আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
182 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

 

মুহাম্মাদ ইব্‌নু মুনতাশির (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

আমি ‘আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম এবং আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) এর উক্তি উল্লেখ করলাম,- “আমি এমন অবস্থায় ইহরাম বাঁধা পছন্দ করি না যাতে সকালে আমার দেহ হতে সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়ে।” ‘আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সুগন্ধি লাগিয়েছি, তার পর তিনি পর্যায়ক্রমে তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন এবং তাঁর ইহ’রাম অবস্থায় সকাল হয়েছে।

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২৭০

 

এই হাদিস এর ব্যাখ্যা ও প্রেক্ষাপট জানতে চাই । বিশেষকরে "তিনি পর্যায়ক্রমে তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন এবং তাঁর ইহ’রাম অবস্থায় সকাল হয়েছে।" এ দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে ? এখনে ইহরাম মানে কি বুঝাচ্ছে ?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْتَشِرِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ فَذَكَرْتُ لَهَا قَوْلَ ابْنِ عُمَرَ مَا أُحِبُّ أَنْ أُصْبِحَ، مُحْرِمًا أَنْضَخُ طِيبًا. فَقَالَتْ عَائِشَةُ أَنَا طَيَّبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ طَافَ فِي نِسَائِهِ ثُمَّ أَصْبَحَ مُحْرِمًا.

মুহাম্মাদ ইবনু মুনতাশির (রহ.) তাঁর পিতা হতে বর্ণিত। আমি ‘আয়িশাহ (রাযি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম এবং ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাযি.)-এর উক্তি উল্লেখ করলাম,- ‘‘আমি এমন অবস্থায় ইহরাম বাঁধা পছন্দ করি না যাতে সকালে আমার দেহ হতে সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়ে।’’ ‘আয়িশাহ (রাযি.) বললেনঃ আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সুগন্ধি লাগিয়েছি, তারপর তিনি পর্যায়ক্রমে তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন এবং তাঁর ইহরাম অবস্থায় সকাল হয়েছে।
(বুখারী শরীফ ২৭০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৬৮)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
এখানে হযরত ইবন উমর (রাঃ) এর নিকটে ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার করা অপছন্দনীয়,সেটি নিয়ে আয়েশা রাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি যেটি বলেছেন,তার সারমর্ম  হলো রাসুলুল্লাহ সাঃ ইহরাম বাধার পূর্বে সুগন্ধি লাগিয়েছিলেন। 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
""তিনি পর্যায়ক্রমে তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন""
এখানে মিলিত হওয়া থেকে স্ত্রীদের সাথে সাক্ষাৎ করা উদ্দেশ্য। 
সহবাস নয়। সেটি নিচের হাদীস ও ব্যাখ্যা থেকে স্পষ্ট হবে,ইনশাআল্লাহ।   

 ثُمَّ أَصْبَحَ مُحْرِمًا তাঁর ইহরাম অবস্থায় সকাল হয়েছে।
এখানে অন্য হাদীসে এর অর্থ হিসেবে নেয়া হয়েছেঃ
তারপর তিনি ইহরাম বেঁধেছেন।
তার মানে এখানে রাসুলুল্লাহ সাঃ স্ত্রীদের সাথে সাক্ষাৎ করে তারপর ইহরাম বেধেছেন।
এটিই উদ্দেশ্য।     
 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

أَخْبَرَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ عَنْ وَكِيعٍ عَنْ مِسْعَرٍ وَسُفْيَانُ عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْتَشِرِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَقُولُ لَأَنْ أُصْبِحَ مُطَّلِيًا بِقَطِرَانٍ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أُصْبِحَ مُحْرِمًا أَنْضَحُ طِيبًا فَدَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَأَخْبَرْتُهَا بِقَوْلِهِ فَقَالَتْ طَيَّبْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَطَافَ فِي نِسَائِهِ ثُمَّ أَصْبَحَ مُحْرِمًا 
হান্নাদ ইবন সারী (রহঃ) ... ইবরাহীম ইবন মুহাম্মদ ইবন মুনতাশির তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, আমি ইবন উমর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছিঃ ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার করা অপেক্ষা আমার কাছে আলকাতরা ব্যবহার করা অধিক পছন্দনীয়। আমি আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে এ কথা জানালে তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সুগন্ধি লাগিয়েছি; আর তিনি তাঁর স্ত্রীদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। তারপর তিনি ইহরাম বেঁধেছেন।
(নাসায়ী ২৭০৭)

হাশিয়াতুস সানাদি আলান নাসায়ী গ্রন্থে আছেঃ-

( ثم أصبح محرما ) أي بعد أن اغتسل بقرينة أنه طاف على النساء وقد بقي أثر الطيب كما يعلم من رد عائشة قول ابن عمر بذلك وقد جاء صريحا أيضا فاستدل به المصنف على أن بقاء أثر الطيب لا يمنع صحة الاغتسال وهذا هو الظاهر من هذا الحديث وقد جوز بعضهم أنه تطيب ثانيا بعد الاغتسال وما بقي من آثار الطيب بعد الإحرام كان أثرا للثاني إذ بقاء أثر الأول بعد الاغتسال على وجه الكمال والسبوغ بعيد وجوز آخرون أن المراد بالطواف دخوله صلى الله تعالى عليه وسلم عليهن لا الجماع فلا حاجة إلى فرض الاغتسال والله تعالى أعلم .
সারমর্মঃ
তিনি গোসল করার পর মুহরিম হয়েছেন।
ইসলামী স্কলারগন বলেছেন যে স্ত্রীদের নিকটে তওয়াফ দ্বারা এখানে স্ত্রীদের ঘরে প্রবেশ,তাদের সাথে সাক্ষাৎ উদ্দেশ্য। 
সহবাস উদ্দেশ্য নয়,সুতরাং ফরজ গোসলের প্রয়োজনীয়তা নেই।       


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...