উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইসলামের মূল থিউরী হল স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ না হোক। তারা মিলেমিশে থাকুক। সমস্যা হলে উভয়ে বসে তা সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। তাতে সমস্যার সমাধান না হলে পারিবারিক মুরুব্বীদের পরামর্শের আলোকে সমাধান করা উচিত। তারপরও যদি সমাধান না আসে। তাহলে নিরূপায় অবস্থায় ইসলাম এক তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে স্বামীকে। তিন তালাকের নয়। আবারো বলি ইসলামে তিন তালাক দেয়া জায়েজ নয়। তবে তিন তালাক দিলে পতিত হয়ে যায়। যেমন কাউকে হত্যা করা জায়েজ নয়। কিন্তু হত্যা করলে হত্যা সংঘটিত হয়ে যায়।
তেমনি তিন তালাক এক সাথে দেয়া জায়েজ নয়। তবে দিলে পতিত হয়ে যায়।
,
★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
স্বামী স্ত্রীকে যেভাবে তালাক দেবার অধিকার দিয়েছে স্ত্রী ঠিক সেভাবে তালাক পতিত করার অধিকার পাবে। যদি শর্তহীন অধিকার দেয় সময় নির্দিষ্ট করে, তাহলে সেই সময়ের মধ্যে তালাক দেবার অধিকার পাবে, আর যদি আজীবনের জন্য অধিকার দেয়, তাহলে যেকোন সময় তালাক পতিত করার অধিকার পাবে। আর যদি কোন শর্তযুক্ত করে অধিকার দেয় তাহলে উক্ত শর্ত পাওয়া গেলে তালাক দেবার অধিকার পাবে।
বিঃদ্রঃ আজীবনের জন্য তালাকের অধিকার না দিলে অন্য সুরতগুলোতে স্বামী কর্তৃক তালাকের অধিকার পাওয়ার কথাটি যখনই শুনবে সেই মজলিসে স্ত্রী নিজের উপর তালাক দেবার অধিকার পাবে। সেই মজলিস শেষ হয়ে গেলে আর পূর্বের অধিকার বলে তালাক পতিত করতে পারবে না।
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি আপনি একদম নিরূপায় হয়ে গিয়ে থাকেন। কোন ভাবেই সম্পর্কটিকে আর টিকিয়ে রাখতে না পারেন,আর আপনার স্বামী যদি জেনে শুনে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে আপনাকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দিয়ে থাকে,এর এই নিকাহ নামা যদি আপনাদের বিবাহ পড়ানোর পরে লেখা হয়ে থাকে, তাহলে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারা অনুপাতে স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে আপনি লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর এক তালাক দিয়ে দিন। দুই বা তিন তালাক নয়। এক তালাক দেয়ার পর আপনার ইদ্দতকালীন সময় শেষ হলে আপনি অন্য কোথাও বিবাহ বসতে পারবেন।
এক্ষেত্রে কোনো কাজির মাধ্যমে তালাক প্রদান করা,বা লিখিত আকারে তালাকের কপি পাঠানো জরুরি নয়।
মৌখিক বলা মাত্র তালাক পতিত হয়ে যাবে।
তার কাছে তাকালের কপি পাঠানো,বা উকিলের মাধ্যমে এই কাজ সম্পন্ন করা এটা দেশিও নিয়ম মাত্র।
,
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী আপনি স্বামী কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষিমতা বলে মৌখিক নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করিলাম বললেই তালাক পতিত হয়ে যাবে।
এর পর থেকেই আপনি ইদ্দত (৩ হায়েজ) গননা করা শুরু করবেন।
ইদ্দত শেষ হলেই আপনি অন্যত্রে বিবাহ বসতে পারবেন।।
আল্লাহ তায়ালা বলেন
قال اللّٰہ تعالیٰ: {وَاللّٰاتِیْ تَخَافُوْنَ نُشُوْزَہُنَّ فَعِظُوْہُنَّ وَاہْجُرُوْہُنَّ فِیْ الْمَضَاجِعِ} [النساء، جزء آیت:۳۴]
হাদীস শরীফে এসেছে
عن ابن عمر رضي اللّٰہ عنہما أن رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم قال: أبغض الحلال إلی اللّٰہ عزوجل الطلاق۔ (سنن أبي داؤد ۱؍۳۰۳، المستدرک للحاکم ۲؍۲۱۸ رقم: ۲۸۰۹، السنن الکبریٰ ۷؍۳۱۶)
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন যে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম হালাল হলো তালাক প্রদান করা।
وفي رد المحتار- وأنواعه ثلاثة : تفويض ، وتوكيل ، ورسالة وألفاظ التفويض ثلاثة : تخيير وأمر بيد ، ومشيئة .
( قال لها اختاري أو أمرك بيدك ينوي ) تفويض ( الطلاق ) لأنها كناية فلا يعملان بلا نية ( أو طلقي نفسك فلها أن تطلق في مجلس علمها به ) مشافهة أو إخبارا ( وإن طال ) يوما أو أكثر ما لم يوقته ويمضي الوقت قبل علمها ( ما لم تقم ) لتبدل مجلسها حقيقة ( أو ) حكما بأن ( تعمل ما يقطعه ) مما يدل على الإعراض لأنه تمليك فيتوقف على قبول في المجلس لا توكيل ، فلم يصح رجوعه ، حتى لو خيرها ثم حلف أن لا يطلقها فطلقت لم يحنث في الأصح ( لا ) تطلق ( بعده ) أي المجلس ( إلا إذا زاد ) في قوله طلقي نفسك وأخواته ( متى شئت أو متى ما شئت أو إذا شئت أو إذا ما شئت ) فلا يتقيد بالمجلس ( ولم يصح رجوعه ) لما مر (رد المحتار-كتاب الطلاق، باب تفويض الطلاق-4/452
যার সারমর্ম হলো তালাকে তাফবিজের মাধ্যমে স্ত্রী নিজ নফসের তালাক প্রদান করতে পারবে।
প্রামান্য গ্রন্থাবলী
১. ফাতওয়ায়ে শামী-৪/৫৫১-৫৫৫
২. ফাতওয়ায়ে তাতারখানিয়া-১২/৪৭৬-৪৭৭
৩. বাদায়েউস সানায়ে-৩/১৮০-১৮১
৪. ফাতওয়ায়ে আল ওয়াল ওয়ালিজিয়্যাহ-২/৯১
۔