আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,279 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)

আসসালামু আলাইকুম। 

প্রথমেই অনুরোধ পুরোটা ভালোভাবে পড়ার, আশা করি আমার অনুরোধ রাখবেন, অবহেলা করবেন না।

আমি দশম শ্রেনির একজন ছাত্র। এখন আমার এই বর্তমান শিক্ষা ব্যাবস্থার জন্য জেনারেল লাইনে পড়তে মোটেও ইচ্ছা হয় না, কিন্তু পরিবার চাপ দেয়। 

এখন আমি ওয়েবসাইট এর ফাতওয়ায় দেখছি যে পর্দা মেইন্টেইন করে  পড়া জায়েজ,। এবং কিছু ওলামা কেরাম দের বক্তব্যে দেখছি যে জেনারেল লাইনেও দ্বীনি ভাইদের দরকার। 

এখন,  আমার প্রশ্ন...ওলামা কেরামগন হয়ত এই জেনারেল লাইনের শিক্ষা সম্পর্কে পুরো অবগত না।  এখানে ইসলাম পুরো মানতে গেলে যেমন লেখাপড়া ঠিক ঠাক হয় না তেমন মানসিক অনেক বিপর্যয় আসে। এসএসসি লেভেল পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে দেশব্যাপী ফ্রিমিক্সিং এর সমস্যা কম। কিন্তু hsc তে পরিক্ষার হলে ছেলে মেয়ে একই বেঞ্চে ছিট ফেলে। এছাড়াও আরও অনেক কিছু আছে। তারপর অনেক ভার্সিটি তে প্রেজেন্টেশন করতে হয় ছেলে মেয়ে একসাথে,, এসব ক্ষেত্রে নিজের লেখাপড়া ঠিক রেখে দ্বীন কিভাবে মানব আর দ্বীন ঠিক রেখে লেখাপড়াই বা কিভাবে করব?

কিছু আলেম(ই-ফাতোয়া সহ দেশের অন্যান্য) ফতোয়া দিয়াছেন যে আমাদের জেনারেল শিক্ষা জরূরি,, আমি ও বলি জরুরি কিন্তু উক্ত পরিস্থিতিতে তো জায়েজ হওয়ার শর্ত খেলাফ হচ্ছে যা দেশের অধিকাংশ জেনারেল যায়গায়-ই এমন।। এখন এই পরিস্থিতিতে কি করব? এইসব কারনে এখন পড়ালেখা করতে ইচ্ছা হয়না আবার ফ্যমিলির চাপ,,,??....[১]

[২] আবার ক্লাস এ যখন ছেলে মেয়ে একসাথে, তখন বোর্ড এ তাকালে পরোক্ষভাবে মেয়েদের দিকে দৃষ্টি যায়,,,i-fatwa এর WhatsApp গ্রুপ এ দেখলাম যে এতেও গোনাহ,, এখন বলতে গেলে কোন সাইড দিয়ে জায়েজ হওয়ার শর্ত মানে না। আবার যদি একলিঙ্গ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানে পড়তে চায় তাহলে অন্যান্য ওলামা কেরাম (যারা বলেন উচ্চপদস্থ জায়গায় দ্বীনি ভাই/বোন দরকার-এই শর্তে সহশিক্ষা জায়েজ বা জেনারেল লাইন জায়েজ বলেন,), তাদের শর্ত পূরন হয় না কারন কলেজ পর্যন্ত হয়ত একলিঙ্গ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও দেশের সব জায়গায় নেই,, আর যা আছে তা ব্যয়বহুল, ফলে দরিদ্র দ্বীনি ভাইয়েরা তাতে পড়তে পারেননা,। এরপর একলিঙ্গ ভিত্তিক ভালো কোন বিশ্ববিদ্যালয় নেই, থাকলেও তা কলেজের তুলনায় প্রচুর ব্যয়বহুল।

এসব অবস্থার প্রেক্ষিতে জেনারেল লাইনে কিভাবে ওলামা কেরামদের শর্ত মেনে পড়ব? আর দ্বীন মানতে হলে কোন না কোন স্টেযে গিয়ে লেখাপড়াই ছাড়তে হবে... আর পরিবার চাপ দিলে এক্ষেত্রে কি করনীয়??  বিস্তারিত আলোচনার অনুরোধ রইলো।

ধন্যবাদ 

আসসালামু আলাইকুম। 

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/27006/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ 
দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক। 

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী…। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,, 
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১

সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ 


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,  
পুরো প্রশ্ন পড়েছি,আলহামদুলিল্লাহ।  

আপনি উপরোক্ত শর্তগুলি পুরোপুরি ভাবে মেনে ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে পড়াশোনা  করতে পারেন।
শর্তাবলি মেনে চলতে যাহা যাহা করা দরকার,তাহা তাহাই করতে হবে।
দাঁতে দাঁত চেপে অন্তরকে কন্ট্রোল করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।   

যদি শর্তাবলী মেনে চলতে অনেক কষ্টকর হয়,তাহলে প্রয়োজনে ক্লাশে কম উপস্থিত হবেন। 

তদুপরি দৃষ্টিগত গুনাহ হলে ইস্তেগফার পাঠ করবেন।  

আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো গায়রে মাহরাম মহিলার দিলে নজর দিবেননা,অনিচ্ছায় নজর চলে গেলে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিবেন।
তাদের সাথে কোনো কথা বলবেননা।
বৈধ ও প্রয়োজনীয় কথা হলে দৃষ্টি অবনত রেখে অল্প সময়েও কথা বলে শেষ করবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...