ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
এক্ষেত্রে ইমামের সাথেই সালাম শেষ করবেন।
সেজদায়ে সাহু দিতে হবেনা।
,
বিস্তারিত জানুনঃ
(০২)
নামাযে যেকোনো ভুলের কারণে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়ে যায় না। বরং ভুলে নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে কিংবা কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিলম্বিত হলে ওয়াজিব হয়। আর যদি ভুলে কোনো ফরয ছুটে যায়, তবে সেজদা সাহু করা যথেষ্ট নয়, বরং পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। আর কোনো সুন্নত বা মুস্তাহাব ছুটে গেলে সেজদা সাহু করার বিধান নেই।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سلم.
আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন।
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭০)
(০৩)
৫ ওয়াক্ত নামাজের আগে পরে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ১২ রাকাত।
আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন, “যে কোন মুসলিম বান্দা প্রত্যহ্ আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে বারো রাকআত সুন্নাত নামায পড়লেই আল্লাহ তাআলা জান্নাতে তার জন্য এক গৃহ্ নির্মাণ করেন। অথবা তার জন্য জান্নাতে এক ঘর নির্মাণ করা হয়।” (মুসলিম, সহীহ ৭২৮নং, আবূদাঊদ, সুনান, নাসাঈ, সুনান, তিরমিযী, সুনান)
তিরমিযীর বর্ণনায় কিছু শব্দ অধিক রয়েছে, “(ঐ বারো রাকআত নামায;) যোহরের (ফরযের) পূর্বে চার রাকআত ও পরে দুই রাকআত, মাগরেবের পরে দুই রাকআত, এশার পরে দুই রাকআত, আর ফজরের (ফরয নামাযের) পূর্বে দুই রাকআত।”
হযরত আয়েশা رضي الله عنها হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, “যে ব্যক্তি নিয়মনিষ্ঠভাবে দিবারাত্রে বারো রাকআত নামায পড়বে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে; যোহরের (ফরয নামাযের) পূর্বে চার রাকআত ও পরে দুই রাকআত, মাগরেবের পর দুই রাকআত, এশার পর দুই রাকআত এবং ফজরের (ফরযের) পূর্বে দুই রাকআত।” (নাসাঈ, সুনান, এবং শব্দগুলি তাঁরই, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, সহিহ তারগিব ৫৭৭নং)
★সুন্নাতে গায়রে মুয়াক্কাদাঃ
আসরের আগে চার রাকাত।
হযরত ইবনে উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, “আল্লাহ সেই ব্যক্তির প্রতি কৃপা করেন যে আসরের পূর্বে ৪ রাকআত নামায পড়ে।” (আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ, ইবনে হিব্বান, সহীহ, সহিহ তারগিব ৫৮৪নং)
হযরত আলী (রাঃ) বলেন, ‘নবী (ﷺ) আসরের পূর্বে ৪ রাকআত নামায পড়তেন এবং প্রত্যেক দুই রাকআতে আল্লাহর নিকটবর্তী ফিরিশ্তা, আম্বিয়া ও তাঁদের অনুসারী মুমিন-মুসলিমদের প্রতি সালাম (তাশাহহুদ) দিয়ে তা পৃথক করতেন। আর সর্বশেষে সালাম ফিরতেন।’ (আহমাদ, মুসনাদ, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৩৭নং)
★ইশার আগে দুই রাকাত।
“এমন কোন ফরয নামায নেই, যার পূর্বে ২ রাকআত নামায নেই।” (ইবনে হিব্বান, সহীহ, ত্বাবারানীরানী, মু’জাম, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৩২, জামে ৫৭৩০নং) অর্থাৎ, প্রত্যেক ফরয নামাযের পূর্বে ২ রাকআত নামায আছে। সুতরাং এশার ফরযের পূর্বেও আছে। তবে তা সুন্নাতে গায়র মুআক্কাদাহ।
(০৪)
উক্ত আযান যদি সুবহে সাদিক হওয়া মাত্র তথা সাহরির সময় শেষ হওয়া মাত্র দেয়া হতো,তাহলে উক্ত রোযা হবে।
কিন্তু যদি উক্ত আযান আরো পরে দেয়া হয়,তাহলে সেই রোযা গুলি হবেনা।
(০৫)
অন্যতম একটি কারন হলো, সেই সময়ে সমাজে নারীরা চরম অবহেলিত,লাঞ্চিত,অপদস্থ,শোষিত,বঞ্চিত ছিলো।
তাই মানুষের মাঝে নারীদের সেই দৃষ্টিভঙ্গি চেঞ্জ করার জন্য তিনি এমন কথা বলেছেন।
(০৬)
এতে ১০ বার কুরআন খতমের ছওয়াব পাওয়া যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَنَسٍ ، قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ ﷺ : إِنَّ لِكُلِّ شَيْءٍ قَلْبًا، وَقَلْبُ القُرْآنِ يس ، وَمَنْ قَرَأَ يس كَتَبَ اللَّهُ لَهُ بِقِرَاءَتِهَا قِرَاءَةَ القُرْآنِ عَشْرَ مَرَّاتٍ
অর্থাৎ, আনাস রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, প্রত্যেক বস্তুর হৃদয় থাকে, কোরআনের হৃদয় হল সূরা ইয়াসিন। যে ব্যক্তি একবার সূরা ইয়াসিন পড়বে, মহান আল্লাহ তাকে দশবার সমগ্র কুরআন পড়ার সওয়াব দান করবেন।
জামি’ তিরমিযী (হাদীস নং ৬৩৪৬)
(০৭)
মনে মনে পাঠ করলে এই ছওয়াব হবেনা।
তবে জিহবা নাড়িয়ে উচ্চারণ করে পাঠ করলে এই মর্যাদা পাওয়া যাবে।
(০৮)
এটি ছাড়া অন্য যেকোনো দোয়া পড়লেও বিতির নামাজ হয়।
তবে এটি পাঠ করা সুন্নাত।
দোয়ায়ে কুনুতঃ
اَللَّهُمَّ اِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ
হে আল্লাহ আমরা তোমারই সাহায্য চাই, তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল, মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি অকৃতজ্ঞ হই না, এবং যারা তোমার অবাধ্য হয় তাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে তাদেরকে পরিত্যাগ করি। হে আল্লাহ আমরা তোমারই দাসত্ব করি তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি, আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত, আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত।
★অনেকে নিম্নোক্ত দোয়াটিও পড়ে থাকেন।
এটিও হাদীস শরীফে এসেছেঃ
اللھم اهدني فيمن هديت وعافني فيمن عافيت وتولني فيمن توليت وبارك لي فيما أعطيت وقني شر ما قضيت إنك تقضي ولا يقضى عليك وإنه لا يذل من واليت ولا يعز من عاديت تباركت ربنا وتعاليت
হে আল্লাহ! আপনি যাদেরকে হেদায়াত করেছেন তাদের মধ্যে আমাকেও হেদায়াত দিন, আপনি যাদেরকে নিরাপত্তা প্রদান করেছেন তাদের মধ্যে আমাকেও নিরাপত্তা দিন, আপনি যাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছেন, তাদের মধ্যে আমার অভিভাবকত্বও গ্রহণ করুন, আপনি আমাকে যা দিয়েছেন তাতে বরকত দিন। আপনি যা ফয়সালা করেছেন তার অকল্যাণ থেকে আমাকে রক্ষা করুন। কারণ আপনিই চূড়ান্ত ফয়সালা দেন, আপনার বিপরীতে ফয়সালা দেওয়া হয় না। আপনি যার সাথে বন্ধুত্ব করেছেন সে অবশ্যই অপমানিত হয় না এবং আপনি যার সাথে শত্রুতা করেছেন সে সম্মানিত হয় না। আপনি বরকতপূর্ণ হে আমাদের পালনকর্তা ! আর আপনি সুউচ্চ-সুমহান।