বৃষ্টির পানি থেকে সৃষ্ট সমস্যা ও সন্দেহ । নামাজে সন্দেহ ।

Question

কিছু দিন আগে বারান্দার দরজায় হায়েজের রক্ত লেগেছিল । সাধারণত সেখানে বৃষ্টির পানি পৌছায় না। কিন্তু আজকে অনেক ভারী বৃষ্টি হয়েছে । এই ভারী বৃষ্টির কারনে দরজা ধুয়ে ধুয়ে পানি মেঝেতে পড়ে । মেঝেতে একটি পুরোনো কাপড় রাখা ছিল, যেটাকে আমরা পাপোশ হিসেবে ব্যবহার করি। সেটিও দরজা ধুয়ে ধুয়ে পড়া পানির কারনে ভিজে যায় । এমনকি এই পানি ঘরেও প্রবেশ করে। আমি ঘুমাচ্ছিলাম। আমার মা আমার ঘরের পানি পায়ে লাগা অবস্থায় অনেকবার বিছানায় উঠেছন। এমনকি বারান্দার পাপোশ হিসেবে ব্যবহার করা কাপড়টি শুধু মাত্র চিপে নিয়ে সেটা দিয়ে ঘরের পানি মুছে নেন। সেই ভেজা হাতে অনেক কিছ স্পর্শ করেন। পরে আমি মাকে সব ঘটনা খুলে বলি। মা নামাজ পড়েন। তিনি আমাকে বলেন বৃষ্টির পানি তো প্রবাহিত পানির হুকুমে । এই পানি অপবিত্র হয় না। নামাজে কোনো সমস্যা হবে না । যদি সমস্যা হতো তাহলে কেউ রাস্তায় চলাচল করতে পারত না। রাস্তার পাশে তো ময়লার স্তুপ থাকে। সেখানে তো মহিলারা ব্যবহার করা ন্যাপকিন ফেলেন। বৃষ্টির সময় সেই পানি গড়িয়ে রাস্তায় আসে। সবাই তো ঐ রাস্তা অতিক্রম করেই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ে ।

আমার খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে। বারবার মনে হচ্ছে এই পানি যেখানে যেখানে লেগেছে সব জায়গাই নাপাক হয়ে গেছে ।  আমি এখন কী করব? আর যদি নাপাক হয়ে থাকে এতক্ষণে তো সেই পানি গোটা বাড়িতে ছড়িয়ে পড়েছে । প্রায় সবকিছুই নাপাক হয়ে গেছে । এখন কী হবে? আমি কীভাবে সালাত আদায় করব?

Answer 1

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাবঃ-

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।

(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

কিছু দিন আগে যে বারান্দার দরজায় হায়েজের রক্ত লেগেছিলো!

সেটি তো এতোদিনে শুকিয়ে গিয়েছে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি বারান্দায়/পাপোশে সেই রক্তের কোনো গন্ধ/চিন্হ না পাওয়া যায়,তাহলে    বারান্দায়/পাপোশকে নাপাক বলা যায়না।

তাই সেই হিসেবে ঐ পানি যেখানে যেখানে লেগেছে,কোনো স্থানকেই নাপাক বলা যায়না।