আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
195 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (129 points)
edited by
আসসালামু 'আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

আমার তালাক,কুফর ও নাপাকি নিয়ে অনেক ওয়াসোয়াসআ হত।আল্লাহর অপার অনুগ্রহ এখন অনেকটাই কমে গেছে।কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে তবু এমন হয়।আমি আপ্নাদের বলি-

কিছু কথা বিশেষত যেসব কথা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভূক্ত এসব কথা যখন স্ত্রীকে সাধারণ ভাবে বলতে চাই বা বলতে উদ্যত হই,সেসব কথা বলতে গেলে আমার মাথায় অটোমেটিক বলার আগ সময়ে তালাকের চিন্তা চলে আসে,যেমন তোমাকে বাপের বাড়ি রেখে আসি,বা তোমার আব্বুকে বিচার দিব বা শশুরকে বলি আপ্নার মেয়েকে নিয়ে যান(এসব কথা আমি তালাকেএ নিয়াত ছাড়া বলতে চাই কোনো ঘটনার প্রেক্ষিতে) তখন বলতে শুরু করব তার ১ সেকেন্ড আগে হুট করে মনে হয় তালাকের কথা,তালাক দেবার চিন্তা আসে।কেউ একজন মাথার ভেতর যেন মনে করাই দেয় তালাকের কথা।তখন আমি সাধারণত ১ সেকেন্ড মত থেমে যাই,থেমে ভাবি আচ্ছা আমি কি তালাকের নিয়াতে বলছি? নিজে নিজে নিয়াত শুদ্ধ করি যে না তালাকের নিয়াতে বলছিনা।এরপর উক্ত কথা বলি।
কিন্তু অনেক সময় রাগ হলে বা দ্রুত কথা বলতে হলে বা মেজাজ খারাপ হলে বা বিরক্ত অনুভব হলে এভাবে দম নিয়ে নিয়ত শুদ্ধ করা বা তা নিয়ে চিন্তা করা হয়না,সেই তালাকের কথা বা চিন্তা মাথায় নিয়েই বলে ফেলি।ব্যাপারটা এমন যে আমি সাধারণ নিয়াতেই বলছি বা বলব বলে উদ্যত হয়েছি ঠিক সেই মুহুর্তে কেউ একজন আমার মাথায় তালাকের ব্যাপারটা মনে করাই দেয়।আমি সাধারণ ভাবি চাইনা আমার তালাক হোক।কিন্তু রাগ উঠলে আর সেই কথা গুলা বলার সময় তালাকের চিন্তা যখন এসে যায় তখন মনে হয় নিয়াত হলে হোক তবু বলে ফেলি।আবার মনে হয় এত অশান্তি করছে তালাক দিলে ভাল হয় টাইপ চিন্তা।এসব চিন্তা ভাবনাও মাথায় চলে আবার কথা গুলাও বলি বা বলা শুরু করি। পরে আফসোস হয় আমি কি আদৌ তালাক দিলাম কি দিলাম না যেহেতু আমি ওয়াসোউয়াসাউ ভুগী

 এমন প্রায় ই,হয় ধরেন স্ত্রীর উপর রাগ হয়েছে,আমি যদি বলি তোমার পাশে শোবোনা বা তুমি ঘর থেকে চলে যাও।এগুলা তালাকের নিয়াত ছাড়া সাধারণ ভাবে বলতে চাই।তখন যখন বলব ঠিক তার আগে আমার মাথায় তালাকের চিন্তা এসে যায়।অনেক সময় তখন আমি থামি,থেমে নিয়াত ঠিক করে তারপর বলি কিন্তু রাগ উঠলে আর থামতে পারিনা,সেই নিয়ত সহ বা নিয়তের হাল্কা রেশসহ বলা হয়।,তবে সেই কথা শতভাগ তালাকের নিয়তে বলা হয়না বলেই আমার স্থির বিশ্বাস।স্বাভাবিক ভাবে আমি আমার স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইনা।প্রাসংগিক ক্ষেত্রে নিম্নোক্র ফাতওয়াতে আমার প্রশ্নটি দেখুন-

https://ifatwa.info/44432/?show=44432#q44432।

উক্ত ফাতওয়াতে আমার প্রশ্নএকটা বিষয় হয় বুঝাতে ভুল করেছি তা হল,যে আমি যখন স্ত্রীকে বলতে উদ্যত হই, 'নিজের টা নিজে বুঝ নিজের রাস্তা নিজে দেখো',তখন আমার মাথায় তালাকের চিন্তা উপরোক্ত বর্ণিত মোতাবেক আসে,আমি একটু দম নিলেও এতটা রাগ লাগে যে আমি উক্ত নিয়ত নিয়ে বা নিয়তের রেশে বলেই ফেলি।('যে আমি তাকে ইবাদাত করতে এত সাহায্য করি,আর সে আমাকে এভাবে বলে,আমি যদি না থাকি,আমি এখন তালাক দিচ্ছি সে কিভাবে কি করে দেখা যাবে',এমন নিয়াত।আমি নিশ্চিত না ঠিক শতভাগ এমন বা অন্যকোনো ভাবে শতভাগ তালাকের নিয়াত ছিল কিনা। আসলে আমি পুরো ঘটনা মনে করতে পারছিনা,আবার সন্দেহ ও লাগছে।আমি কথাটা শুরু করতে চেয়েছিলাম খুব সম্ভব এই নিয়াতে যে, 'আমি আর হেল্প করবনা নিজের টা নিজে কর'(তালাকের নিয়ত ছাড়া)। বলতে শুরু করার আগেই আমার মাথায় তালাকের নিয়াত আসে যেটা সম্ভবত উপোরক্ত টাইপ নিয়ত।এরপর একটু দম নিয়েও নিজেকে চুপ থাকতে না পেরে উক্ত কথা বলে ফেলি।যেহেতু আগ মুহুর্তে  তালাকের নিয়াত মাথায় কেউ(শয়তান)ঢুকে দেয় তার পর উক্ত কথা বলি আর সাথে রাগ ও থাকে,তাই কথা গুলা সেই নিয়তের রেশ ধরে রাগ বশত হয়ে যায়। তারপর অসহায় লাগে যে কথাটা শতভাগ তালাকের নিয়তে হয়ে গেল কিনা। এই যে তালাকের কথাটা মাথায় মনে করাই দেয়,এগুলা মাত্র ১/২ সেকেন্ডের মাঝে মাথায় আসে বা কেউ মনে করাই দেয়।(এর আগে পরে তালাকের নিয়ত একদম ই থাকেনা।)যাহোকএরপর অনেক সময় রাগ বশত পরের কথা বলে যাই।এখনসেই ক্ষুদ্র সময়ে ও রাগ বশত সেইনিয়তের রেশে পরের কথা বলতে আসলে কি নিয়ত থাকে বা শতভাগ থাকে কিনা এসব আমার মাথায় স্থির ভাবে ভাবতে পারিনা।এই মনে হয় হয়ত শতভাগ নিয়তে বলেছি এই মনে হয়না না বলিনি শতভাগ নিয়তে ।
উপরোক্ত সমস্ত বর্ণনা ও ফাতওয়ার লিংকের কথা সমূহ আমার স্মৃতিতে যতটুকু খেয়াল আছে তার উপর বলা

এখন আমার কি এসবে তালাক পড়বে? পড়লে কত তালাক পড়বে।আর কেউ তালাকের আংশিক নিয়তে তালাক দিলে শতভাগ নিয়তে নয়।(শতভাগ অর্থ ১/২/৩ তালাক নয় বরং নিশ্চিত বা নিয়তের ক্ষেত্রে) তালাক হবে কিনা।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1049 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
রাগের অবস্থাঃ-
রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে  ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।
তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক পতিত হবে।
যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী))(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

'গার্জিয়ানকে ডাকো, তোর আর সাথে সংসার করবো না'
এরকম কথাবার্তা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরা এমন কথা স্বামী তালাকের নিয়তে বললে তালাকে বায়েন বায়েন পতিত হবে।এক তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাক,আর তিন তালাকের নিয়ত থাকলে তিন তালাক পতিত হবে।আর ভয়প্রদর্শনের নিয়তে বললে অবশ্যই তালাক পতিত হবে না(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯/৪৫১)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনি যখন আপনার স্ত্রীর সাথে কথা বলেছিলেন, তখন আপনার মাথায় তালাকের চিন্তা এসেছিল, কিন্তু তালাকের নিয়তে এসব বলেননি।অর্থাৎ চিন্তাটা পরে এসেছে, তাই এসব কথা দ্বারা তালাক হবে না।

https://www.ifatwa.info/44505 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
আয়িশাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তিন ধরণের লোকের উপর থেকে কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছেঃ (১) নিদ্রিত ব্যক্তি, যতক্ষণ না জাগ্রত হয়, (২) অসুস্থ (পাগল) ব্যক্তি, যতক্ষণ না আরোগ্য লাভ করে এবং (৩) অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক, যতক্ষণ না বালেগ হয়। (সুনানে আবি-দাউদ-৪৩৯৮)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আমার যতদূর মনে হচ্ছে যে, আপনার মানষিক(ওয়াসওয়ার এক প্রকার) সমস্যা রয়েছে।আপনাকে আমি মানষিক রোগী আখ্যা দিতে পারবো না,বরং এ কাজ ডাক্তারের। আপনি দুইজন মুসলিম মানষিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন, যদি তারা উভয়ই আপনাকে মানষিক রোগে আক্রান্তের কথা বলে, তাহলে আপনার কথার দ্বারা তালাক হবে না। কেননা আপনি মানষিক রোগী। আর মানষিক রোগী শরীয়তের মুকাল্লাফ নয়, সুতরাং মানষিক রোগীর বিয়ে-তালাক কিছুই শরীয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...