আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
174 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (19 points)
ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ ٱللَّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

উস্তাদ, ক্বুরআন-হাদীস থেকে আমরা জানি যে আল্লহ রব্বুল 'আলামীন সবকিছু ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর আরশ ছিল পানির ওপর, এটাও ক্বুরআনের আয়াত।

আমি গতদিন একটা কথা শুনলাম যে, আরশ এভাবে হাজার বছর কালো পানির উপর ছিল, এরপর আল্লহ ছয়টা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন।


অর্থাৎ সময়ের ছয়টি দশায়, ছয়টি দিনে পৃথিবী ও আসমান সৃষ্টি হয়নি।


আমি জানতে চাচ্ছি, এ বিষয়ে আমরা কোন আক্বিদা পোষণ করবো? সত্যিই কি আরশ এভাবে হাজার বছর পানির ওপর ছিল? ছয়দিন বলতে কি ছয়টা দশাকেই বোঝানো হয়?

এ সম্পর্কে আহলুস সুন্নাহর আক্বিদা কেমন হবে?
জাঝাকাল্লহু খইর উস্তাদ...

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ وَّ کَانَ عَرۡشُہٗ عَلَی الۡمَآءِ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ وَ لَئِنۡ قُلۡتَ اِنَّکُمۡ مَّبۡعُوۡثُوۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِ الۡمَوۡتِ لَیَقُوۡلَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۷﴾ 

আর তিনিই আসমানসমূহ ও যমীনকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেন, আর তাঁর আরশ ছিল পানির উপর, তোমাদের মধ্যে কে আমলে শ্রেষ্ঠ তা পরীক্ষা করার জন্য। আর আপনি যদি বলেন, নিশ্চয় মৃত্যুর পর তোমাদেরকে উত্থিত করা হবে, তবে কাফেররা অবশ্যই বলবে, এ তো সুস্পষ্ট জাদু।
(সুরা হূদ ৭)


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَن عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ ﷺ كَانَ اللهُ وَلَمْ يَكُنْ شَيْءٌ غَيْرُهُ وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ وَكَتَبَ فِي الذِّكْرِ كُلَّ شَيْءٍ وَخَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضَ

ইমরান বিন হুস্বাইন (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ছিলেন, আর তিনি ছাড়া কেউ ছিল না। তাঁর আরশ ছিল পানির উপর। তিনি ‘লাওহে-মাহফূয’-এ সব কিছু (ঘটিতব্য) লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর তিনি আকাশ-পৃথিবী সৃষ্টি করেন।
(বুখারী ৩১৯১, মিশকাত ৫৬৯৮)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহর ডান হাত পরিপূর্ণ, দিন-রাত খরচ করলেও তা কমে না। তোমরা কি দেখ না যে, আসমান ও যমীনের সৃষ্টি সময় থেকে আজ পর্যন্ত তিনি কত বিপুল পরিমাণে খরচ করেছেন? তবুও তার ডান হাতের কিছুই কমেনি। আর তার আরশ পানির উপর অবস্থিত ছিল। তাঁর অন্য হাতের রয়েছে ইনসাফের দাঁড়িপাল্লা, সে অনুসারে বৃদ্ধি-ঘাটতি বা উন্নতি অবনতি ঘটান। [বুখারীঃ ৭৪১৯]

অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সমস্ত সৃষ্টি জগতের তাকদীর লিখে রেখেছেন। আর তাঁর আরশ ছিল পানির উপর।” [মুসলিমঃ ২৬৫৩]

আরশ হলো মহান আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি। সেটা প্রকাণ্ড ও সর্ববৃহৎ সৃষ্টি।
এটি অনেক আগে থেকেই সৃষ্ট।
এটি কত বছর পানি উপর ছিলো,তাহা স্পষ্ট আকারে পাইনি।
এতটুকুই আকীদা রাখতে হবে যে এটি আসমান যমিনের আগে মহান আল্লাহর  প্রথম সৃষ্টি। 

★উল্লেখিত আয়াতে এরশাদ হয়েছে যে, আসমান ও যমীনকে আল্লাহ তা'আলা মাত্র ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। এখানে কি পরিমাণ সময় উদ্দেশ্য তা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন। যদিও কোন কোন মুফাসসির এ দিনগুলোকে আমাদের বর্তমান দিন এর মত মনে করেছেন। কোন কোন মুফাসসির মত প্রকাশ করেছেন যে, এ দিনগুলো অন্য আয়াতে বর্ণিত, একদিন সমান একহাজার বছরের মত। [ইবন কাসীর]

এখানে নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সৃষ্টি ছয় দিনে সমাপ্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর ব্যাখ্যা দিয়ে সূরা ফুসসিলাতের নবম ও দশম আয়াতে বলা হয়েছে যে, দুদিনে ভূমণ্ডল, দুদিনে ভূমণ্ডলের পাহাড়, সমুদ্র, খনি, বৃক্ষ, উদ্ভিদ এবং মানুষ ও জন্তুজানোয়ারের পানাহারের বস্তু-সামগ্ৰী সৃষ্টি করা হয়েছে। মোট চার দিন হল। বলা হয়েছেঃ  (خَلَقَ الْأَرْضَ فِي يَوْمَيْنِ) আবার বলা হয়েছে (وَقَدَّرَ فِيهَا أَقْوَاتَهَا فِي أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ) যে দুদিনে ভূমণ্ডল সৃষ্টি করা হয়েছে, তা ছিল রবিবার ও সোমবার। দ্বিতীয় দুদিন ছিল মঙ্গল ও বুধ, যাতে ভূমণ্ডলের সাজ-সরঞ্জাম পাহাড়, নদী ইত্যাদি সৃষ্টি করা হয়। এরপর বলা হয়েছেঃ (فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ) অর্থাৎ “অতঃপর সাত আকাশ সৃষ্টি করেন দুদিনে [সূরা ফুসসিলাতঃ ১২ বাহ্যতঃ এ দুদিন হবে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার; অর্থাৎ এ পর্যন্ত ছয় দিন হল। [আদওয়াউল বায়ান]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...