بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
সুস্থতা ও অসুস্থতা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তাতে আনুগত্য ও
নাফরমানির কোনো সম্পর্ক নেই। নবী-রাসূলরাও অসুস্থ হয়েছেন। যারা ছিলেন সব মাখলুকের
সেরা। রাসুলুল্লাহ (সা.) সব পয়গম্বরের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। তিনিও কয়েকবার অসুস্থ হয়েছেন।
তাঁকেও অসুস্থতার কষ্ট বরদাশত করতে হয়েছে। এটি আবশ্যক নয় যে অসুস্থতা আল্লাহর
শাস্তি ও তাঁর অসন্তুষ্টির দলিল। অসুস্থতা আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষাস্বরূপ হতে
পারে। মুমিনের জন্য তার গুনাহর কাফফারাও হতে পারে।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘সত্যের নিকটবর্তী থাকো এবং
সরল-সোজা পথ অবলম্বন করো। মুমিনের যে কষ্টই হোক না কেন, এমনকি তার গায়ে যদি কোনো কাঁটা বিঁধে বা সে কোনো বিপদে পতিত
হয়—সব কিছুই তার গুনাহর কাফফারা হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩০৩৮) অসুস্থতা দ্বারা মুমিন বান্দার স্তর উন্নত
হয়। অসুস্থতাকে অশুভ নিদর্শন হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে
বর্ণিত,
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ
যার মঙ্গল চান তাকে দুঃখ-কষ্টে ফেলেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪৫)
সুস্থতা আল্লাহর নেয়ামত। আবার অসুস্থতার মাধ্যমে মুমিনদের পাপ মোচন হয়।
সুস্থতার জন্য আল্লাহর দরবারে যেমন দোয়া করা উচিৎ তেমনি অসুস্থ হলেও তা থেকে পানাহ
পাওয়ার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করা উচিৎ।
রোগ থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভের দোয়া:
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ
الْبَاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شَافِيَ إِلاَّ أَنْتَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ
سَقَمًا
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বান-নাসি মুজহিবাল বা’সি, ইশফি
আনতাশ-শাফি, লা শাফি ইল্লা আনতা শিফায়ান লা য়ুগাদিরু
সুকমা।
অর্থ: হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী।
আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী; আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই। এমন আরোগ্য দিন যেন কোনো
রোগ অবশিষ্ট না থাকে।
হাদিসে এসেছে, আনাস বিন মালিক (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিদের ঝাড়-ফুঁক
করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৭৪২)
তবে ইসলামে আহার্য ও পানীয় বস্তুতে ফুঁ দিতে নিষেধ করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা
করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন—রাসূলুল্লাহ (সা.)
পানপাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে ও তার মধ্যে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৮৬)
মধু ও কালোজিরা ইত্যাদি বিভিন্ন খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করে রোগ প্রতিরোধ
ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তার (মৌমাছির)
উদর থেকে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয় (মধু), যাতে মানুষের
জন্য রয়েছে আরোগ্য।’ (সূরা : নাহল, আয়াত : ৬৯)
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসূলুল্লাহ
(সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘কালোজিরার মধ্যে মৃত্যু ছাড়া অন্য
সব রোগের আরোগ্য রয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫২৮৬)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নেল্লিখিত রোগ থেকে মুক্তির জন্য উপরে উল্লেখিত আমলগুলি
করলে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে দ্রুত সুস্থ করবেন বলে আশা রাখি। পাশাপাশি ভালো যোগ্যতা
সম্পূর্ণ দ্বীনদার কোন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষুধ সেবন করতে থাকবেন। ইনশাআল্লাহ
রব্বুল আলামীন আপনাকে পূর্ণ সুস্থতার নিয়ামত নসীব করুন।