উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সাধারণত আমরা কল্যাণধর্মী যেকোনো বিষয়ের নিয়ত করে জমজমের পানি পান করে থাকি।
হাদীসে রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-
جابر بن عبد الله يقول سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول ماء زمزم لما شرب له (سنن ابن ماجه، كتاب المناسك، باب الشرب من زمزم ، رقم الحديث-3062
হযরত জাবের রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-জমজমের পানি সে জন্যই হবে যার জন্য তা পান করা হয়ে থাকে। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩০৬২, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৩৮, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৯৪৪২, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪১২৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৪৮৪৯}
সুতরাং কল্যাণধর্মী বিষয়ের নিয়ত করে জমজমের পানি পান করা উচিত।
★জমজমের পানি পান করার পদ্ধতি
ফুক্বাহায়ে কিরাম জমজমের পানি কিবলা দিকে ফিরে দাঁড়িয়ে পান করা মুস্তাহাব বলেছেন। তবে একদল ফুক্বাহায়ে কিরাম দাঁড়িয়ে পান করাকে মুস্তাহাব বলেন না, বরং জায়েজ বলে থাকেন। {ফাতওয়ায়ে শামী-১/২৫৪-২৫৫)
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি জমজমের পানি পান করার সময় নিম্নোক্ত দুআটি পড়তেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا وَاسِعًاوَشِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍঅর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি উপকারী ইলম, আর প্রশস্ত রিজিক এবং সর্ব প্রকার রোগ থেকে মুক্তি। {দুরারুল হুক্কাম ফি শরহী গুরারিল আহকাম-১/২৩২}
দুআটির বাংলা উচ্চারণ-আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা ইলমান নাফিআ, ওয়া রিজকান ওয়াসিআ, ওয়া শিফাআন মিন কুল্লি দা’ইন।
বিঃদ্রঃ আরবী আরবীতেই পড়তে চেষ্টা করা উচিত। উচ্চারণটি দেয়া হল যারা একদম আরবী পড়তে জানে না তাদের জন্য।
,
★জমজমের পানি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পান করেছেন। তা’ই আমরাও জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে উত্তম মনে করি।বাকি এভাবে জমজমের পানি পান করা জরুরী নয়।
আর স্বাভাবিক অবস্থায় অন্যান্য পানি দাঁড়িয়ে পান করাকে মাকরূহে তানজিহী মনে করি। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে পানি পান করাতে নিষেধ করেছেন।
বাকি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এবং তার কতিপয় সাহাবী কর্তৃক দাঁড়িয়ে পানি করা সম্পর্কিত হাদীস পাওয়া যায়। যা প্রমাণ করে দাঁড়িয়ে পানি পান করা হারাম বা মাকরূহে তাহরীমি নয়। বরং সর্বোচ্চ তানজিহী তথা অনুত্তম বলা যায়।[বিস্তারিত দেখুন-রদ্দুল মুহতার-১/২৫৪-২৫৬]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، «أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَرِبَ مِنْ زَمْزَمَ وَهُوَ قَائِمٌ
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জমজমের পানি দাঁড়িয়ে পান করেছেন। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০২৬]
أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَشْرَبَنَّ أَحَدٌ مِنْكُمْ قَائِمًا، فَمَنْ نَسِيَ فَلْيَسْتَقِئْ»
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ যেন দাড়িয়ে পান না করে, তবে যদি ভুলে যায়, তাহলে পান করতে পারে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২০২৬]
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَشْرَبُ قَائِمًا وَقَاعِدًا
আমর বিন শুয়াইব তিনি তার পিতা, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দাড়িয়ে ও বসে পান করতে দেখেছি। [সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৮৮৩]
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ جَدَّةٍ لَهُ يُقَالُ لَهَا كَبْشَةُ الْأَنْصَارِيَّةُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «دَخَلَ عَلَيْهَا، وَعِنْدَهَا قِرْبَةٌ مُعَلَّقَةٌ، فَشَرِبَ مِنْهَا، وَهُوَ قَائِمٌ،
কাবশাতুল আনছারিয়্যা রাঃ থেকে বর্ণিত।একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নিকট প্রবেশ করলেন। তার নিকট একটি ঝুলন্ত পানির পাত্র ছিল। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা থেকে দাঁড়িয়েই পান করলেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৪২৩]