আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
271 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম
শায়খ,অনেক সমস্যায় ভুগছি তাই লজ্জা না রেখে বিস্তারিত তোলে ধরলাম। দয়া করে মনোযোগ দিয়ে পড়ে সমাধান দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।এই প্রশ্নটা আরো দুইবার করেছি কিন্তু এখন বর্ননাটা পরিবর্তন করেছি কারণ নতুন কিছু মনে পড়েছে।দয়া করে বিস্তারিত পড়ে উত্তর প্রদান করলে উপকৃত হতাম।
১.বিষয়টা হচ্ছে,  আমরা হারাম রিলেশনে জড়িত ছিলাম।পরে যখন বুঝতে পারলাম যে এই রিলেশন হারাম। তখন ভাবলাম কিভাবে হালাল করা যায়।পরিবারও মানবে না কারণ আমরা দুজনই স্টোডেন্ট।পরে এক আলেমের ফেসবুক পোস্টে দেখতে পেলাম যে ২ জন বন্ধুকে সাক্ষী রেখে নাকি বিয়ে করা যায়। অবিভাবকের অনুমতি না নিলেও চলে।তাই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলাম।সব কিছু ঠিকঠাক এ চলছিল দুজন দুজনের বাড়িতে থাকি।
২.আমি এবং আমার স্ত্রী বিয়ের পর রেষ্টুরেন্টে প্রায়ই দেখা করতাম। রেষ্টুরেন্টের কেবিনে বসতাম দু'জন।এখানে অন্য কেউ আসত না।ওয়েটার মাঝে মধ্যে এসে খাবার দিয়ে যেত এর মাঝে দীর্ঘ বিরতি থাকত প্রায় ১ ঘন্টা ২ ঘন্টা পর ওয়েটার আসতো।কেবিনটি ছিল তিন দিক ঘেরাও করা আর এক দিক খোলা অর্থাৎ কেবিনটি ছিল ছোট ঘরের মত কিন্তু দরজা নেই আশ-পাশ দিয়ে কেউ গেলে দেখা যায় না। কেবিনের ভিতর মাঝে মধ্যে আবছা আলো-অন্ধকার করে রাখতাম।তবে চাইলেই কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে । কিন্তু কেউ আসে নি,ওয়েটার আসত মাঝে মধ্যে । আর কেবিনের মধ্যে সুধু চেয়ার আর টেবিল ছিল বসার জন্য।খাট পালংক কিছুই ছিল না।এর মাঝে সহবাস করা তো সম্ভব না।কিন্তু আমাদের মধ্যে একে অপরকে স্পর্শ করা, জড়িয়ে ধরা বা বিভিন্ন গোপন অঙ্গ দেখা বা স্পর্শ করা এসব হয়েছে। আবার উত্তেজনা বসত আমার স্ত্রীর শরিরের সাথে লজ্জাস্থান ঘসে বীর্যপাত ঘটাই।তবে দুজনই কাপর পরা অবস্থায় ছিলাম।কাপরের উপর দিয়েই ওর লজ্জাস্থানের উপর আমার লজ্জাস্থান ঘসতাম।তবে আমাদের পূর্ণ সহবাস হয়নি অর্থাৎ আমার লজ্জাস্থান ওর লজ্জাস্থানে প্রবেশ করেনি।বিয়ের পর প্রায় এক বছর এভাবেই কাটে।

৩.আরেকটি বিষয় হচ্ছে,কেনায়া তালাক সম্পর্কে আগে জানা ছিল না। কিছু দিন আগে জেনেছি।আমি মাঝে মধ্যে রাগ করে তালাকের নিয়তে কেনায়া বাক্য বলতাম।

৪.বিয়ের প্রায় এক বছর পর, একদিন ঝগরা করতে করতে রাগের মাথায় এক তালাক,দুই তালাক, তিন তালাক এভাবে বলে ফেলি।
আমি তো অনেক বার কেনায়া বাক্য বলেছি আবার বিয়ের প্রায় এক বছর পর এক তালাক,দুই তালাক,তিন তালাক বলে ফেলেছি।এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের মধ্যে কয় তালাক হয়েছে? আমরা যদি আবার নতুন মোহর ধরে আবার বিয়ে করি তাহলে কি আমারা আবার সংসার করতে পারবো?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/44418 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
وَكَذَا لَوْ خَلَا بِهَا فِي بَيْتٍ مِنْ دَارٍ وَلِلْبَيْتِ بَابٌ مَفْتُوحٌ فِي الدَّارِ إذَا أَرَادَ أَنْ يَدْخُلَ عَلَيْهِمَا غَيْرُهُمَا مِنْ الْمَحَارِمِ أَوْ الْأَجَانِبِ يَدْخُلُ؛ لَا تَصِحُّ الْخَلْوَةُ، كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ-
যদি নববধূ এব বর বাসা/বাড়ির এমন কোনো রুমে অবস্থান করে,যেই রুমের দরজা খুলা থাকে, যেই চাইলে তাতে প্রবেশ করতে পারবে।তাহলে এমতাবস্থায় খালওয়াতে সহীহা হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩০৬)

https://www.ifatwa.info/1457 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
إذا طلق الرجل امرأته ثلاثا قبل الدخول بها وقعن عليها فإن فرق الطلاق بانت بالأولى ولم تقع الثانية والثالثة
যদি কেউ তার স্ত্রীকে সহবাসের পূর্বে তিন তালাক দিয়ে দেয়,তাহলে তিন তালাকই তার উপর পতিত হবে।আর যদি বিচ্ছিন্ন ভাবে এক এক করে তিন তালাক দেয়,তাহলে প্রথম তালাক দ্বারাই স্ত্রী বায়েন হয়ে যাবে।দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তালাক তার উপর পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৩)

https://www.ifatwa.info/16465 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
وَاعْلَمْ أَنَّ أَصْحَابَنَا - رَحِمَهُمُ اللَّهُ - أَقَامُوا الْخَلْوَةَ الصَّحِيحَةَ مَقَامَ الْوَطْءِ فِي حَقِّ بَعْضِ الْأَحْكَامِ دُونَ الْبَعْضِ فَأَقَامُوهَا فِي حَقِّ تَأَكُّدِ الْمَهْرِ وَثُبُوتِ النَّسَبِ وَالْعِدَّةِ وَالنَّفَقَةِ وَالسُّكْنَى فِي هَذِهِ الْعِدَّةِ وَنِكَاحِ أُخْتِهَا وَأَرْبَعٍ سِوَاهَا وَحُرْمَةِ نِكَاحِ الْأَمَةِ عَلَى قِيَاسِ قَوْلِ أَبِي حَنِيفَةَ وَمُرَاعَاةِ وَقْتِ الطَّلَاقِ فِي حَقِّهَا وَلَمْ يُقِيمُوهَا مَقَامَ الْوَطْءِ فِي حَقِّ الْإِحْصَانِ وَحُرْمَةِ الْبَنَاتِ وَحِلِّهَا لِلْأَوَّلِ وَالرَّجْعَةِ وَالْمِيرَاثِ، وَأَمَّا فِي حَقِّ وُقُوعِ طَلَاقٍ آخَرَ فَفِيهِ رِوَايَتَانِ وَالْأَقْرَبُ أَنْ يَقَعَ.
«تبيين الحقائق شرح كنز الدقائق وحاشية الشلبي» (2/ 144)
জেনে রাখা ভালো যে, হানাফি ফকিহগণ খালওয়াতে সহিহাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত গণ্য করেন, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।হানাফি ফকিহগণ মহর, সন্তানের নসব, ইদ্দত এবং ভরণপোষন, উক্ত স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করা, এবং এ স্ত্রী ব্যতীত আরো চারটি বিয়ে করা বা বাদি বিয়ে করা এর ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন। তবে সিফাতে এহসান সাব্যস্ত হওয়া , উক্ত স্ত্রীর মেয়ে হারাম হওয়া, এবং ঐ স্ত্রী তার পূর্বে তিন তালাক প্রদানকারী স্বামীর জন্য হালাল হওয়া, এবং রাজআত, ও মিরাছের ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না। খালওয়াতে সহীহা হলে এক তালাকের পর আরেক তালাক কি পতিত হবে? এ সম্পর্কে দুইটি মতভেদ রয়েছে। কুরআন সুন্নাহর নিকটবর্তী মত হল, দ্বিতীয় তালাক পতিত হবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
"একদিন ঝগরা করতে করতে রাগের মাথায় এক তালাক,দুই তালাক, তিন তালাক এভাবে বলে ফেলি।"
প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী তিন তালাক পতিত হয়ে গেছে।সুতরাং আপনারা আর সংসার করতে পারবেন না।

কিন্তু যদি আপনি পূর্বে তালাকের নিয়তে কেনায়া তালাক বলে থাকেন, তাহলে এক তালাক বায়েন পতিত হয়েছে।সুতরাং এখন আপনারা আবার বিয়ে করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (15 points)
edited by
জি,সম্মানিত শায়েখ গ্রহণ করবো ইং-শা-আল্লাহ।দয়া করে উত্তর দিলে উপকৃত হতাম।
জাযাকাল্লাহু খইর।
by (589,140 points)
এই একই বিষয় নিয়ে আপনি সর্বমোট কতবার প্রশ্ন করেছেন? তার কি সঠিক হিসেব আপনার নিকট আছে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...