আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
622 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (-1 points)
আমার প্রশ্নটি করার আগে আমি আহলে হাদিস পন্থীদের কিছু বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করবো। তারপর আমার প্রশ্নটি করবো।

আশা করি, আপনারা সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো পড়ে আমার প্রশ্নের জবাব দিবেন।

আহলে হাদিসদের বৈশিষ্ট্য:

০/ এরা মাযহাব মানে না। যারা মাযহাব মানে তাদেরকে মুশরিক মনে করে।

১/ এরা বুখারী-মুসলিম ছাড়া অন্য কোনো হাদিসের কিতাব মানতে চায় না।

২/ এরা ওলামায়েকেরাম এর সাথে অহরহ বেয়াদবি করে।

৩/ এরা শিরক-কুফরের ব্যাপারে অনেক শক্ত কিন্তু অন্যান্য আমল(যেমন: নামাজ,জিকির ইত্যাদি) করার ক্ষেত্রে এদের তেমন একটা খুজে পাওয়া যায় না।
৪/ এরা অধিকাংশ জাকির নায়েকের ভক্ত তাই  বিতর্ক করে ইসলাম কায়েম করতে চায়; দাওয়াত দিয়ে নয়।

৫/ এদেরকে হাদিসের কথা শুনালেই এরা হাদিসের দলিল চায়।(পৃষ্টা ও হাদিস নম্বরসহ) না হলে হাদিস মানবে না,শুনবেও না।

৬/ এরা আলেমদেরকে কাছে যেতে চায় না কারন তারা আহলে হাদিস শায়েখদের অন্ধ ভক্ত।

৭/ এরা বেশিরভাগ ঘরে নামাজ আদায় করে কারন এরা বিশ্বাস করে হানাফী হুযুরদের নামাজ হয় না।

৮/ এরা ইসলামের সকল বিষয়কে বিজ্ঞানের সাথে মিলাতে চায়। যদি দেখে বিজ্ঞানের যুক্তির মিলছে না তাহলে কুরআন-হাদিসের উলটা ব্যাখ্যা করে হলেও বিজ্ঞানের সাথে মিলাবে। অর্থাৎ এরা বিজ্ঞানপূজারী।

৯/ বিভিন্ন বুজুর্গদের কারামতের ঘটনার কারনে কওমী আলেমদেরকে বিদাতি-মাজার পূজারী মনে করে।
১০/ এদের মতের বিপরীতে হাদিস আসলে তারা ও তাদের আলেমরা মনমত হাদিসের অপব্যাখ্যা করে।

১১/ এরা মানসূক(রহিত) হাদিসগুলো সাধারন  মানুষের সামনে তুলে ধরে।

১২/ এরা হাত গোনো কয়েকজন বাদে কোনো তাবেঈ বা কোনো আলেমের তাফসীর মানে না।

১৩/ এরা নিজেদের স্বার্থের বেলায় সাহাবীদের আমলকেও বিদাআত বলে।
১৪/ এরা কথায় কথায় মক্কা-মদিনার দলিল দেয়।

১৫/ এরা ইজমা বা কিয়াস কোনটাই মানে না।


আমার প্রশ্ন: সাধারন মুসলমানদের জন্য কী এরকম বাতিল ফিরকা-কে হক বুঝানোর চেষ্টা করা উচিত? নাকি উপরের ১৫ টা বৈশিষ্ট্যর কারনে এড়িয়ে চলা উচিত?
কারন উল্লেখিত ১৫ টা বৈশিষ্ট্যকে ম্যানেজ করে একজন সাধারন মুসলমানের পক্ষে এদেরকে হেদায়েতের পথে আনা কষ্টকর এবং নিজের ইমান-আমলের উপর আঘাতস্বরূপ।

তাই শুধু 'আলেমসমাজ'ই এদেরকে সঠিক পথে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
অন্য কেও নয়।
এ মন্তব্যটি কী ঠিক?
by (-1 points)
+1
ভাইজান, এগুলা আহলে হাদিসদের বৈশিষ্ট্য না। তাদের মধ্যে কতিপয় আছে হানাফি বিদ্বেষী। এগুলা সেসব মানুষের বৈশিষ্ট্য। তাদের বৈশিষ্ট্য গুলো সামগ্রিকভাবে আহলে হাদিস সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য বললে অপবাদ আর বেইনসাফি হবে। আল্লাহু আলাম 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم  

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের যে দশটি উল্লেখযোগ্য আকিদার কথা পাওয়া যায়,সেই দশটি আকিদাকে আহলে হাদীস সম্প্রদায় মেনে থাকেন।সেজন্য তাদেরকে আহলে সুন্নাত থেকে খারিজ বলা যাবে না।তবে যেহেতু তারা তাকলীদ সম্পর্কে ইজমায়ে উম্মতের খেলাফ অবস্থান করেন,এবং মুকাল্লিদ উলামায়ে কেরামদেরকে ভালমন্দ বলে থাকেন,তাই তাদের দিকে উলামায়ে করাম নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি লালন করে থাকেন। 
.
তবে এই কারনে তাদেরকে এড়িয়ে চলা,সম্পর্কচ্ছেদ করা,কথা বার্তা বলা বন্ধ করা জায়েজ হবেনা। 
অনেকে তাদের মধ্যে আত্মীয়ও আছে,সুতরাং এটার দ্বারা (এড়িয়ে যাওয়া) আত্মীয় সম্পর্কছিন্ন হতেও পারে,যাহা কোনো ভাবেই জায়েজ নয়।  

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: لَا تَبَاغَضُوا، وَلَا تَحَاسَدُوا، وَلَا تَدَابَرُوا، وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا، وَلَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ 
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরস্পরকে ঘৃণা করো না, পরস্পর হিংসা করো না, একে অপরের গোয়েন্দাগিরী করো নাম বরং আল্লাহর বান্দারা পরস্পর ভাই ভাই হয়ে যাও। যে কোনো মুসলিমের জন্য তার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশী সম্পর্ক বিচ্ছেদ করা জায়িয নয়
(আবু দাউদ ৪৯১০)
,
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، يَلْتَقِيَانِ فَيُعْرِضُ هَذَا، وَيُعْرِضُ هَذَا، وَخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ
আবূ আইয়ূব আল-আনসারী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিমের জন্য তার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে (ঝগড়া করে) তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকা বৈধ নয়। দু’ জন পথিমধ্যে মুখোমুখি হলে একজন এদিকে এবং অপরজন অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এ দু’ জনের মধ্যে যে প্রথমে সালাম দেয় সে-ই উত্তম।
(আবু দাউদ ৪৯১১)
.
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ "
জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
বুখারী (অধ্যায় : আদব, হাঃ ৫৯৮৪), মুসলিম (অধ্যায় : সদ্ব্যবহার)।
.
حدِيثُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِم، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: لاَ يَدْخُلُ الجَنَةَ قَاطِعٌ
যুবায়র ইবনু মুত‘ইম (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
(সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ৭৮ ; আদব-আচার, অধ্যায় ১১, হাঃ ৫৯৮৪; মুসলিম, পর্ব ৪৫; সদাচরণ, আত্মীয়তার সম্পর্ক ও শিষ্টাচার, অধ্যায় ৬, হাঃ ২৫৫৬)
,
তারা যদি সাধারণ মুসলমানদের কাছে এসে বিভ্রান্ত্রি মূলক কথা বলে,ফেতনা ছড়ায়তে চায়,তাহলে তাদেরকে স্পষ্ট আকারে বলে দিতে হবে যে এই বিষয়ে আপনারা উলামায়ে কেরামদের সাথে আলোচনা করুন।
আমাদের সাথে এই বিষয় নিয়ে আর আলোচনা না  করলেও ভালো হয়।
,
এরপরেও কেহ ফেতনা ছড়াইতে চাইলে তাদের থেকে দূরে থাকা যাবে,তবে তাদের সাথে কথা বন্ধ করা ইত্যাদি জায়েজ হবেনা।
আপাতত সালাম এবং জরুরি কথা চালিয়ে যেতে হবে।    


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...