আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
617 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
আসসালামু 'আলাইকুম শ্রদ্ধেয় শায়খ, আমি একজন মেয়ে।আমার কোনো ভাই নেই।দুইজন বোন আছেন। আমি যতদূর জানি যদি দুই বা ততধিক বোন থাকেন    এবং তাঁদের যদি ভাই না থাকে তাহলে  তাঁরা পিতার সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ পান এবং পিতার ভায়েরা একতৃতীয়াং পান।কিন্ত আমার বাবা জীবিত অবস্থায় আমাদের তিন বোনের নামে তাঁর অধিকাংশ সম্পত্তি উইল করে দিয়েছেন। আমার কোনো ভাই নেই এটা এজন্য করেছেন  যেন আমার চাচারা তাদের প্রাপ্য দাবি করতে না পারেন কিংবা আমাদেরকে ঠকাতে না পারেন।কিছু সম্পত্তি আমার মায়ের নামে দিয়েছেন।অল্প কিছু সম্পদ এখনো আছে তাঁর নামে যে গুলো এখনো কাউকে তিনি উইল করে দেননি। আমি যতদূর জেনেছি মৃত ব্যাক্তির ঋণ,জাকাত না দিলে জাকাত,হজ্জ না করলে তাঁর পক্ষ থেকে হজ্জ করে দিতে হবে,অসিয়ত পূরণ করতে হবে,দাফন কাফনের খরচ,সুদ ঘুষ নিলে সে পরিমাণ দান করে তারপর যতটুকু অবশিষ্ট  থাকে তা ওয়ারিশদের মাঝে বন্টন করে দিতে হবে। কিন্তু আব্বু তো আগেই উইল করে দিয়েছেন এক্ষেত্রে আমার কি করণীয়?
আমার আব্বু সঠিক ভাবে যাকাত দেন নি,একটা ফ্লাটে ব্যাংক ভাড়া দেওয়া, সঠিকভাবে বন্টনও করেন নি এক্ষেত্রে আমি যে সম্পত্তি পাব তা কি ব্যাবহার করা বৈধ হবে?না কি না ব্যাবহার করা উত্তম হবে?এক্ষেত্রে আমার কি করণীয় জানাবেন মিন ফাদ্বলিক।(শুধু জায়েজ /নাজায়েজ নয় বরং শরীয়াহর দৃষ্টিকোন থেকে কোনটা উত্তম এবং তাক্বওয়াহর দাবি রাখে সেটা জানাবেন ইন শা আল্লাহ )।
এছাড়াও আমি হেবা সম্পর্কে জেনেছি  যে জীবিত থাকতে কেউ ওয়ারিশদের কিছু দেওয়াকে হেবা বলা হয়।এবং এই হেবা ছেলে সন্তানকে এবং  মেয়ে সন্তানকে সমান ভাবে বন্টন করা হয়।আমার নানা জীবিত থাকাকালীন সময়ে কোনো সম্পদ বিক্রয় করলে কিংবা গাছে কোনো ফল হলে তা উনার ছেলে সন্তানদেরকে যা দিতেন মেয়ে সন্তনদেরকে মেরাসের নিয়মানুযায়ী অর্ধেক দিতেন এটা কি শরীয়াহ সম্মত হয়েছে নাকি উনার ছেলে সন্তান এবং মেয়ে সন্তান সমান দেওয়া উচিত ছিল?
বিঃদ্রঃ মেরাস এবং হেবা সম্পর্কে আমার জ্ঞান খুবই কম।এসম্পর্কে যা উল্লেখ করেছি তা ভুলও হতে পারে।ভুল কিছু বলে থাকলে সংশোধন করে দিবেন মিন ফাদ্বলিক)

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ভূমিকা
হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।
অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়।তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে। (সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩)

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে। (মিশকাত-৩০৭৪)

সুতরাং
(১)
(ক)
যেহেতু আপনার শুধুমাত্র তিন বোন। তাই আপনাদের বাবার মৃত্যর পর আপনারা তিন বোনই পূর্ণ সম্পত্তির তিন ভাগের দু-ভাগ সম্পত্তির মালিক হবেন।
বাকী সম্পত্তি আপনার বাবার অন্যান্য আসহাবে ফারায়েয রা পাবেন। যেমন, আপনার বাবার ভাই,এবং ভাইয়ের সন্তানাদি ইত্যাদি

(খ)মৃত্যু পরবর্তী সম্পদকে  আল্লাহ তা'আলা নিজেই বন্টন করে দিয়েছেন।তাই কারো মৃত্যুর পর আল্লাহ তা'আলা প্রদত্ত বিধি-বিধানের আলোকেই তার সম্পদ বন্টন করতে হবে।এক্ষেত্রে কোনো ওয়ারিছকে তার নির্ধারিত অংশ ব্যতীত অতিরিক্ত কিছু দেয়া যাবে না বা তার ওসিয়ত করা যাবে না। জায়েয হবে না।তবে বাকী সমস্ত ওয়ারিছদের সম্মতিতে কোনো এক ওয়ারিছকে সমস্ত সম্পত্তি বা তার নির্ধারিত অংশের চেয়ে বেশী দেয়া যাবে। মৃত্যুর সময় এক তৃতীয়াংশ সম্পত্তিকে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য যে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয আছে।

হ্যা, যেহেতু আপনার বাবা আপনাদেরকে পূর্ণ সম্পত্তি হেবা করে দিয়েছেন, তাই আপনারা তিন বোনই এখন এই সম্পত্তির পূর্ণ মালিক। আপনারা সমান সমান মালিক।

(২)
যিনি হেবা করবেন, উনার ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। উনার অধিকার রয়েছে, উনি যাকে যতটুকু ইচ্ছা ততটুকুই দিতে পারবেন। সুতরাং আপনার নামা যাকে যতটুকু ইচ্ছা ততটুকুই দিতে পারবেন। তবে কারো জুলুম না হয়, সেদিকে তার অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।উত্তম হল, ছেলেকে যা দিবেন,মেয়েকে তার অর্ধেক দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,680 points)
প্রয়োজনে কমেন্ট করবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...