী হেসেছিলো,রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন যে যারা হেসেছে,তারা যেনো নামাজ আবার আদায় করে। 

আরো জানুনঃ

(০৩)
হ্যাঁ, তার সেই ফজরের সালাত কাজা আদায় করতে হবে।

(০৪)
কিছু দোয়া উল্লেখ করা হলোঃ-

اَللهم إنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ البَرَصِ، وَالجُنُونِ، وَالجُذَامِ، وَسَيِّيءِ الأَسْقَامِ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাসি; ওয়াল জুনুনি; ওয়াল ঝুজামি; ওয়া সাইয়্যিয়িল আসক্বাম।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি অবশ্যই তোমার কাছে ধবল, উন্মাদ, কুষ্ঠরোগ এবং সব ধরণের কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (আবু দাউদ, নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ, রিয়াদুস সালেহিন)

للَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ مُنْكَرَاتِ الأَخْلاَقِ وَالأَعْمَالِ وَالأَهْوَاءِ وَ الْاَدْوَاءِ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন মুনকারাতিল আখলাক্বি ওয়াল আ’মালি ওয়াল আহওয়ায়ি, ওয়াল আদওয়ায়ি।’

অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি তোমার কাছে খারাপ (নষ্ট-বাজে) চরিত্র, অন্যায় কাজ ও কুপ্রবৃত্তির অনিষ্টতা এবং বাজে অসুস্থতা ও নতুন সৃষ্ট রোগ বালাই থেকে আশ্রয় চাই।’ (তিরমিজি)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 117 views
...