আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
296 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (87 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
১/ আযানের সময় কি কথা বলা,  কাজ করা বন্ধ করতে হয় সাময়ীক ভাবে?

২/ আমার বাসার আসে পাসে খুব কাছে মসজিদ নেই কিন্তু পুরো এলাকা জুড়ে মসজিদ হওয়ায় সবগুলোর আজান প্রায় একি সাথে আসে। এক্ষেত্রে আযানের উত্তর ও এর পরে দুয়া পাঠ কিভাবে করব?

৩/ কিছু নসীহাহ করুন যাতে যেকোন ইবাদতে মনোযোগ থাকে এবং অন্তরে প্রশান্তি আসে।

৪/ রোজার পর শয়তান ছাড়া পেলে নিজেদের নিয়ন্ত্রিত রাখতে বিষেশ কিছু করণিয় আছে কি?

৫/ পিতা মাতা কে মিথ্যা বলা যাবে কি সন্তুষ্ট করার জন্য?

৬/ কোন কোন ক্ষেত্রে পিতা মাতার অনুগত থাকা বাধ্যতামূলক?  তারা যদি এমন কিছু বলে যা আমার পছন্দনীয় নয় কিংবা কঠিন করা আমি কি বাধ্য করতে?

৭/ আল্লাহ এর কাছে এভাবে চাওয়া যাবে, "হে আল্লাহ আমার যোগ্যতা নেই তোমার অমুক বান্দাদের মত হবার, কিন্তু তুমি দয়ালু তুমি আমাকে তাদের মত চেষ্টা করার এবং হওয়ার তাউফিক দেও"??
৮/ আমি যদি চাই একটা পর্যায়ের পর ইলম অর্জন এর জন্য শ্রম দিব কিন্তু পরিবার রাজি না হয় তাহলে কি করণিয়?


জাজাকাল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
আজানের সময় কথা বলা ঠিক নয়। বরং তিলাওয়াত, জিকির ও ধর্মীয় কথাবার্তা বন্ধ করে আজানের জবাব দেয়া উচিত। তবে যদি তা বন্ধ না করে তথা আজানের জবাব না দেয় তাতে গোনাহ হবে না।
,
আজানের জবাব দেয়া উচিত। সে সময় কথা বলা ঠিক নয়। 
আজানের সময় কথা বলা জায়েজ নয়,এই কথাটি সহীহ নয়। 
কেহ যদি আযানের সময় কথা বলে,তাহলে এতে তার গুনাহ হবেনা।
আযানের সময় কাজ চালিয়ে যাওয়া যাবে,তবে জুম'আর আযানের সময় দুনিয়াবি কাজ বন্ধ করতে হবে।
আজানের সময় জবাব দেবার আদেশ সম্বলিত হাদীস বুখারীতে এসেছে-

عن أبي سعيد الخدري أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال ( إذا سمعتم النداء فقولوا مثل نما يقول المؤذن )

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ  যখন তোমরা আজান শোন! তখন তা’ই বল যা মুয়াজ্জিন বলে। তথা আজানের জবাব দাও। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮৬, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৮৭৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং- ৫২২, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২০৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৭২০, সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১৬৩৭, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১৭৮৪}

আযানের সময় আযানের জবাব ছাড়াও অন্য কথা বলা জায়েজ হওয়ার পক্ষে এ হাদিসটি প্রযোজ্য:

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يُغِيرُ إِلاَّ عِنْدَ صَلاَةِ الْفَجْرِ فَإِنْ سَمِعَ أَذَانًا أَمْسَكَ وَإِلاَّ أَغَارَ فَاسْتَمَعَ ذَاتَ يَوْمٍ فَسَمِعَ رَجُلاً يَقُولُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ . فَقَالَ ” عَلَى الْفِطْرَةِ ” . فَقَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . فَقَالَ ” خَرَجْتَ مِنَ النَّارِ

আনাস ইবনে মালিক রা. হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ফজরের সময়ই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কোন জনপদে) নৈশ হামলা করতেন। তিনি আযান শুনলে হামলা হতে বিরত থাকতেন, অন্যথায় হামলা করতেন। একদিন তিনি কানকে সজাগ রাখলেন।
তিনি একজন লোককে ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার’ বলতে শুনে বললেন: “ফিতরাতের (ইসলামের) উপর আছে।”
ঐ লোকটি আবার বলল: “আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন উপাস্য নেই)।
তিনি বললেনঃ “তুমি জাহান্নাম হতে বেরিয়ে গেলে।” (সহীহ, সহীহ আবু দাউদ (২৩৬৮), মুসলিম)

(০২)
আপনার বাসার কাছের মসজিদের আযানের জবাব দিবেন,সেই আযানের পর দোয়া পড়বেন।
অথবা সর্ব প্রথম যেই আযান শুনবেন,সেটির জবাব দিবেন।

অথবা আপনার ইচ্ছা,যেকোনো একটি আযানের জবাব দিলেও হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ

(০৩)
নামাজ,ইবাদতে মনোযোগ সাধনে কিছু কৌশল রয়েছে। 

প্রথম কৌশল হলো, অন্তরের মধ্যে এই অনুভব করা এটা শেষ নামাজ। মৃত্যু এমন একটি বিষয়ের যা কখন আসে বলা যায় না। 

দ্বিতীয় কৌশল হলো, এ অনুভব করা সালাত হলো আল্লাহর সঙ্গে বান্দার  কথোপকথনের মাধ্যম। 
সালাতের মাধ্যমে গোলাম ও মনিবের মাঝে কথা বলা যায়। যদিও সেটা আমাদের শ্রবণ হয় না, তবুও এ মনোভাব ধারণ করতে হবে অন্তর দ্বারা আমরা কথা বলছি। 

তৃতীয় কৌশল হলো, ধীরস্থির হয়ে সালাত আদায় করা। 

চতুর্থ কৌশল হলো এ অনুভব করা- আমি আল্লাহর সঙ্গে দেখা করছি। 
আল্লাহতায়ালা সার্বক্ষণিক আমাদের প্রতি দৃষ্টি রাখেন কিন্তু দুনিয়ার কোনো চর্মচক্ষু দ্বারা তাকে প্রত্যক্ষ করা সম্ভব না। 

সালাতের ক্ষেত্রে রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এমনভাবে, যেন তাঁকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখছেন। (বুখারি, মুসলিম) 

আল্লাহর সামনে যখন মাথানত করতে হয় তখন এই ভয়ে করতে হবে তিনি যেন আমাকে দেখতে পাচ্ছেন। 

★নিজের কানে আসে,এমন আওয়াজে উচ্চারণ করে কুরআন তিলাওয়াত করা। 

(০৪)
না,জায়েজ নেই।


(০৫)
তারা যদি শরীয়াহ খেলাফ আদেশ না করে,ও জরুরি ভাবে কোনো কাজ করতে আদেশ করে,তাহলে সেটি করা উচিত।   

(০৬)
হ্যাঁ, এভাবে দোয়া করা যাবে। 

(০৭)
ফরজ ইলম অর্জন হলে এক্ষেত্রে পিতা মাতার আদেশ মানতে হবে।

ফরজ ইলম অর্জন হয়ে থাকলে এক্ষেত্রে পিতা মাতার আদেশ মানারই পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...