আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
987 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।
অমুসলিম দোকানের "মিষ্টি" খাওয়া কি হালাল?এছাড়া অন্যান্য শুকনো খাবার যেমন পাঊরুটি, বিস্কিট ইত্যাদি খাওয়া কি হালাল?

1 Answer

0 votes
by (671,200 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইসলামে সব কিছুই পরিচালিত হয় সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে। 

 হাদীস শরীফে এসেছে   
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে।
 {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

সুতরাং অমুসলিমদের দোকান থেকে কোনো কিছু ক্রয় করার ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতি হল, 
অমুসলিম দোকানের খাবারটি কোনোভাবেই হারাম না হতে হবে।
পাশাপাশি তাতে হারাম কোনো কিছুর সংমিশ্রণ না থাকতে হবে। (তাদের কোনো উপাস্যের জন্ম উৎস্বর্গকৃত না হতে হবে। )

রাসুলুল্লাহ (সা.) অমুসলিমদের দাওয়াত গ্রহণ করেছেন। তাদের রান্নাকৃত খাবার খেয়েছেন।
তাদের দেওয়া উপহারও গ্রহণ করেছেন। (বুখারি, হাদিস: ২৬১৫)
,
শরীয়তের বিধান হলো অমুসলিম যেই পাত্রে খাবার পাকায়,যাহা কিছু পাকায়,সেটার ব্যাপারে  যদি নাপাকির ইলম থাকে,তাহলে সেই খাবার খাওয়া ক্রয় করা হারাম।
যদি এই ব্যাপারে সন্দেহ হয়,তাহলে তা খাওয়া,ক্রয় করা মাকরুহ।
যদি পবিত্রতার ব্যাপারে প্রবল ধারনা হয়, তাহলে খাওয়া,ক্রয় করা জায়েজ আছে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৬/৩৪২.ইমদাদুল ফাতওয়া ৪/১০৬)

দোকান থেকে কিছু কেনার দরকার হলে প্রয়োজনের তাগিদে মুসলিম-অমুসলিম যে কারও কাছ থেকে কেনা যাবে। 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহুদিদের থেকেও বিভিন্ন জিনিস ক্রয় করেছেন। সুতরাং কাফেরদের থেকে কেনাকাটা করায় কোনো ক্ষতি নাই। তবে কোনো প্রকার যৌক্তিক কারণ যেমন- ধোঁকা দেয়া, দাম বেশি ধরা, ভেজাল পণ্য সরবরাহ করা কিংবা মিথ্যার আশ্রয় নেয়া ইত্যাদি ছাড়া একজন মুসলমানকে বাদ দিয়ে কোনো কাফের থেকে ক্রয় করা- যা মুসলমানের বিপক্ষে কাফেরকে সহযোগিতা করার শামিল- অবশ্যই হারাম। 
কারন এর মাধ্যমে কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব, তাদের কাজে সম্মতি এবং তাদের প্রতি মুহাব্বত-ভালোবাসা পোষণ ইত্যাদির প্রমাণ মেলে। 

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

এ ছাড়াও যদি কোনো মুসলমানের অভ্যাস এমন হয় যে, সে সব সময় অমুসলিমদের থেকেই ক্রয় করে যার ফলে মুসলমান ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাদের মালামালের অবমূল্যায়ন হয় এবং তাদের মালমাল বাজারজাত করা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়, তা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়। আর যদি মুসলমাদের মধ্যে এমন কোনো কারণ যেমন- ধোঁকা দেয়া, দাম বেশি নেয়া, মানুষকে ঠকানো ইত্যাদি সমস্যা পাওয়া যায়, তবে মুসলমানদের থেকে খরিদ না করে তাকে সংশোধনের জন্য চেষ্টা করা যেতে পারে। যদি সে সংশোধন হয়ে যায় তো বেশ (আলহামদুলিল্লাহ)। আর যদি সংশোধন না হয় তবে অমুসলিমদের থেকে খরিদ করায় কোনো অসুবিধা নাই- যদি সে কাফের হয়, লেনদেন ভাল করে এবং ব্যবসায় মিথ্যার আশ্রয় না নেয়।
,
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ  
قال محمد رحمہ اللّٰہ تعالیٰ: ویکرہ الأکل والشرب في أواني المشرکین قبل الغسل، ومع ہٰذا لو أکل أو شرب فیہا قبل الغسل جاز، ولا یکون آکلاً ولا شاربًا حرامًا۔ وہٰذا إذا لم یعلم بنجاسۃ الأواني، فأما إذا علم فإنہ لا یجوز أن یشرب ویأکل منہا قبل الغسل، ولو شرب أو أکل کان شاربًا وآکلاً حرامًا۔ (الفتاوی الہندیۃ، کتاب الکراہیۃ / الباب الرابع عشر في أہل الذمۃ ۵؍۳۴۷ زکریا) 
যার সারমর্ম হলো যদি পাত্রের ব্যাপারে হারাম হওয়া জানে,তাহলে তাহলে তা খাওয়া জায়েয নেই। 
আর যদি সে নাপাকির ব্যাপারে কিছুই না জানে,তাহলে সেই খাবার খাওয়া নাজায়েজ নয়।        
,
★সুতরাং প্রশ্নে যেই ছুরত " অমুসলিম দোকানের "মিষ্টি" এছাড়াও অন্যান্য শুকনো খাবার যেমন পাঊরুটি, বিস্কিট ইত্যাদি খাওয়া জায়েয আছে,তবে তাতে হারাম মিশ্রনের জ্ঞান না থাকতে হবে।
,
সাধারণত আমাদের দেশে কোনো অমুসলিম দোকানদার মিষ্টি,পাউরুটি বিস্কিট  ইত্যাদিতে হারাম কিছুই মিশিয়ে দেয়না,তাই অমুসলিম দোকান থেকে এসব পন্য ক্রয় করা কোনো সমস্যাকর নয়।
তবে আশে পাশে কোনো মুসলিম দোকান থাকলে সেখান থেকেই ক্রয় করাই ভালো।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...