উত্তরঃ-
ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ।
জি,প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী আপনি আপনার বাবার পক্ষ্য থেকে নফল বদলী হজ্ব করতে পারবেন।কেননা একজন অন্যজনের পক্ষ্য থেকে বদলী হজ্ব করা শরীয়তে স্বীকৃতাধীন।
তবে ব্যখ্যা এই যে,ফরজ হজ্বে যার উপর হজ্ব ফরজ হয়েছে,সে অক্ষম হলে অন্যর মাধ্যমে হজ্ব করাতে পারবে নতুবা সে নিজে করতে হবে।আর নফল হজ্বে সুস্থাবস্থায় ও অন্যকে দিয়ে হজ্ব করানো যাবে।
বদলী হজ্ব সম্পর্কে তিরমিযি শরীফের এক হাদিসে বর্ণিত আছে.......
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺑﺮﻳﺪﺓ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻗﺎﻝ : ﺟﺎﺀﺕ ﺍﻣﺮﺃﺓ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻘﺎﻟﺖ : ﺇﻥ ﺃﻣﻲ ﻣﺎﺗﺖ ﻭﻟﻢ ﺗﺤﺞ ﺃﻓﺄﺣﺞ ﻋﻨﻬﺎ؟ ﻗﺎﻝ : ﻧﻌﻢ ﺣﺠﻲ ﻋﻨﻬﺎ
অর্থ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে বুরাইদা রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ একবার এক মহিলা নবী কারীম সাঃ এর কাছে এসে বলল,হে আল্লাহর রাসুল সাঃ আমার মা মারা গেছেন অথচ তিনি হজ্ব করেননি,আমি কি তার পক্ষ্য থেকে হজ্ব করতে পারব?নবী কারীম সাঃ উত্তরে বললেনঃহ্যা তুমি তার পক্ষ্য থেকে হজ্ব করতে পারবে।(খ৩:পৃ৩৫:হাদিস নং৯২৯)
অন্যত্র বর্ণিত আছে.....
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺭﺯﻳﻦ ﺍﻟﻌﻘﻴﻠﻲ : ﺃﻧﻪ ﺃﺗﻰ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻘﺎﻝ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺇﻥ ﺃﺑﻲ ﺷﻴﺦ ﻛﺒﻴﺮ ﻻ ﻳﺴﺘﻄﻴﻊ ﺍﻟﺤﺞ ﻭﻻ ﺍﻟﻌﻤﺮﺓ ﻭﻻ ﺍﻟﻈﻌﻦ، ﻗﺎﻝ : ﺣُﺞَّ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻚ ﻭﺍﻋﺘﻤﺮ.
ভাবানুবাদঃআবু রাযিন আল-উক্বাইলী রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি নবী কারীম সাঃ এর কাছে এসে বলেলনঃহে আল্লাহর রাসুল সাঃ আমার পিতা অত্যান্ত বিদ্ধ লোক, তিনি হজ্ব,উমরা ও সফরের সামর্থ্য রাখেন না,নবী কারীম সাঃ বললেনঃ তুমি তোমার পিতার পক্ষ্য থেকে হজ্ব ও উমরা করতে পারো।(খ৩:পৃ২৭০:হাদিস নং৯৩০)
প্রথম হাদিসে ফরজ হজ্ব ও দ্বিতীয় হাদিসে ফরজ হজ্ব ও নফল উমরাকে নবী কারীম সাঃ অন্যর পক্ষ্য থেকে আদায় করার অনুমোদন দিলেন,তাই যেখানে ফরজের অনুমোদন আছে,সেখানে নফলের অনুমোদন অবশ্যই থাকবে,কেননা নফলের মধ্যে এমন কিছুর অবকাশ রয়েছে যা ফরজ বিধানে নেই।
এমনকি নফল হজ্বে উক্ত ব্যক্তির অপারগ হওয়াও কোনো প্রয়োজন নেই,বরং বিনাওজরেও সে অন্যকে দিয়ে নফল হজ্ব করাতে পারবে।
রদ্দুল মুহতার গ্রন্থে এ সম্পর্কে বর্ণিত আছে,,
)وَشَرْطُ الْعَجْزِ) الْمَذْكُورِ (لِلْحَجِّ الْفَرْضِ لَا النَّفْلِ) لِاتِّسَاعِ بَابِهِ(
أَمَّا الْحَجُّ النَّفَلُ فَلَا يُشْتَرَطُ فِيهِ الْعَجْزُ لِأَنَّهُ لَمْ يَجِبْ عَلَيْهِ وَاحِدَةٌ مِنْ الْمَشَقَّتَيْنِ أَيْ مَشَقَّةِ الْبَدَنِ وَمَشَقَّةِ الْمَالِ، فَإِذَا كَانَ لَهُ تَرْكُهُمَا كَانَ لَهُ أَنْ يَتَحَمَّلَ إحْدَاهُمَا تَقَرُّبًا إلَى رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ، فَلَهُ الِاسْتِنَابَةُ فِيهِ صَحِيحًا. اهـ.
ভাবানুবাদঃ- আর নফল হজ্ব তাতে(উক্ত ব্যক্তির) অপারগতা শর্ত নয়,কেননা উক্ত ব্যক্তির উপর শারিরিক ও আর্থিক কোনো দ্বায়বার শরয়ীভাবে ওয়াজিব নয়।এখন যখন সে উভয়টাকে (ফরজ না হওয়ার দরুন)এমনিতেই বিসর্জন দিতে পারছে,তখন সে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের স্বার্থে যে কোন একটাকে অবশ্যই অনায়াসে পালন করতে পারছে।বিধায় কোনো মানুষ পুরোপুরি সুস্থাবস্থায়ও কাউকে নফল হজ্বের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ করতে পারবে।
(খঃ ২পৃঃ ৬০২) আল্লাহই ভাল জানেন।
হজ্বের আগে উমরাহ করে নিবেন।