আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
216 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,

আমার স্ত্রী একজন দিপ্রান্তিক ব্যাধি (biploar disorder) এবং মৃগী (epilepsy) রোগী। প্রায় ১০+ বছর ধরেই সে চিকিৎসা নিয়ে আসছে। আমাদের কাবিন নামার ১৮ নং পয়েন্টে তাকে তালাকের অধিকার দেওয়া হয়েছে।

কিছুদিন আগে প্রচন্ড ঝগড়ার এক সময় সে হঠাৎ করে বলে বসে "আমি তোমার থেকে তালাক নিলাম"। এমতাবস্থায় আমি স্তব্ধ হয়ে যাই এবং পরবর্তীতে তার কাছে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে সে বলে তার কিছুই মনে নেই। এমনকি আমি তাকে বাক্যটি মনে করিয়ে দিলেও সে দাবি করে সে কি বলেছে কিছুই মনে নেই তার। কারণ হিসেবে সে বলে রাতে তাকে ডাক্তারের পরামর্শ মত একাধিক ঘুমের এবং অন্যান্য মানসিক রোগের ওষুধ খেতে হয় এরপর সে উত্তেজিত হলে কি বলে কিংবা মাঝে মধ্যে এমন কাজ করে যা পরে তাকে জিজ্ঞেস করলে সে বলতে পারেনা। তার অতীতের ইতিহাস এবং রোগের কথা বিবেচনা করে আমিও কথাটি বিশ্বাস করি।

উল্লেখ্য, bipolar disorder এর রোগী হওয়ায় সে উত্তেজিত হলে এমনকি মাঝেমধ্যে কোন কারণ ছাড়াও হিতাহিত জ্ঞান হারায় এমনকি আমার গায়ে কিংবা নিজের পিতার গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধা করেনা।
এমতাবস্থায় কি তালাক পতিত হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الأَعْلَى الصَّنْعَانِيُّ، أَنْبَأَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ الْفَزَارِيُّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ عَجْلاَنَ، عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ خَالِدٍ الْمَخْزُومِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " كُلُّ طَلاَقٍ جَائِزٌ إِلاَّ طَلاَقَ الْمَعْتُوهِ الْمَغْلُوبِ عَلَى عَقْلِهِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ لاَ نَعْرِفُهُ مَرْفُوعًا إِلاَّ مِنْ حَدِيثِ عَطَاءِ بْنِ عَجْلاَنَ . وَعَطَاءُ بْنُ عَجْلاَنَ ضَعِيفٌ ذَاهِبُ الْحَدِيثِ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَغَيْرِهِمْ أَنَّ طَلاَقَ الْمَعْتُوهِ الْمَغْلُوبِ عَلَى عَقْلِهِ لاَ يَجُوزُ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ مَعْتُوهًا يُفِيقُ الأَحْيَانَ فَيُطَلِّقُ فِي حَالِ إِفَاقَتِهِ .

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তালাক মাত্রই বলবৎ হয়, কিন্তু বুদ্ধি ও স্মৃতি নষ্ট হওয়া ব্যক্তির তালাক বলবৎ হয় না।
ইরওয়া (২০৪২)

আবূ ঈসা রহঃ বলেনঃ আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আতা ইবনু আজলানের সূত্রেই মারফু হিসাবে জেনেছি। কিন্তু তিনি হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল এবং হাদীস বর্ণনায় ভুলের শিকার হতেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিশেষজ্ঞ সাহাবী ও অপরাপর আলিমগণ এ হাদীস অনুযায়ী মত দিয়েছেন। তাদের মতে নির্বোধ ব্যক্তির তালাক কার্যকর হয় না। কিন্তু যে উন্মাদ কখনও জ্ঞান ফিরে পায় আবার কখনও জ্ঞানহারা হয়ে পড়ে সে যদি হুশ থাকাকালে তালাক দেয় তবে তা বলবৎ হবে।
(তিরমিজি ১১৯১)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
প্রশ্নের বিবরণ মতে  আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।    
আপনি তাকে তার ইদ্দত চালাকালিন সময়ের মধ্যে ফিরিয়ে নিতে চাইলে তাকে "ফিরিয়ে নিলাম" বললেই হবে।

অথবা তার সাথে স্বামী সূলভ দৈহিক আচরণ করলেও ফিরিয়ে নেয়া হয়ে যাবে।

ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার পর ফিরিয়ে নিতে চাইলে নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।

সব ছুরতেই তাকে ফিরিয়ে নেয়া হলে আপনি আর ২ তালাকের মালিক থাকবেন।
আর আপনার স্ত্রী যেহেতু কাবিননামার ১৮ নং ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তালাক গ্রহন করেছে,সুতরাং এই ক্ষমতা আর বহাল থাকবেনা।
এই ক্ষমতা শেষ। 
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনাদের বিবাহের কাবিননামা কি বিবাহের ইজাব কবুল বলার পরে লেখা হয়েছিলো?
নাকি বিবাহের ইজাব কবুলের আগে লেখা হয়েছিলো?

যদি বিবাহের ইজাব কবুলের আগেই কাবিননামা লেখা হয়,তাহলে স্ত্রী শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে ১৮ নং ধারা অনুপাতে নিজেকে নিজে তালাক প্রদানের ক্ষমতা পাবেনা। 

এরকমটি হলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো তালাক হবেনা।
স্ত্রীর যেকোনো কথায় কোনো সমস্যাও হবেনা।       


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
জ্বি, আমার যতদূর মনে পড়ে আমাদের বিবাহের কাবিননামা বিবাহের ইজাব কবুল বলার আগেই লেখা হয়েছিল। আসলে তখন গাফেল ছিলাম বিধায় এসব খেয়াল করিনি। আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম সে বলল সে পড়েও দেখেনি কি লেখা ছিলো। তবে কবুল বলার সময় শুধু আমার স্ত্রী, তার পিতার নাম এবং দেনমোহরের পরিমাণ মুখে উল্লেখ করা হয়েছিল বলে আমার বিশ্বাস। আল্লাহই সবচাইতে ভালো জানেন।
by
উল্লেখ্য, আমার স্ত্রীর এ কথার প্রেক্ষিতে আমি বলি যে আমাদের তো এখন শেষ হয়ে গেছে এবং আলাদা থাকতে হবে। একসাথে কিভাবে থাকি? কোন আলেমের থেকে শুনতে হবে আগে। ততদিন তুমি আলাদা থাকতে পারো। অবশ্য পরের দিনই আমি তাকে ফিরিয়ে নেই এবং উল্লেখ্য, যে আমি ' তালাক ' শব্দের অর্থ জানি এবং এই শব্দটা কোথাও যাতে ব্যবহার না হয় সেই চেষ্টাই করেছি। আমার স্ত্রীকে ও জিজ্ঞেস করলাম সেও বলছে আমি ' তালাক ' শব্দটি উচ্চারণ করেছি বলে তার মনে পড়েনা। অবশ্য আমার তো কোন নিয়তই ছিল না। তার কথার প্রেক্ষিতে আমি পরিস্থিতি বুঝাতে উপরের কথাগুলো বলেছিলাম। দয়া করে আপনার মতামত জানাবেন।
by
স্ত্রীর তালাক প্রদানের অধিকার যে একবার আমার সে সম্পর্কে ধারণা ছিলনা। ওই পরিস্থিতিতে সে যেন আর একবারও তালাক এর কথা না বলে এজন্য আমি উপরের কথাগুলো বলেছিলাম তাকে বুঝাতে যে তার এই কথার দ্বারা সম্পর্ক ছেদ হয়ে গেছে কিংবা যেতে পারে যা আমি কোন আলেম থেকে শুনে দেখব।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...