উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
‘মাকরুহ’ শব্দটি ‘মাহবুব’-এর বিপরীত। মাহবুব মানে প্রিয়, মাকরুহ মানে অপ্রিয়।
শরিয়তের পরিভাষায় ‘মাকরুহ’ দুই প্রকার। ১- মাকরুহ তাহরীমি ২-মাকরুহ তানযীহি।
মাকরুহ তাহরীমি এটি (إلى الحرام أقرب) হারামের কাছাকাছি। এজন্য পরিভাষায় মাকরুহ তাহরীমি বলা হয়, যা ত্যাগ করার জন্য শরিয়ত শক্তভাবে বলেছে তবে তা (دليل ظني) তথা ধারণানির্ভর দলিল প্রমাণিত; (دليل قطعي) তথা অকাট্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত নয়। এটি সাধারণত ওয়াজিবের বিপরীতে ব্যবহার হয়। সুতরাং এধরণের মাকরুহ ত্যাগ না করলে গুনাহ আছে।
এই ভাবেও বলা যায়ঃ
যে নিষিদ্ধ বিধান সুনিশ্চিত দলীলের আলোকে প্রমাণিত নয়; বরং প্রবল ধারণাপ্রসূত দলীলের ভিত্তিতে প্রমাণিত তাকে মাকরূহে তাহরিমী বলা হয়। কার্যত মকরুহে তাহরিমী হারাম বিধানের মতই অবশ্য পরিত্যাজ্য। তবে এর অস্বীকারকারী কাফের সাব্যস্ত হবে না। যদি কেউ বিনা কারণে মকরুহে তাহরিমী কাজে রত হয় তবে সে ফাসেক হিসেবে সাব্যস্ত হবে এবং পরকালে শাস্তির উপযুক্ত হবে।
★পক্ষান্তরে মাকরুহ তানযীহি এটি (إلى الحل أقرب) হালাল বা জায়েযের কাছাকাছি। এজন্য পরিভাষায় মাকরুহ তানযীহি বলা হয়, যা ছেড়ে দেয়ার জন্য শরিয়ত বলেছে, তবে শক্তভাবে বলে নি বিধায় ছেড়ে দিলে সাওয়াব আছে তবে করলে গুনাহ নেই। এটি সাধারণত সুন্নত কিংবা মুস্তাহাবের বিপরীতে ব্যবহার হয়। (আততাওযীহ ওয়াততালবীহ ২/১২৬)
এই ভাবেও বলা যায়ঃ
আল্লাহ তায়ালা যে কাজ থেকে অনাবশ্যকভাবে নিবৃত্ত হওয়ার কামনা করেন তাকে মাকরূহে তানযিহী বলা হয়। মাকরূহে তানযিহী থেকে নিবৃত্ত হলে পূণ্য হবে। নিবৃত্ত না হলে গুনাহ হবে না।
(মু’জামুল মুস্তালাহাতিল ফিকহিয়্যা ৩/২০২,৩৪৩, কামুসুলফিকহ ৩/২৪৭,২৮৯, ৪/৪৫২, ৫/৮৯, ২৫৬, আলমাউসুআতুল ফিকহিয়্যাহ ১০/২০৫,২০৬, ৩২/৯৫, ২৫/২৭৫)
المكروه ما هو راجح الترك فإن كان إلى الحرام أقرب تكون كراهة تحريمية
মাকরুহ বলা হয় যেটাকে ছেড়ে দেওয়াই উত্তম।
যদি এটা হারামের নিকটতম হয়,তাহলে এটা মাকরুহে তাহরিমি।
অন্যথায় সেটা মাকরুহে তানযিহি।
সূত্র: কাওয়াইদুল ফিকহ; আমীমুল ইহসান রহ.কৃত: পৃষ্ঠা- ৫০৩।
,
সুতরাং বুঝা গেলো যে মাকরুহে তাহরিমি কাজ কেউ করলে গুনাহগার হবে,আর মাকরুহে তানযিহি ছেড়ে দিলে ছওয়াব আছে।
এই জাতীয় কোনো কাজ করলে আযাব হবেনা, তবে এটা নিন্দনীয়।